বাঙালির প্রাণের উৎসব বৈশাখ
খালেদ মাহামুদ (দিপু): বাংলা এবং বাঙালির ঐতিহ্যের প্রতীক, প্রাণের উৎসব ‘বৈশাখ’। বৈশাখ মানেই বাঙালির সর্বজনীন উৎসব। বৈশাখের ছন্দ-উচ্ছ্বাস রবিঠাকুরের ‘এসো হে বৈশাখ’ গানটিও যেন মিশে গেছে বাঙালি আর বৈশাখী উৎসবে। পহেলা বৈশাখ বাঙালির চিরায়ত সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। যে উৎসবকে অস্বীকার করা যায় না। কারণ, সব জাতি-গোষ্ঠী ও মতাদর্শের লোকের কাছেই সমান গুরুত্বের দিন এ পহেলা বৈশাখ।
বৈশাখকে ঘিরে বাঙালির চেতনাজুড়ে রয়েছে অন্য রকম আবেগ। উৎসাহ ও দেশীয় সংস্কৃতিকে ধারণ করার আবেগ-অনুভূতি এ বৈশাখী আনন্দকে অর্থবহ করেছে। বৈশাখ মানে উত্তাপ আর উৎসবের আমেজ। চারদিকে সাজসাজ রব। দেশের সব প্রান্তের মানুষের মনকে আলোড়িত করে, করে উচ্ছ্বসিত। বাংলাদেশের মানুষের বিশ্বাস বৈশাখের আগমন ঘটে শুচি-শুভ্র-নির্মল-পবিত্রতায়। সারা বছরের যত জঞ্জাল ধুয়ে-মুছে নতুন করে দিন শুরু করা। যেখানে নতুন ভাবনায় সময়, সমাজ ও জীবনকে রাঙিয়ে তোলা যায়।
‘এসো, এসো, এসো হে বৈশাখ/তাপস নিঃশ্বাসে মুমূর্ষুরে দাও উড়ায়ে,/বৎসরের আবর্জনা দূর হয়ে যাক/যাক পুরাতন স্মৃতি, যাক ভুলে যাওয়া গীতি,/অশ্রুবাষ্প সুদূরে মিলাক।/মুছে যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জরা,/অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা/রসের আবেশরাশি শুষ্ক করি দাও আসি,’ প্রাণের এই উৎসবকে নিয়ে কবিগুরুর অসাধারণ একটি গান। যে গানটি না হলে বৈশাখ পালনে যেন অপূর্ণতাই থেকে যেত। দেশজুড়ে বৈশাখজুড়েই মেলা আর আনন্দ মানেই ‘এসো হে বৈশাখ’ গানটি। সুরের মূর্ছনায় আলোড়িত করে যায় বাঙালি হৃদয়।
বছর ঘুরে প্রতিটি বাঙালির আঙিনায় বৈশাখের আগমন ঘটে আলাদা আবেগ আর চেতনা নিয়ে। যেখানে বাংলা নববর্ষ বা পহেলা বৈশাখ বিভেদহীন সমাজ গঠনের ডাক দিয়ে যায়। বৈশাখের এ সর্বজনীন উৎসব দেশের প্রতিটি মানুষকে নানাভাবে ঐতিহ্যের ভাবনায় সমৃদ্ধ করে। উৎসব আর আনন্দ-উল্লাসে মাতোয়ারা বাঙালি জাতি প্রতিটি উৎসবকেই উদযাপন করে আন্তরিকতার সবটুকু বিলিয়ে দিয়ে। বৈশাখের বেলায় এর ব্যতিক্রম তো নয়ই, বরং আরো একদাপ এগিয়ে নিয়ে যায় ঐতিহ্যকে ধারণ করে। বাংলা নতুন বছর মানেই বাঙালির প্রাণের স্পন্দন, নতুনের আহ্বানে জেগে ওঠা। সত্য ও সুন্দরের জয়গান।
তবে বৈশাখজুড়ে শুধুই কি আনন্দ-উৎসব? মোটেই না, সারাদেশে অনুষ্ঠিত বৈশাখী মেলা বাংলার সংস্কৃতি ও লোকশিল্পকে ছড়িয়ে দিতে অবদান রেখে চলেছে যুগ যুগ ধরে। ওইদিন বাঙালি নারী আর শিশুদের নানা রঙের পোশাকের সাজ ও ছেলে-বুড়োদের পোশাকে চেতনাকে জাগিয়ে দেয় অন্য রকম স্বাদে। পহেলা বৈশাখ উদযাপনের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ রাজধানীর শাহবাগে মঙ্গল শোভাযাত্রা। বর্তমানে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের অংশ গ্রহণে বাঙালি সংস্কৃতির ঐতিহ্য হিসেবে উদযাপিত হচ্ছে এই শোভাযাত্রা। অশুভ শক্তির বিনাশ, শুভশক্তির উদয়ের এ আয়োজন অসাম্প্রদায়িক চেতনাকেই যেন লালন করে যাচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আর দেশপ্রেমের এ শোভাযাত্রায় শুদ্ধতা চর্চাকে উৎসাহিত করে আগামীর অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে এগিয়ে চলতে পথ দেখায়। যদিও নিরাপত্তার কারণে এবারও এ শোভাযাত্রায় রয়েছে সরকারি নির্দেশনা, রয়েছে বিধিনিষেধ। এতে উৎসবের সীমাবদ্ধতা এলেও নিরাপত্তার স্বার্থে আমাদের সচেতন ও সোচ্চার হওয়া জরুরি।
দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার ছাত্র-শিক্ষকদের উদ্যোগে ১৯৮৯ সালে মঙ্গল শোভাযাত্রার শুভসূচনা হয়। বিশাল আয়োজনের এ মঙ্গল শোভাযাত্রায় হাতি, বাঘ, ঘোড়া, পাপেট, ময়ূর, লক্ষ্মীপেঁচা, কুমিরসহ নানা ধরনের মুখোশ শোভা পায়। এসবের মধ্য দিয়ে হাজার বছরের বাঙালির চলমান রাজনীতি থেকে শুরু করে নানা রকম সংগতি-অসংগতি ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ, সামাজিক, অর্থনৈতিক বাস্তবতা রূপকের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয়। শিল্পী, কবি-সাহিত্যিকদের স্ব-প্রতিভ পদচারণে এদিনটি থাকে উৎসবমুখর। বৈশাখের আগমনে প্রাণের জোয়ার জাগে বাঙালির প্রাণে প্রাণে। জাতি-ধর্ম-বর্র্ণ নির্বিশেষে পহেলা বৈশাখ বাঙালির মন ও মননে অন্যরকম আনন্দ-উৎসবের ভাবনাকে নাড়া দিয়ে যায়। এ ছাড়া পহেলা বৈশাখের আরেক আকর্ষণ রমনার বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ। অনেক বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে এ অনুষ্ঠানটি এখনো স্বচেতনায় অটুট রয়েছে, যা আমাদের জন্য এক বিশাল প্রেরণা।
মুসলমান সমাজে বৈশাখ বরণে তেমন নিয়ম-কানুন না থাকলেও হিন্দু ও অন্য ধর্মাবলম্বীদের রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন রেওয়াজ। তবে পহেলা বৈশাখ বাংলাদেশের প্রতিটি ঘরে অন্য রকম আনন্দে উদযাপিত হয়ে থাকে। বৈশাখী মেলায় বিনোদনের মাধ্যম হিসেবে রাখা হয় নাগরদোলা, পুতুলনাচ, সার্কাসসহ মেলার ক্লান্তি দূর করতে যোগ হয় নানা ধরনের সংগীত। গ্রাম ও শহরে উৎসবের ভিন্নতা থাকলেও আনন্দের মাত্রাটা সবখানে সমান। গ্রামাঞ্চলে বৈশাখকে বিভিন্ন রীতিনীতিতেও পালন করতে দেখা যায়। বৈশাখের আগের দিন গ্রামের বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় গরু-খাসি জবাই করে মাংস বিলাতেও দেখা যায়। বৈশাখ মানে শুধু মেলা আর খেলাই নয়, বাঙালি খাবার-দাবারেও থাকে উৎসবের আমেজ।
পার্বত্য এলাকার আদিবাসী জনগোষ্ঠীর মধ্যেও নানা আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পহেলা বৈশাখ উদযাপন করা হয়ে থাকে। বর্ষবরণে চাকমা ও মারমারা উৎসব পালন করে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যে। বৈশাখী পূর্ণিমা উদযাপনেও নৃ-গোষ্ঠীর ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা বহুকাল থেকে পালিত হচ্ছে। বাংলাদেশে আদিবাসী সমাজ এই বৈশাখে ঐতিহ্যবাহী পিঠা উৎসব, খেলাধুলার আয়োজন, বৌদ্ধ মন্দিরে বুদ্ধ প্রণাম, ধর্ম উপদেশ প্রার্থনাসহ নানা ধরনের কর্মযজ্ঞ করে থাকে। অন্যদিকে কোঁচ, সাঁওতাল, ওরাও, গারো, ম্রো, মোরাং, মান্দাই, হাজংসহ অন্য আদিবাসীরা তাদের নিজ নিজ সংস্কৃতি অনুযায়ী বৈশাখ উদযাপন করে থাকে।
