মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চাই, মনের দুঃখ-কষ্টের কথাগুলো বলতে চাই
5, November, 2017, 4:25:6:PM
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আমি দেখা করতে চাই, মনের দুঃখ-কষ্টের কথাগুলো বলতে চাই। বারবার অনুরোধ করছি। চেষ্টা করছি বিভিন্নভাবে তার সঙ্গে দেখা করার, কিন্তু কেন জানি তিনি আমাকে সাক্ষাৎ দেন না। তার কাছে আমার অনুরোধ পৌঁছায় কিনা তাও আমি জানি নাÑ আমাদের অর্থনীতিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করেন কিংবদন্তি তুল্য লোকসঙ্গীত শিল্পী আবদুল কুদ্দুস বয়াতি। তিনি বলেন, আমি জানি, বর্তমান সরকার শিল্পীদের জন্য অনেক কিছু করছে। কিন্তু আমার লোকসঙ্গীত শিল্পীদের দিকে ফিরে তাকাচ্ছে না কেন বুঝতে পারছি না। তবে ধারণা করছি, আমার সম্পর্কে কেউ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে কু-মন্ত্রণা দিয়েছে। কে দিয়েছি তা আমি জানি না। তিনি আরও বলেন, পেটের দায়, সন্তান ও লোকশিল্পীদের জন্য গান গাইতে হয়। যে কেউ আমাকে ডাকলে, আমি সারা দিই। গান গাইলে আপনি আমাকে দেখতে পারবেন না, একটা পেপার নিয়ে ধরিয়ে দিয়ে বলবেন, উনি এই দল করেন, ওই দল করেন! কিন্তু কেন? একজন আমাকে দিয়ে প্রোগ্রামে বেশি করিয়েছে, এজন্য আমাকে প্রোগ্রাম দেওয়া হবেন না, এটা কী করে হয়। প্রোগ্রাম না দিলেও আমি সরকারের উন্নয়নের কথা বলছি। এবং বলে যাব। তবে আমার মনে হয় কেউ আমাকে রাজনৈতিক প্যাচে ফালাইয়া দিছে। আমি তো রাজনীতির মানুষ নই। দেশ ও মানুষের জন্য গাই গাই। একজন সঙ্গীত শিল্পী মাত্র। আমার সঙ্গে এমনটি হবে কেন।
আবদুল কুদ্দুস বয়াতি বলেন, আমার গানের কথায় স্বাধীনতা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, দেশ, জ্ঞানী-গুণীজন। স্বাধীনতার মাধ্যমে আমরা স্বাধীন একটা পথ পেয়েছি। আমি যখন তখন গান গাই, স্বাধীনতা ও বঙ্গবন্ধুর গান। ‘ভুলব না বঙ্গবন্ধু আমরা জনগণ, সবার হৃদয়ে রাখব দিয়া সিংহাসন,…’। কারণ তিনি বিশ্বনেতা। তার উছিলায় আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। তাকে আমাদের স্মরণ রাখতে হবে। তিনি বলেন, আমার লেখাপড়া নেই, আমাকে ব্যবহার করে অনেকে ফায়দা লুটেছেন। আমার আশা ছিল, মরার আগে আমি দেখে যাব, যে ছেলেমেয়েদের একদিন আমি গান গেয়ে উৎসাহী করে, উদ্বুদ্ধ করে স্কুলে নিয়ে গিয়েছিলাম, তারা আমাকে সহযোগিতায় এগিয়ে এসেছে, আমার লোকশিল্পীরা খেয়ে না খেয়ে আছে, তাদের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়াবে। আমি এক টাকা থেকে এসেছি। আমার লেখাপড়া নেই। হাতে-কলমে লেখাপড়া না থাকলেও আমার মাথায় লেখাপড়া আছে। আমার ব্রেন আছে। এই ব্রেন কাজে লাগিয়ে গান বানিয়ে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করি।
এক প্রশ্নের জবাবে এই লোকসঙ্গীত শিল্পী বলেন, মরার আগে আমি আমার কাজের স্বীকৃতি চাই। বেঁচে থাকতে যদি কাজের স্বীকৃতি না পাই তাহলে মরার পর দরকার নেই। এবং লোকশিল্পীদের জন্য ‘কুদ্দুস বয়াতি ফাউন্ডেশনটা’ও সম্পন্ন করে যেতে চাই। দেখে যেতে চাই আমার লোকশিল্পীদের মুখে হাসি ফুটেছে। তারা যেন বলতে পারে, এক টাকার কুদ্দুস, কুদ্দুস বয়াতির হওয়ার পরও আমাদের ভুলে যায়নি। আমাদের জন্য কিছু করে গেছে। তিনি বলেন, দেশের জন্য যদি কেউ উল্লেখযোগ্য কিছু থাকেন তাহলে তার প্রাপ্য সম্মানটা জীবিত থাকতেই দেওয়া উচিত। অত্যন্ত তিন বছরের মধ্যে সম্মাননা দিলে সে দেশ-বিদেশে বুক ফুলিয়ে চলবে। কথা বলবে যে, আমি সরকার থেকে পুরস্কার পেয়েছি। সরকার আমার কাজের মূল্যায়ন করেছে। তিনি আরও বলেন, আমরা যখন গান গাই হাজার হাজার দর্শক থাকে সামনে, হাতে তালি ও বাহবা দেয়। তবে যখন গান শেষ হয়ে যায় তখন আর তাকিয়ে দেখে না তারা এ শিল্পীরা কেমন আছেন। তিনি কি তার পরিবার নিয়ে ভালো আছেন। সন্তানদের লেখাপড়া করাতে পারছেন? খেয়ে থাকে নাকি না খেয়ে জীবন কাটায়। কেউ কি কোনো খোঁজ নেয়। নেয় না। তাদের কল্যাণেও কেউ কোনো উদ