বাংলা নবর্বষ আসে ১২টি মাসের তেরো পার্বণ নিয়ে। এই ১২ মাস নিয়েও রয়েছে নামকরণের ঐতিহ্যগাথা ও কথকতা। বছরের পহেলা মাস বৈশাখকে ঘিরে যতটা উত্তাপ, অন্য মাসগুলোয় তেমনটা না হলেও ষড়ঋতুর বৈচিত্র্যে ভরপুর বাংলায় বারোটি মাসে উৎসবের কোনো কমতি থাকে না। বাংলা আর বাঙালি মানেই উৎসব ও আনন্দে উল্লসিত জাতি। ঐতিহ্যকে লালন করে এ জাতি বিশ্বের দরবারে তাদের গৌরবগাথাকে তুলে ধরে আপন স্বকীয়তায়।
বৈশাখ আসে নতুনের আগমনে, পুরোনো বিদায় করে বাংলা এবং বাঙালির জীবন ও সময়কে রঙিন-মঙ্গলময় করে দিতে। যত পাপ-তাপ-গ্লানি মুছে দিয়ে বাঙালি সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে ওঠে বৈশাখ। বাঙালি সারা বছরের জীর্ণতা শেষে নতুন দিনের প্রত্যাশায় বরণ করে নেয় বছরের প্রথম দিন, পহেলা বৈশাখ, বাংলা নববর্ষকে। পহেলা বৈশাখ বাঙালির প্রেরণা। এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়কে শানিত করে, করে উজ্জীবিত। শত ব্যস্ততায়ও, মহাকালের চিরায়ত নিয়মে বৈশাখ বরণে, নববর্ষের উদ্দীপনায় মেতে উঠে বাংলার সব শ্রেণি-পেশার মানুষ। বৈশাখ যে বাঙালির সর্বজনীন উৎসব তার প্রমাণ এই বৈশাখের প্রথমদিন এবং বৈশাখ বরণে সবার অংশগ্রহণ। বলতে দ্বিধা নেই, পহেলা বৈশাখই হতে পারে বাঙালির জাতীয় উৎসবের দিন, কারণ সব বাঙালির জন্য এ উৎসব একই অনুপ্রেরণায় উজ্জীবিত।
অবিরাম শুভ কামনায় বাংলা নববর্ষ মঙ্গলময় হোক সত্য-সুন্দরের চর্চায়। সবাইকে শুভ নববর্ষে অকৃত্রিম শুভেচ্ছা। শুভ হোক প্রতিটা ভোর, প্রতিটা প্রহর, প্রতিটা ক্ষণ—এ কামনা, এই শুভক্ষণে। আনন্দ আর উদ্দীপনায় জাগরিত হোক দেশ আর মানুষের কল্যাণে। নিরন্তর সময়ের স্রোত হোক শুধুই কল্যাণ আর মঙ্গলের বারতায়। সত্য আর সুন্দরের জয়গানে আমাদের আগামী দিনগুলো পূর্ণতা পাক সুখ-সমৃদ্ধিতে। শুভ হোক বাংলা নতুন বছর ১৪২৫।
|
খালেদ মাহামুদ (দিপু): বাংলা এবং বাঙালির ঐতিহ্যের প্রতীক, প্রাণের উৎসব ‘বৈশাখ’। বৈশাখ মানেই বাঙালির সর্বজনীন উৎসব। বৈশাখের ছন্দ-উচ্ছ্বাস রবিঠাকুরের ‘এসো হে বৈশাখ’ গানটিও যেন মিশে গেছে বাঙালি আর বৈশাখী উৎসবে। পহেলা বৈশাখ বাঙালির চিরায়ত সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। যে উৎসবকে অস্বীকার করা যায় না। কারণ, সব জাতি-গোষ্ঠী ও মতাদর্শের লোকের কাছেই সমান গুরুত্বের দিন এ পহেলা বৈশাখ।
বৈশাখকে ঘিরে বাঙালির চেতনাজুড়ে রয়েছে অন্য রকম আবেগ। উৎসাহ ও দেশীয় সংস্কৃতিকে ধারণ করার আবেগ-অনুভূতি এ বৈশাখী আনন্দকে অর্থবহ করেছে। বৈশাখ মানে উত্তাপ আর উৎসবের আমেজ। চারদিকে সাজসাজ রব। দেশের সব প্রান্তের মানুষের মনকে আলোড়িত করে, করে উচ্ছ্বসিত। বাংলাদেশের মানুষের বিশ্বাস বৈশাখের আগমন ঘটে শুচি-শুভ্র-নির্মল-পবিত্রতায়। সারা বছরের যত জঞ্জাল ধুয়ে-মুছে নতুন করে দিন শুরু করা। যেখানে নতুন ভাবনায় সময়, সমাজ ও জীবনকে রাঙিয়ে তোলা যায়।
‘এসো, এসো, এসো হে বৈশাখ/তাপস নিঃশ্বাসে মুমূর্ষুরে দাও উড়ায়ে,/বৎসরের আবর্জনা দূর হয়ে যাক/যাক পুরাতন স্মৃতি, যাক ভুলে যাওয়া গীতি,/অশ্রুবাষ্প সুদূরে মিলাক।/মুছে যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জরা,/অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা/রসের আবেশরাশি শুষ্ক করি দাও আসি,’ প্রাণের এই উৎসবকে নিয়ে কবিগুরুর অসাধারণ একটি গান। যে গানটি না হলে বৈশাখ পালনে যেন অপূর্ণতাই থেকে যেত। দেশজুড়ে বৈশাখজুড়েই মেলা আর আনন্দ মানেই ‘এসো হে বৈশাখ’ গানটি। সুরের মূর্ছনায় আলোড়িত করে যায় বাঙালি হৃদয়।
বছর ঘুরে প্রতিটি বাঙালির আঙিনায় বৈশাখের আগমন ঘটে আলাদা আবেগ আর চেতনা নিয়ে। যেখানে বাংলা নববর্ষ বা পহেলা বৈশাখ বিভেদহীন সমাজ গঠনের ডাক দিয়ে যায়। বৈশাখের এ সর্বজনীন উৎসব দেশের প্রতিটি মানুষকে নানাভাবে ঐতিহ্যের ভাবনায় সমৃদ্ধ করে। উৎসব আর আনন্দ-উল্লাসে মাতোয়ারা বাঙালি জাতি প্রতিটি উৎসবকেই উদযাপন করে আন্তরিকতার সবটুকু বিলিয়ে দিয়ে। বৈশাখের বেলায় এর ব্যতিক্রম তো নয়ই, বরং আরো একদাপ এগিয়ে নিয়ে যায় ঐতিহ্যকে ধারণ করে। বাংলা নতুন বছর মানেই বাঙালির প্রাণের স্পন্দন, নতুনের আহ্বানে জেগে ওঠা। সত্য ও সুন্দরের জয়গান।
তবে বৈশাখজুড়ে শুধুই কি আনন্দ-উৎসব? মোটেই না, সারাদেশে অনুষ্ঠিত বৈশাখী মেলা বাংলার সংস্কৃতি ও লোকশিল্পকে ছড়িয়ে দিতে অবদান রেখে চলেছে যুগ যুগ ধরে। ওইদিন বাঙালি নারী আর শিশুদের নানা রঙের পোশাকের সাজ ও ছেলে-বুড়োদের পোশাকে চেতনাকে জাগিয়ে দেয় অন্য রকম স্বাদে। পহেলা বৈশাখ উদযাপনের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ রাজধানীর শাহবাগে মঙ্গল শোভাযাত্রা। বর্তমানে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের অংশ গ্রহণে বাঙালি সংস্কৃতির ঐতিহ্য হিসেবে উদযাপিত হচ্ছে এই শোভাযাত্রা। অশুভ শক্তির বিনাশ, শুভশক্তির উদয়ের এ আয়োজন অসাম্প্রদায়িক চেতনাকেই যেন লালন করে যাচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আর দেশপ্রেমের এ শোভাযাত্রায় শুদ্ধতা চর্চাকে উৎসাহিত করে আগামীর অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে এগিয়ে চলতে পথ দেখায়। যদিও নিরাপত্তার কারণে এবারও এ শোভাযাত্রায় রয়েছে সরকারি নির্দেশনা, রয়েছে বিধিনিষেধ। এতে উৎসবের সীমাবদ্ধতা এলেও নিরাপত্তার স্বার্থে আমাদের সচেতন ও সোচ্চার হওয়া জরুরি।
দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার ছাত্র-শিক্ষকদের উদ্যোগে ১৯৮৯ সালে মঙ্গল শোভাযাত্রার শুভসূচনা হয়। বিশাল আয়োজনের এ মঙ্গল শোভাযাত্রায় হাতি, বাঘ, ঘোড়া, পাপেট, ময়ূর, লক্ষ্মীপেঁচা, কুমিরসহ নানা ধরনের মুখোশ শোভা পায়। এসবের মধ্য দিয়ে হাজার বছরের বাঙালির চলমান রাজনীতি থেকে শুরু করে নানা রকম সংগতি-অসংগতি ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ, সামাজিক, অর্থনৈতিক বাস্তবতা রূপকের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয়। শিল্পী, কবি-সাহিত্যিকদের স্ব-প্রতিভ পদচারণে এদিনটি থাকে উৎসবমুখর। বৈশাখের আগমনে প্রাণের জোয়ার জাগে বাঙালির প্রাণে প্রাণে। জাতি-ধর্ম-বর্র্ণ নির্বিশেষে পহেলা বৈশাখ বাঙালির মন ও মননে অন্যরকম আনন্দ-উৎসবের ভাবনাকে নাড়া দিয়ে যায়। এ ছাড়া পহেলা বৈশাখের আরেক আকর্ষণ রমনার বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ। অনেক বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে এ অনুষ্ঠানটি এখনো স্বচেতনায় অটুট রয়েছে, যা আমাদের জন্য এক বিশাল প্রেরণা।
মুসলমান সমাজে বৈশাখ বরণে তেমন নিয়ম-কানুন না থাকলেও হিন্দু ও অন্য ধর্মাবলম্বীদের রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন রেওয়াজ। তবে পহেলা বৈশাখ বাংলাদেশের প্রতিটি ঘরে অন্য রকম আনন্দে উদযাপিত হয়ে থাকে। বৈশাখী মেলায় বিনোদনের মাধ্যম হিসেবে রাখা হয় নাগরদোলা, পুতুলনাচ, সার্কাসসহ মেলার ক্লান্তি দূর করতে যোগ হয় নানা ধরনের সংগীত। গ্রাম ও শহরে উৎসবের ভিন্নতা থাকলেও আনন্দের মাত্রাটা সবখানে সমান। গ্রামাঞ্চলে বৈশাখকে বিভিন্ন রীতিনীতিতেও পালন করতে দেখা যায়। বৈশাখের আগের দিন গ্রামের বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় গরু-খাসি জবাই করে মাংস বিলাতেও দেখা যায়। বৈশাখ মানে শুধু মেলা আর খেলাই নয়, বাঙালি খাবার-দাবারেও থাকে উৎসবের আমেজ।
পার্বত্য এলাকার আদিবাসী জনগোষ্ঠীর মধ্যেও নানা আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পহেলা বৈশাখ উদযাপন করা হয়ে থাকে। বর্ষবরণে চাকমা ও মারমারা উৎসব পালন করে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যে। বৈশাখী পূর্ণিমা উদযাপনেও নৃ-গোষ্ঠীর ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা বহুকাল থেকে পালিত হচ্ছে। বাংলাদেশে আদিবাসী সমাজ এই বৈশাখে ঐতিহ্যবাহী পিঠা উৎসব, খেলাধুলার আয়োজন, বৌদ্ধ মন্দিরে বুদ্ধ প্রণাম, ধর্ম উপদেশ প্রার্থনাসহ নানা ধরনের কর্মযজ্ঞ করে থাকে। অন্যদিকে কোঁচ, সাঁওতাল, ওরাও, গারো, ম্রো, মোরাং, মান্দাই, হাজংসহ অন্য আদিবাসীরা তাদের নিজ নিজ সংস্কৃতি অনুযায়ী বৈশাখ উদযাপন করে থাকে।
বাংলা নবর্বষ আসে ১২টি মাসের তেরো পার্বণ নিয়ে। এই ১২ মাস নিয়েও রয়েছে নামকরণের ঐতিহ্যগাথা ও কথকতা। বছরের পহেলা মাস বৈশাখকে ঘিরে যতটা উত্তাপ, অন্য মাসগুলোয় তেমনটা না হলেও ষড়ঋতুর বৈচিত্র্যে ভরপুর বাংলায় বারোটি মাসে উৎসবের কোনো কমতি থাকে না। বাংলা আর বাঙালি মানেই উৎসব ও আনন্দে উল্লসিত জাতি। ঐতিহ্যকে লালন করে এ জাতি বিশ্বের দরবারে তাদের গৌরবগাথাকে তুলে ধরে আপন স্বকীয়তায়।
বৈশাখ আসে নতুনের আগমনে, পুরোনো বিদায় করে বাংলা এবং বাঙালির জীবন ও সময়কে রঙিন-মঙ্গলময় করে দিতে। যত পাপ-তাপ-গ্লানি মুছে দিয়ে বাঙালি সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে ওঠে বৈশাখ। বাঙালি সারা বছরের জীর্ণতা শেষে নতুন দিনের প্রত্যাশায় বরণ করে নেয় বছরের প্রথম দিন, পহেলা বৈশাখ, বাংলা নববর্ষকে। পহেলা বৈশাখ বাঙালির প্রেরণা। এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়কে শানিত করে, করে উজ্জীবিত। শত ব্যস্ততায়ও, মহাকালের চিরায়ত নিয়মে বৈশাখ বরণে, নববর্ষের উদ্দীপনায় মেতে উঠে বাংলার সব শ্রেণি-পেশার মানুষ। বৈশাখ যে বাঙালির সর্বজনীন উৎসব তার প্রমাণ এই বৈশাখের প্রথমদিন এবং বৈশাখ বরণে সবার অংশগ্রহণ। বলতে দ্বিধা নেই, পহেলা বৈশাখই হতে পারে বাঙালির জাতীয় উৎসবের দিন, কারণ সব বাঙালির জন্য এ উৎসব একই অনুপ্রেরণায় উজ্জীবিত।
অবিরাম শুভ কামনায় বাংলা নববর্ষ মঙ্গলময় হোক সত্য-সুন্দরের চর্চায়। সবাইকে শুভ নববর্ষে অকৃত্রিম শুভেচ্ছা। শুভ হোক প্রতিটা ভোর, প্রতিটা প্রহর, প্রতিটা ক্ষণ—এ কামনা, এই শুভক্ষণে। আনন্দ আর উদ্দীপনায় জাগরিত হোক দেশ আর মানুষের কল্যাণে। নিরন্তর সময়ের স্রোত হোক শুধুই কল্যাণ আর মঙ্গলের বারতায়। সত্য আর সুন্দরের জয়গানে আমাদের আগামী দিনগুলো পূর্ণতা পাক সুখ-সমৃদ্ধিতে। শুভ হোক বাংলা নতুন বছর ১৪২৫।
|
|
|
|
গত ১০ বছরে দেশ থেকে ৪ লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। এই টাকা দিয়ে ১১টি পদ্মা সেতু বানানো যেত বলে মন্তব্য করেছেন সাপ্তাহিক পত্রিকার সম্পাদক গোলমা মর্তুজা। এই নিয়ে ফেসবুকে একটা লেখাও লিখেছেন তিনি। আমাদেরসময় পাঠকদের জন্য তা তুলে ধরা হলো।
তিনি লিখেছেন- গত ১০ বছরে দেশ থেকে পাচার হয়েছে কমপক্ষে সাড়ে ৪ লাখ কোটি টাকা। এই পরিমাণ টাকা দিয়ে ১১টি পদ্মা সেতু বানানো যেত অথবা ঢাকা শহরের প্রতিটি রুটে মেট্রোরেল নির্মাণ করা যেত।
মেট্রোরেলের নির্মাণ ব্যয়েও বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে। চেন্নাইয়ের ৪৪ কিলোমিটার মেট্রোরেলের ২৪ কিলোমিটার নির্মিত হয়েছে মাটির নিচে দিয়ে। ৩৪টি স্টেশনের ২০টি মাটির নিচে। মাটির উপরের চেয়ে নিচে দিয়ে নির্মাণ ব্যয় অনেক বেশি। মাটির উপরে-নিচে মিলিয়ে ৪৪ কিলোমিটার মেট্রোরেল নির্মাণে চেন্নাইয়ের ব্যয় হয়েছে ২৪৫ কোটি ডলার, কিলোমিটার প্রতি ব্যয় ৫ কোটি ৫৫ লাখ ডলার।
বাংলাদেশ মাটির উপর দিয়ে ২০.১ কিলোমিটার মেট্রোরেল নির্মাণে ব্যয় করছে ২৭০ কোটি ডলার, কিলোমিটার প্রতি ব্যয় ১৩ কোটি ৫০ লাখ ডলার। জাপানের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে মেট্রোরেল নির্মাণ করছে বাংলাদেশ। চেন্নাইয়ের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি অর্থ ব্যয়ে হলেও, পাচার হওয়া টাকা দিয়ে বাংলাদেশ প্রায় ৪৫০ কিলোমিটার মেট্রোরেল নির্মাণ করতে পারত! দেশে কর্মক্ষম মানুষ আছে, কাজ নেই। আবার কাজ আছে, দেশে দক্ষ মানুষ নেই। দেশে আবার মেধার মূল্যায়নও নেই। ১০০টি পদের মধ্যে ৫৬টি পদে চাকরি হয় কোটায়। বাকি ৪৪টি পদের জন্যে প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হওয়ার সুযোগ থাকে।
দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ নেই। আর্থিক খাতে চরম নৈরাজ্য। বেসরকারি সেক্টরে চাকরির ক্ষেত্র বাড়ছে না।
বাংলাদেশে ৫ লক্ষের ওপরে ভারতীয়, কয়েক হাজার শ্রীলঙ্কান, চাইনিজ কাজ করছেন উচ্চ বেতনে, উচ্চ পদে। প্রতি বছর শুধু ভারতীয়রা বাংলাদেশ থেকে নিয়ে যায় কমপক্ষে ৩২ হাজার কোটি টাকা। ‘সিলিকন ইন্ডিয়া নিউজ’র তথ্য অনুযায়ী ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ভারত বৈদেশিক মুদ্রা আয় করেছে ৭০ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে বাংলাদেশ থেকে আয় করেছে ৪ বিলিয়ন ডলার।
এই চিত্র দেখে ভারতের ওপর রাগ করে লাভ নেই। যে মানের ভারতীয় বা শ্রীলঙ্কানরা বাংলাদেশে কাজ করছেন, সেই মানের কর্মী বাংলাদেশের নিজের নেই। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা তাদের তৈরি করতে পারেনি। আগে তাও মোটামুটি একটা শিক্ষাব্যবস্থা ছিল।
গত আট দশ বছরে তা প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে। আগামীতে বেকারের সংখ্যা বাড়বে, দক্ষ লোকের সংখ্যা শুধু কমবে। বিদেশ থেকে দক্ষ লোক এনে কাজ করাতে হবে। চিন্তা করে দেখেন, আমাদের প্রবাসী কর্মীরা রক্ত পানি করে বৈদেশিক মুদ্রা পাঠাচ্ছেন। সেই অর্থ আবার বিদেশি কর্মীরা নিয়ে যাচ্ছেন। ভারত সারা পৃথিবী থেকে যে পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আয় করে, বাংলাদেশ তার মধ্যে পঞ্চম।
|
|
|
|
বাংলাদেশের মানুষ টাকা পাচার করছে কেন? এ নিয়ে আমাদের গভীরভাবে চিন্তা করা উচিত। তারা হয়তো এখানে ইজি ফিল করছে না অথবা বিনিয়োগের জন্য প্রয়োজনীয় সব সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে না।
ফলে তারা অনুৎসাহিত হয়ে টাকা পাচার করতে পারে। এর অনেক কারণ রয়েছে যার ফলে টাকা পাচার হচ্ছে দেশ থেকে। আমাদের অর্থনীতির সঙ্গে আলাপকালে অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগ করার সুযোগ সৃষ্টি করে দেওয়াই আমাদের সরকারের মূল দায়িত্ব। ইন্টারেস্ট রেট কম থাকতে হবে।
শেয়ারবাজার বড় করতে হবে, যাতে মধ্যম শ্রেণির মানুষ বিনিয়োগ করে শান্তি পায়। শেয়ারবাজারে ভালো কোম্পানিগুলো নিয়ে আসতে হবে। তা না হলে শেয়ারবাজার বড় হবে না।
তিনি বলেন, ফার্মাসিটিক্যাল সেক্টরে সেকেন্ড লার্জেস্ট কোম্পানি হচ্ছে ‘ইনসেপ্টা’, কোম্পানিটি শেয়ারবাজারে নেই। মোবাইল কোম্পানিগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থানে, ‘বাংলা লিংক’ তারাও নেই শেয়ারবাজারে। ফুড আইটেমে লিডিং কোম্পানি ‘নেসলে’, বিদেশি কোম্পানি, সেটিও নেই শেয়ারবাজারে। শেয়ারবাজার বড় হবে কীভাবে?
অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, সঞ্চয়পত্র থেকে আমাদের দূরে সরে আসতে হবে। সঞ্চয়পত্র কালচার গরিবি কালচার। এটা যদি নিশ্চিত করতে পারি তাহলে আমাদের গ্রোথ রেট সেভেন অ্যান্ড হাফ পার্সেন্টের উপরে চলে যাবে। শেয়ারবাজার এবং বিদেশি দুই-চারটা বড় অর্থনীতির সঙ্গে ফ্রি ট্রেড করতে পারি তাহলে আমাদের লাভ হবে।
চীনের পণ্য যদি চলে আসে, আসুক না। ওখান থেকে তো র-মেটারিয়ালও আসবে। কেউ কেউ বলছেন, ভূ-রাজনীতির কারণে ঢাকা এক্সচেঞ্জের কৌশগত বিনিয়োগ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ। তারা নাকি শুধু ভয়-ভীতির মধ্যে থাকেন! প্রশ্ন হচ্ছে, কেন এই ভীতি?
বড় দুঃখ লাগে। একটা বড় সুযোগ ছিল আমাদের সামনে, তা কী কাজে লাগাতে ব্যর্থ হবো আমরা? সময়ই বলে দবে। তবে যখনই কোনো বড় সুযোগ আসবে তা কাজে লাগানো উচিত বলেও মনে করেন এই অর্থনীতিবিদ।
|
|
|
|
মুজিব হচ্ছে সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি। বাঙ্গলি জাতি সত্তাকে প্রতিষ্ঠার জন্য ভাষা সংগ্রামের মাধ্যমে সকলকে জাগিয়ে তোলেন এবং সমগ্র জীবনভর লড়াই করে সব কিছু উপেক্ষা করে, স্বাধীন বাংলাদেশর ভিত্তি স্থাপন করেন। তিনি তার নেতৃত্বেই বাঙ্গালি জাতি ও স্বাধীন রাষ্ট্র কায়েম করেন। সেজন্যই আমরা তাকে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ট মানুষ হিসেবে বিবেচনা করি। তিনি সবসময় সহজ ভাষায় বলতেন, আমি বাংলার দুঃখি মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে চাই।
সব মানুষের মুখে তখনই হাসি ফুটবে, যখন মানুষের মধ্যে কোন দারিদ্র থাকবে না, বৈষম্য থাকবে না, ক্ষুধা থাকবে না, নিরক্ষরতা থাকবে না। দুঃখি মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর যে সংগ্রাম তিনি তখন থেকে শুরু করেছিলেন, সেটা আজও অব্যাহত আছে। তার দেখানো পথই বাংলাদেশকে উন্নত করে তুলেছে। দারিদ্র দূর হচ্ছে, শিক্ষার হার বেড়েছে, নারীরা এগিয়েছে। আমাদের এ লড়াই অব্যাহত রাখতে হবে।
বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন বৈষম্যহীন সমাজ । কিন্তু আমরা এখনও সেটা প্রতিষ্ঠা করতে পারিনি। কাজেই আমাদের প্রতিজ্ঞা হবে, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সেই সোনার বাংলা আমরা গঠন করব। যে লক্ষ্য গুলো তিনি সামনে রেখে গিয়েছিলেন সেগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে।
পরিচিতি:মেহেদি হাসান (সুমন)
|
|
|
|
ভারতের আসাম রাজ্যের বিজেপি নেতা ও রাজ্যসভার এমএলএ শিলাদিত্য দেব বাংলাদেশকে নিয়ে ঔদ্ধত্যপূর্ণ মন্তব্য করে বলেছেন, ‘বাংলাদেশ সৃষ্টি করাই ছিল একটি বিরাট ভুল। বিগত দশকগুলোতে আসামে মুসলমানদের যে আগমন ঘটেছে তা এই ভুলের কারণেই হয়েছে।’ স্থানীয় একটি টেলিভিশনে সাক্ষাতকারে শিলাদিত্য আরও বলেন, ‘৭১ সালে যখন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানকে স্বাধীন করে (ভারতের) প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ভুল করেছিলেন। নতুন জন্ম নেয়া বাংলাদেশকে ভারতের অংশ হিসেবে দখল করে নেয়নি কংগ্রেস সরকার। যদি তখন এটিকে ভারতের অংশ করে নেয়া হতো তাহলে ভুলের মাশুলটা আদায় হতো।’
টাইমস অব ইন্ডিয়া জানাচ্ছে, এমন বক্তব্যের পর পত্রিকাটির পক্ষ থেকে শিলাদিত্যের সাথে যোগাযোগ করা হয়। তখনও তিনি তার বক্তব্যে অটল থেকে বলেছেন, ‘রাজ্যের (আসাম) জনসংখ্যার চিত্র বদলে যাবার পেছনে মূলত প্রতিবেশি দেশটি থেকে মুসলিমদের আগমনই দায়ী।
|
|
|
|
ছাত্র-ছাত্রীদেরকে জ্ঞানভিত্তিক শিক্ষা দেয়া প্রয়োজন। যেই শিক্ষাদান জ্ঞানের বিস্তৃতি ঘটাবে, ছেলে মেয়েকে সেই শিক্ষাদান করতে হবে। আর এটা মূল বই পড়ালেই সম্ভব হবে। তাছাড়া ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক, শিক্ষকের যোগ্যতা এবং শিক্ষাদান কার্যক্রম উন্নতমানের করতে হবে।
পরীক্ষার সময় শুধু প্রশ্ন উত্তরে ১০০ মার্কস, এটা না করে অন্তত ৪০% যদি শ্রেণীকক্ষে তার আচার আচরণ, তার জ্ঞানের স্পৃহা, তার ক্লাসের দক্ষতা ইত্যাদি অনুযায়ী মার্কসের সিস্টেম থাকতো, তাহলে প্রশ্নপত্র ফাঁসের প্রবণতা অতোটা থাকতো না। আমাদের পুরো শিক্ষা ব্যবস্থাটাকেই সাজাতে হবে। যাতে মানুষকে সেবা করার জন্য শিক্ষাটা আসে।
জ্ঞানভিত্তিক শিক্ষা দিতে হবে, পরীক্ষাভিত্তিক শিক্ষা নয়। তারা জ্ঞানের আগ্রহ কতটুকু দেখালো এবং গ্রহণ করতে পারল আর আমরা কতটুকু দিতে পেরেছি, সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। নৈতিকতা, আদর্শ, সমাজব্যবস্থা, বিজ্ঞান সব কিছুর শিক্ষা দিয়ে ক্লাস সিস্টেমের ভিতরেই তাকে পরীক্ষা নেয়ার ব্যবস্থা করা উচিত।
|
|
|
|
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক বাণিজ্য মন্ত্রী অামীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী সরকারকে উদ্দেশ্য করে বলেন, সরকার নির্বাচনী ব্লুপ্রিন্ট বাস্তবায়ন করতে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে বন্দি করে রেখেছে জনগণের নেত্রীকে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে। তিনি আরোও বলেন, জনগণকে নির্বাচনের বাইরে রেখে ক্ষমতা দখল ও নির্বাচনী প্রকল্প বাস্তয়বায়ন করতে ব্যাংকলুট করছে মেগা দুর্নীতি সরকার।
মঙ্গলবার (২০ মার্চ) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিঅাইপি লাউঞ্জে বাংলাদেশ জাতীয় দল অায়োজিত ‘নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য করণীয়’ শীর্ষক অালোচনায় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন ।
তিনি বলেন, জনগণের ওপর সরকার অাস্থা হারিয়ে ফেলছে। জনগণও সরকারের ওপর অাস্থা হারিয়েছে। সরকার ও জনগণের সম্পর্ক অাস্থাহীনতার মধ্যে চলছে। জনগণের প্রতিবাদের বিস্ফোরণ ঠেকাতে সরকার জনগণকে নির্দলীয় নির্বাচনে ভোট দেয়ার সুযোগ দিতে চায় না।
আমীর খসরু অারও বলেন, দেশ ও জাতী যে সংকটে অাছে তা আমাদের একহয়ে মোকাবেলা করতে হবে। যতই জীবনের ঝুঁকি আসুক অামরা রাজপথে থাকবো। সরকারের হতাশা এমন পর্যায় গেছে যে তারা কী করবে তা ঠিক করতে পারছে না। এই কারণে সরকার জনগণের অধিকার একটার পর একটা কেড়ে নিচ্ছে। এর কারণ হচ্ছে সরকারের মনে ক্ষমতা হারানের ভয় কাজ করছে। তারা বিচারের মুখোমুখি হওয়াকে নিরাপত্তাহীনতা ভাবছে।
এসময় বিশদলীয় জোট নেতারা বলেন, সবচাইতে জনপ্রিয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার জন্য শান্তিপূর্ণ অান্দোলন করবো অার এই অান্দোলনে হাসিনা, বেগম জিয়াকে মুক্ত করে দিবে এমন ভাবাটা বোকামি ছাড়া অার কিছুই নয়। অাপনারা অান্দোললনের ডাকদিন অামরা জনগণকে সাথে নিয়ে রাজপথে নামবো এই সরকারের পতন ঘটাবো।
২০১৯ সাল হবে গণতন্ত্র মুক্তির বছর উল্লেখ করে নেতারা বলেন, দাদারা অামাদের ক্ষতায় বসাবে এমনটা ভাববেন না যা করার তা অামাদেরই করতে হবে। দেশের ভালো-মন্দ বুঝতে হবে, দায়িত্ব নিতে হবে কারণ দেশটা অামাদেরই।
নিরপেক্ষ নির্বাচন অাদায় করতে হলে বেগম খালেদা জিয়া ছাড়া সম্ভব নয়।
পাকিস্তানের হাতথেকে দেশ স্বাধীন করা হয়েছে ভারতের গোলামী করার জন্য নয় দাবি করেন নেতারা ।
বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান এডভোকেট সৈয়দ এহ্সানুল হুদার সভাপতিত্বে বিশদলীয় নেতারা বক্তব্য রাখেন।
|
|
|
|
আমরা বিভিন্ন সময়ে দেখি যে, মাদক নিয়ন্ত্রণের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। কিন্তু তারপরও আমরা মাদকের প্রবাহটা বন্ধ হতে দেখছি না। আসলে আমাদের দেশে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতার অভাব রয়েছে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনী একটু সচেতন হলে হয়তো মাদকের সরবরাহটা বন্ধ হতো। আর এর সরবরাহ বন্ধ হলেই এর ভয়াবহ কুফল থেকে আমরা রক্ষা পেতাম।
আসলে মাদকগুলো আমাদের দেশে ঢুকে সড়ক পথ দিয়ে। কারণ, সড়ক পথ দিয়ে খুব সহজেই মাদক আনা নেওয়া করা যায়। নৌ পথে বা বিমানে আনা নেওয়া করলে ধরা পড়ার ভয় থাকে। তাই তারা সড়ক পথটাকেই বেছে নেয়। বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে তারা এ পথে মাদক সহজেই আনা নেওয়া করে।
পরিচিতি : অধ্যাপক, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়/মতামত গ্রহণ : এইচ. এম. মেহেদী/ সম্পাদনা : মোহাম্মদ আবদুল অদুদ
|
|
|
|
এদেশে আসে না ফাগুণ আসে একুশে ফেব্রুয়ারি। সৌভাগ্যই বলতে হবে। বাংলা তারিখে আট ফাল্গুন পালন করা হলে সারা দুনিয়ার বাঙালি একসঙ্গে একুশে পালন করতে পারত না। আমরা এমন এক জাতি কিছুতেই ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারি না। বলছি একুশের কথা। এই একুশে আজ আসলে কি তার সেই চেতনা আর ঔজ্জ্বল্য নিয়ে আছে আমাদের সমাজে? একদিকে হিন্দি একদিকে মরু দেশের প্রভাব আরেকদিকে ইংরেজি। ছেলেমেয়েদের ভাষা গেছে পাল্টে। বলার কথা, লেখার ভাষা সব এমন লেজে গোবরে ভাবলেও শিউরে উঠি। যারা সাংবাদিক যারা মাইক্রোফোন হাতে টিভির পর্দায় তাদের অনেকের বাক্য অশুদ্ধ। অনেকের বাংলা শুনলে মনে হয় তাদের জন্ম আর কোনখানে, অন্য কোনো দেশে। শুধু তারা নয়, দেশে-বিদেশে বাঙালির এক বিশাল অংশে আজ বাংলা প্রায় উধাও। কোথায় ইংরেজ ে কোথাও ভারত বা পাকিস্তান আর কোথাও বা মরু হাওয়া। যার কারণে বাংলা মায়ের চোখে জল আর শুকোয় না।
একদিন আমরা সবাই বাঙালি হবার আশায় মায়ের। চোখের পানি মুছিয়ে দেওয়ার প্রতিজ্ঞা করেছিলাম। সেই প্রতিজ্ঞা এতটাই শক্তি ছিল ভাষার জন্য প্রাণ দিতেও কসুর করেনি অগ্রজেরা। আজ সেই ইতিহাস কেবল অতীত। দেশের বিদ্যালয় মহাবিদ্যালয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কথায় আসি। এগুলোই তো লেখাপড়ার পীঠস্থান। অথচ আজকাল ফ্যাশন হচ্ছে নাম হবে ইংরেজিতে, নাম হবে মরু দেশের নামে! না হলে বাণিজ্য জমে না। এই প্রবণতা বিশাল এক প্রজন্মকে ধীরে ধীরে নিজ দেশে পরদেশি করে তুলেছে। উন্নয়নের যে জোয়ার বা যে প্রক্রিয়া তার সঙ্গে সাংঘর্ষিক না হওয়ার পরও ভাষাই পড়েছে বড় বিপদে। বাংলা বলা, বাংলা লেখাটা সাবেকী হয়ে আধুনিক হয়ে উঠছে অন্য ভাষা। এবং তাকেই বেগবান করছে সমাজ।
আমরা ভাষা আন্দোলন নিয়ে যত গর্ব করি না কেন এখনো আমাদের দেশে সব বিষয়ে বাংলায় বইপত্র মেলে না। আমাদের দেশে চিকিৎসা বিজ্ঞান কিংবা আইনের মতো বিষয়ে পাঠ্য মূলত বিদেশি ভাষার বই। অথচ কত ছোট ছোট দেশ এ বিষয়ে স্বাবলম্বী। চাইলে আমরাও পারি। করি না। কেন জানি পোশাক, ভাষা আর আচরণে আজ আমরা ভিন দেশের দাস হওয়ার জন্য আগ্রহী। অথচ আমাদের গর্বের দেশ গর্বের ইতিহাস অতীত এতটাই বিশাল তাতেই বাঁচা যায় কয়েক জীবন। মন খারাপ হয়ে যায় নাটকের কথ্য ভুল বাংলায়। মন মুষড়ে পড়ে লেখকের বানান ভুলে। কেন এমন আমরা? কেন আমাদের দেশের সব মানুষ শুদ্ধভাবে মাতৃভাষা পড়তে বা বলতে জানে না? অথচ এই আমাদের সাহিত্য-সংস্কৃতিই ভাষাকে মা করে মহিয়সী করে রেখেছে, যা খুব কম জাতিতে দেখা যায়।
একুশের মহান দিনে আমরা যেন মনে রাখি, যে জন বঙ্গেতে জন্মি হিংসে বঙ্গবাণী/সে জন কাহার জন্ম নির্নয় ন জানি।
একগ্লাস টলটলে জল, একবুক হাওয়া একজীবনের আলো আমাদের মাতৃভাষাকে যেন সবার ওপরে রাখি আমরা। যেন মন খুলে গাইতে পারি, আমি তোমায় ভালোবাসি। একুশের দেশে মুক্তিযুদ্ধ ও উদারতাবিরোধী সব কিছু ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে যাক শুদ্ধ মাতৃধারায়। জয়তু একুশে ফেব্রুয়ারি।
|
|
|
|
আমি তাঁকে চিনিনা কিন্তু মুখটা পুরোপুরি চিনি। বিভিন্ন প্র্যাংক ভিডিওতে তার সুঅভিনয় দেখেছি! আজ তাঁর পেইজ অথবা ব্যক্তিগত আইডি (দ্বিধান্বিত) থেকে তিনি পুলিশকে ঘৃণাভরে ছিঃ ছিঃ বলেছেন;
আমি তাঁর ভিডিওতে করা অভিযোগগুলো শুনছিলাম। হঠাৎ করেই খেয়াল করে দেখলাম তিনি যে এলাকা নিয়ে কথা বলছেন তা যাত্রাবাড়ী এলাকা; একটু থমকেই গেলাম। মনোযোগ দিয়ে তাঁর অভিযোগগুলো ভিডিওতে শুনলাম।
তিনি ও এক আপু বাইকে করে কমলাপুর যাচ্ছিলেন। ফ্লাইওভারে উঠে ভাইটি কাউকে ফোন করতে বাইক থামালেন। হঠাৎ তিনি দেখলেন পাশের বাড়ি থেকে ৩-৪টি ছেলে খুব অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করে টিজ করছে তার সাথের আপুকে। পরমুহূর্তেই তাঁরা সেই বাসার ওখানে চলে যান এবং যাত্রাবাড়ি পুলিশ ফাঁড়ির অফিসারদের কাছে সাহায্য চান! যাত্রাবাড়ি ফাঁড়ির ইনচার্জ এস আই আজিজ তাদেরসহ উক্ত বাসায় যান। গিয়ে দেখেন ওখানে ৪ জন নয় ৩ জন ছেলে এবং তারা এসএসসি পরিক্ষার্থী!!
তাদের বাবা মায়েরা করজোরে বারবার বাইকার ভাই ও আপুর কাছে ক্ষমা চান এই বলে যে, আমরা জানিনা ওদের কী অপরাধ, আপনারা দয়া করে ক্ষমা করে দেন। ওরা এসএসসি পরীক্ষার্থী!! বাইকার ভাই সেখান থেকে ব্যাপারটা সুরাহা করে বাইরে চলে আসেন। বাহিরে এসে তিনি ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আজিজের সাথে চা পান করেন এবং নিজ গন্তব্যের পথে চলে যান।
এবার আসা যাক পুলিশ অফিসারের ভুল বিষয়ক প্রসঙ্গে:
প্রথম যে অফিসারকে তিনি রাস্তায় অভিযোগ করেন তিনি এএসআই শাহাদাৎ ; বাইকার ভাইয়ের বর্ণিত অভিযোগের চাক্ষুষ সাক্ষী তাঁরা নিজেরা দুজনই! এএসআই শাহাদাৎ তাকে বললেন আপনারা থানায় যেয়ে অভিযোগ করেন আমরা ব্যবস্থা নেবো। আইনগত জায়গা থেকে খুব বড় ব্যত্যয় ঘটিয়েছেন তা নয়। কারণ থানা অতীব নিকটবর্তী আর সরাসরি এএসআইরা সকল বিষয়ে সবসময় অগ্রবর্তী হতে পারেন না, কিছু বাঁধাও থাকে।
পরমুহূর্তে বাইকার ভাই ৯৯৯ এ কল করলে এসআই আজিজ তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে যান এবং ব্যাপারটার সুরাহা করে আসেন। তিনি ৯৯৯ এর সাহায্য নিলেন, ফাঁড়ির ইনচার্জ ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টি সুরাহাও করে আসলেন।
ঘটনা পরবর্তী বাইকার ভাইয়ের প্রতিক্রিয়া :
পুলিশের হেঁটে যাওয়ার দৃশ্য দেখিয়ে তার বলা; স্যালুট এবং ছি: ছি: ছি:! এত ঘৃণা কোত্থেকে আসেরে ভাই? এক পুলিশ আপনাকে থানায় অভিযোগ করতে বলে দোষ করে ফেললো! আরেক পুলিশ সদস্য ৯৯৯ এর মাধ্যমে আপনার অভিযোগ সঠিক জায়গায় প্রদান করলো এবং আরেকজন ঘটনাস্থলে এসে আপনাকে নিয়ে গিয়ে পুরো বিষয়টা সুরাহা করিয়ে আসলেন!! এসব কী কিছুই না? এত ঘৃণা তাই শুধু ঘৃণার অংশটুকুই উপস্থাপন করলেন?
আপনি ভালো অভিনয় করেন তা জানি, কিন্তু তা এতটা উচ্চমার্গীয় হবে তা ভাবিনি! আচ্ছা একটা প্রশ্ন ঘুরছে মাথায় এসএসসি পরীক্ষার্থী ছেলেগুলো বাসার ছাদে গাঁজা সেবন করছে সেটি ফ্লাইওভার থেকে কিভাবে বুঝলেন? এটা আমার জানতে চাওয়া কারণ আপনি তো ছাদে উঠেননি! আমরা প্রায়শই ঘটনার বিস্তৃতি নানান আঙ্গিকে ঘটাই কিনা? এই দেখেন না আপনি ৯৯৯ এর সাহায্য, ডিউটি অফিসার এস আই নূরজাহান, রেডিও অপারেটর আলতাফের ভূমিকা, ফাঁড়ির এস আই আজিজের ধনাত্মক ভূমিকা নিয়ে একটি শব্দও ব্যয় করেননি!
আপনাদের মত অনেকেই যখন ৯৯৯ এ ১৪ হাজার প্র্যাংক কল দিয়ে ফাজলামি করেন! আমরা পুলিশেরা একটিবারের জন্যও বলে উঠতে পারি না – ছিঃ!
ভালো-মন্দের মিশেলে যে সমাজ, সে সমাজের প্রত্যেকটি পেশায় ও শ্রেণিতে ভালো-মন্দের মিশেল থাকবে এটাই স্বাভাবিক…
আমারও ইচ্ছা ছিল আপনাকে স্যালুট জানানোর! পারলাম না। কারণ আপনার জাজমেন্টাল আচরণ আমাদের ব্যথিত করার পাশাপাশি বিস্মিতও করেছে।
নাহ ছিঃ বললাম না, একরাশ বেদনাই রেখে গেলাম…
ভালো থাকবেন আপনারা, ভাল থাকুক আপনার অবাক করা নাগরিক মন ও নাগরিক সাংবাদিকতা।
লেখক: সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার (ডেমরা জোন) (লেখকের ফেসবুক পেইজ থেকে সংগৃহীত)
|
|
|
|
সাগর-রুনি সাংবাদিক হিসেবে আমাদের সহকর্মী। আমরা তাদের হত্যার বিচারের দাবিতে সোচ্চার রয়েছি। তবে দুঃখের বিষয়, এই দম্পতি হত্যাকা-ের ঘটনাটি ছয় বছর পার হয়ে সাত বছরে পা দিয়েছে। কিন্তু এখনো তার কোনো সুরাহা হয়নি। ৫৬ দফা তদন্ত রিপোর্ট দেওয়ার নামে সময় নেওয়া হয়েছে। এই পর্যন্ত ৫৪ বার রিপোর্ট দেওয়ার তারিখ পেছানো হয়েছে।
গোটা সাংবাদিক পরিবার এই হত্যাকা-ের বিচারের দাবিতে সোচ্চার রয়েছে। গত শনিবারও ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির অফিসে হত্যাকা-ের বিচারের দাবিতে অনুষ্ঠান করা হয়েছিল। আমরা সকল সাংবাদিক এখনো আশা করি, সাগর-রুনির পরিবার একটি সঠিক বিচার পাবে। এই দেশে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হয়েছে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়েছে।
ঠিক এমনভাবে সাগর-রুনি হত্যার বিচারও সাংবাদিক পরিবার দেখবে। আমি মনে করি, সাংবাদিকদের মধ্যে যে দ্বিমত রয়েছে, তা দূর করে একটি জোড়ালো আন্দোলন করলে, বিচার কার্যক্রমটি আমরা খুব দ্রুত দেখতে পারব।
পরিচিতি : সাবেক সভাপতি, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি
|
|
|
|
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এক বিবৃতি প্রকাশ করে বলেছেন, বাংলাদেশে বিরোধী দল বিএনপির নেতাকর্মীদের ঢালাওভাবে গ্রেফতার বন্ধ করা উচিত। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এশিয়ার পরিচালক ব্র্যাড অ্যাডামস এক বিবৃতিতে বলেন, বিরোধী দলকে আন্দোলনে বাধা দিয়ে মতপ্রকাশ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের অধিকার খর্ব করছে বাংলাদেশ সরকার।
বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার রায়ের আগে সারাদেশে শতাধিক বিএনপি নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতে বাংলাদেশের নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীকে আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা কার্যক্রম চালানোর নির্দেশ দেয়া উচিত বাংলাদেশের সরকারের।
ব্যাড অ্যাডামস আরো বলেন, সব রাজনৈতিক দলের নেতাদেরই তাদের সমর্থকদের সহিংসতায় না জড়াতে সতর্ক করা উচিৎ। একইসাথে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেও ধৈর্যশীল থাকা উচিত বলে মনে করেন তিনি।
অর্থ আত্মসাৎ মামলায় দোষী প্রমাণিত হলে কারাদণ্ডসহ আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ থেকে নিষিদ্ধ হতে পারেন খালেদা জিয়া।
রায়কে কেন্দ্র করে তাঁর সমর্থকরা বিক্ষোভ করতে পারে এমন আশঙ্কায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে সারাদেশে। সব ধরনের সভা সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে ও বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলছে, এর আগে বিরোধী দলের আন্দোলনের সময় অগ্নিকাণ্ড,হত্যাকাণ্ড বন্ধ করতে বাংলাদেশের নিরাপত্তারক্ষাকারী বাহিনী বিরোধী দলের সমর্থকদের গ্রেফতার ও হয়রানি করে। শতাধিক ব্যক্তিকে গুম করারও অভিযোগ আনা হয় নিরাপত্তারক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে।
এই মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি নেত্রী ৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়া সরকারের বিরুদ্ধে তাঁকে ও তাঁর পরিবারকে হয়রানির অভিযোগ করেন। তবে দলের সমর্থকদের শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করার নির্দেশ দেন তিনি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ প্রশাসনিক নির্দেশের মাধ্যমে বিরোধী দলের প্রতিবাদের অধিকার হরণ করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্র জানিয়েছে গত ৮ দিনে সারাদেশে ১৭৮৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
রায়কে কেন্দ্র করে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ ও বিএনপির সমর্থকরা সহিংসতা ছড়াতে পারে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।
শক্তি ও আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহারে জাতিসংঘের মৌলিক আইন মেনে চলার জন্য নিরাপত্তারক্ষাকারী বাহিনীকে সুষ্ঠ নির্দেশনা দেয়ার জন্য বাংলাদেশের সরকারকে আহ্বান জানানো হয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের পক্ষ থেকে।
বিরোধী দলের বিরুদ্ধে এমন অবস্থান নিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক সরকার হিসেবে বাংলাদেশ সরকারের দাবীকে বিতর্কিত করছে বলে মনে করেন ব্র্যাড অ্যাডামস।
তিনি বলেন, সহিংসতা রোধ করা সরকারের দায়িত্ব হলেও তা জনগণের মৌলিক অধিকারের প্রতি সম্মান রেখে সম্পাদন করা উচিত। সূত্র: বিবিসি বাংলা
|
|
|
|
জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস আজ। বই পড়ি, স্বদেশ গড়ি। জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস প্রথম বারের মত করা হচ্ছে এজন্য সরকার এবং সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাই। বই পড়ে জীবনের অন্ধকার দূর করা সম্ভব। শিক্ষাই আলো । শুধু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পড়া দিয়ে হবে না। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি গ্রন্থাগারে যেতে হবে। বিভিন্ন রকমের বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। এর মাধ্যমে সমাজে আলোক বর্তিকা প্রজ্বলন করতে পারি। আন্দ্রে মালরো যখন ফ্রান্সের সংস্কৃতি মন্ত্রী তখন তিনি ফ্রান্সের গ্রামে গঞ্জে গ্রন্থাগার গড়ে তোলেন।
ফ্রান্সের জনগণ বলে যে, আন্দ্রে মালরোর সে সিদ্ধান্ত ফ্রান্সের জনগণের শিক্ষাকে অনেক গুণে বর্ধিত করেছে। বাংলাদেশের মানুষের হয়তো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা কম, কিন্তু তাদের সাহিত্য চর্চা বেশি। বই পড়ার প্রতি যে বাংলাদেশের মানুষের প্রবল আকর্ষণ রয়েছে, সেটা আমরা লক্ষ্য করি প্রতি বছর যখন অমর একুশে বইমেলায় উপস্থিত হয়। বইমেলায় মানুষের ঢল দেখে বোঝা যায়, তারা কতটা বইপ্রেমী।
এত মানুষ, তারা কিভাবে বই কিনতে আগ্রহী হচ্ছেন, বই পড়তে চাচ্ছেন তা দেখে বাংলাদেশের সাহিত্য সম্বন্ধে সম্যক ধারণা পাওয়া যায়। প্রতিবছর জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস পালনের মাধ্যমে বই পড়ার আন্দোলনকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবো অনেকদূর।
পরিচিতি : সাবেক ভিসি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
|
|
|
|
সৌদি আরবের সবচেয়ে বয়স্ক মানুষ আলী ইবনে মুহাম্মদ ১৪৭ বছর বয়সে মারা গেছেন। তিনি চার বছর আগে সৌদির সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তি হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেন।
রোববার সৌদি গণমাধ্যম জানায়, এ দীর্ঘ জীবনে তিনি কখনো হাসপাতালে যাননি। তিনি ঘরেই সবজি ও ফলের জুস করে খেতেন। চিনিযুক্ত খাবার তিনি কখনোই গ্রহণ করেননি। প্রতিদিন এশার নামাজ আদায়ের পর ঘুমাতে যেতেন ও ফজরের আগেই উঠে নফল আদায় করতেন। জীবনভর সোজা হয়ে ঘুমাতেন।
আলী ইবনে মুহাম্মদ তার ১০০ তম জন্মবার্ষিকীতে বলেন, তিনি তার আবাসভূমি থেকে ৪ কিলোমিটার দূরে হেটে যেয়ে জুমার নামাজ আদায় করতেন। সূত্র: আল ওয়াতান
|
|
|
|
গার্মেন্টস শ্রমিকদের মজুরি যখন পাকিস্তানে ৯৯ ডলার, কম্বোডিয়ায় ১২৮ ডলার, ভারতে ১৩৬ ডলার, ভিয়েতনামে ১০০ ডলার এবং চীনে ২৯১ ডলার তখন তা বাংলাদেশে মাত্র ৭১ ডলার। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের সাথে বাংলাদেশের উদ্যোক্তাদের দরকষাকষিতে দুর্বলতা। বিবিসি বাংলাকে সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ, সিপিডির গবেষক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম এ তথ্য জানিয়ে বিবিসি বাংলাকে বলেন, এশিয়ার অন্যান্য দেশের চেয়ে বাংলাদেশ সবচেয়ে ন্যূনতম মজুরি দিচ্ছে। সামগ্রিকভাবে গড়পড়তাভাবে যদি সকল গ্রেডের মজুরি বিবেচনায় নেয়া হয়, মাসিক হিসেবে বাংলাদেশের মজুরি অন্যদেশ থেকে কিছুটা ওপরে। কিন্তু শুরুর গ্রেডে যারা ঢুকছেন গ্রেড-৭ যাদেরকে বলা হয় তারা কিন্তু এখনো অন্যান্য দেশের শ্রমিকদের তুলনায় কম বেতন পাচ্ছে।
পোশাক রফতানিতে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষে। এশিয়ার মধ্যে ন্যূনতম মজুরি দেয়া হয় এ দেশে। শ্রমিকদের বড় কোন বিক্ষোভ ছাড়া বেতন বাড়ানোর লক্ষ্যে মালিক পক্ষ মজুরি বোর্ড গঠনে সম্মত হয়েছে।
বাংলাদেশের মালিকরা কেন কম বেতন দেন? অন্যদেশগুলোর সাথে এখানকার শ্রমিকদের বেতনের তফাৎটা কেমন?
এ প্রসঙ্গে ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বাংলাকে বলেন, প্রথমত দেখার বিষয় – সামগ্রিক উন্নয়নের সঙ্গে শ্রমিকদের আয়ের সম্পর্ক থাকে এবং এর সঙ্গে বাজারে শ্রমিকের সরবরাহ ও উৎপাদনশীলতা, মজুরি নির্ধারণের ক্ষেত্রে এগুলোর সাথে সম্পর্ক থাকে। কোন একটি দেশে বাংলাদেশের মতো একটি ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে অত্যধিক নির্ভরশীলতা তৈরি হয় তখন স্বাভাবিকভাবে শ্রমিক সরবরাহ বেড়ে যাবে। মজুরির ওপরে তার একটা নেগেটিভ স্কিম পড়বে সেটি একটি দিক। কিন্তু সরকারের একটা দায়িত্ব রয়েছে আইনী কাঠামোর মাধ্যমে ন্যূনতম মজুরিটা নিশ্চিত করা। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে যেটি হয়, বাজার কাঠামো ও সরকারের আইনী কাঠামো কোনটি আসলেই উপযুক্তভাবে কাজ করে না। এ প্রতিক্রিয়া হিসেবে শ্রমিকরা বরাবরই বঞ্চিত হয়েছে। তবে তার ভিতরে কিছুটা ইতিবাচক গত ৭ থেকে ৮ বছরের ভিতরে তিনবারের মতো এটি রিভিশনভাবে কিছুটা উন্নতি হয়েছে।
কী কারণে বাংলাদেশের মালিকরা বেতন বাড়িয়ে দিতে রাজি হন না?
জবাবে ড. মোয়াজ্জেম বলেন, সরকারের আইনী কাঠামোকে উপযুক্তভাবে কাজ করত তাহলে মালিকরা সেটা মানতে গিয়ে শ্রমিকদের মজুরি বাড়াতে পারতেন। আমাদের এখানে ন্যূনতম মজুরি কয়েক বছর পর পর পুনঃনির্ধারণ হয়। তখন ১২ টি সূচকের ভিত্তিতে পুনঃমজুরি নির্ধারণ হওয়ার কথা তা মাত্র দুটা সূচকের তথ্য-উপাত্ত জাতীয়ভাবে পাওয়া যায়। তথ্য-উপাত্তগুলোর জাতীয় পর্যায়ে তথ্য না থাকার কারণে এগুলো কার্যকর করার ক্ষেত্রে এক ধরণের দ্বিধা কাজ করে এবং মালিকপক্ষের একটা চাপ কাজ করে এবং শ্রমিকরা সেখানে তথ্য-উপাত্তের অভাবে তা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিতে পারে না। সে জায়গায় তাদের একটা দুর্বলতা কাজ করে। আবার অন্যদিকে মালিকদের ক্ষেত্রে যে বিষয়টা বলা হয় তারা তা বাস্তবায়নের পূর্বশর্ত হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের কাছ থেকে অন্যান্য দেশের মত দর নির্ধারণে দরকষাকষি করতে পারেন না। কিন্তু তারপরেও আমরা দেখতে পেয়েছি একটা ডেনিম জিন্স বানাতে চীনের একজন উদ্যোক্তা পান ৭ দশমিক ৬৯ ডলার, বাংলাদেশে পায় ৭ দশমিক ৫২ ডলার, ভিয়েতনামে পায় ৭ দশমিক ৬২ ডলার। অর্থাৎ আমাদের দেশে তারা কমমূল্যে অফার করছে।
বিদেশি ক্রেতাদের সঙ্গে বাংলাদেশিরা দেনদরবার কতটা করছে?
ড. মোয়াজ্জেম বলেন, কম মূল্য বাংলাদেশে দেয়ার বড় কারণ হচ্ছে শ্রমিকদের মজুরি কম দিতে হয়। কাঠামো হিসেবে, সামগ্রিক হিসেবে মজুরির প্রভাব সামগ্রিক মূল্যর মধ্যে পড়ে। এক্ষেত্রে যদি আমাদের উদ্যোক্তারা ভালোভাবে নির্ঘোষিত করতে পারত এবং সরকারের দিক থেকে আইন কাঠামো আরো একটু শক্তিশালী থাকত তাহলে কিন্তু মজুরি সহজভাবে বাড়তে পারত। এটি শুধু উদ্যোক্তার ওপর পড়তো না বায়ার কিন্তু এটি দিতে বাধ্য থাকতেন। তাদের কমপ্লাইন্সের গাইডলাইন সে অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট দেশের আইন কাঠামো মানার বাধ্যবাধকতা থাকে। তাহলে আমাদের এখানে ন্যূনতম মজুরির মানদন্ড আরো সঠিক করা যেত। তার সুযোগটা কিন্তু সরাসরি একজন শ্রমিককে দেয়া যেত। সেটি আমরা এখানে প্রত্যাশা করি।
|
|
|
|
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকারি দল আওয়ামী লীগের উচ্চ পর্যায় থেকে কেন্দ্রীয় নেতাদের বেশি বেশি কথা বলার নির্দেশ দিয়েছেন। সেই সাথে বিএনপির দুর্নীতি এবং সরকারের সকল সফলতাকে জনগণের সামনে বার বার তুলে ধরে নির্বাচন মুখী প্রচার-প্রচারণায় নামতে বলা হয়েছে। ঠিক সেই সময়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া দলীয় উচ্চ পর্যায়ের নেতাদের চুপ থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। আর যদি কথা বলতে হয়, তাহলে সকল নেতাদের একই সূরে কথা বলতে বলা হয়েছে। সরকারের উসকানিতে কান দিতে নিষেধ করেছেন এবং সরকারের পাতা ফাঁদে যেন বিএনপি পা না দেয়, সেজন্য সতর্ক থাকার পরামর্শ ছাড়াও এরকম আরও অনেক নির্দেশনা দিয়েছেন বেগম খালেদা জিয়া।
এখানে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, আওয়ামী লীগ যে পদক্ষেপ নিয়েছে, সেটা তাদের জন্য ঠিক আছে। কেননা, তারা সরকারি দল, তাই তাদের প্রচারণা করা দরকার। নিজের দুর্নীতির কথা চাপা দিতে বেশি বেশি উন্নয়নের কথাই তাদের বলতে হবে। এক্ষেত্রে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া চমৎকার একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এর কারণ হলো, বিএনপির নেতারা যদি জনসম্মুখে কথা বলতে থাকে, তাহলে বিএনপি কি করতে চাচ্ছে তা সবার কাছে প্রকাশ পেয়ে যাবে।
বরং বিএনপির যে জনপ্রিয়তা আছে, তা নিয়ে যদি বিএনপি চুপ থাকে, তাহলে সরকারের মধ্যে তাদেরকে নিয়ে আগ্রহের সৃষ্টি হবে এবং ক্ষেত্র বিশেষ ভীতির সৃষ্টি হবে। সেই সাথে বিএনপির চুপ থাকার কারণ খোঁজার চেষ্টা করবে সরকার। এখানে চুপ থাকাটাই বিএনপির জন্য মঙ্গলের কারণ হয়ে দাঁড়াবে। এরপর বলা যায়, বিএনপি চুপ থাকলে সরকারের যত বেশি আগ্রহ বাড়বে এবং তারা বিএনপিকে নিয়ে যত বেশি প্রপাগান্ডা তাদের বিরুদ্ধে প্রচার করবে, বিএনপির তত বেশি জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকবে। আওয়ামী লীগের নিন্দার পরেও বিএনপি চুপ থাকার ফলে জনগণের একটা সহানুভূতিও বিএনপি অর্জন করতে সক্ষম হবে। সবকিছু মিলিয়ে বিএনপির চুপ থাকার নীতি তাদেরকে লাভবান করবে।
পরিচিতি : সাবেক সংসদ সদস্য মতামত গ্রহণ : লিয়ন মীর সম্পাদনা : মোহাম্মদ আবদুল অদুদ
|
|
|
|
|
|
|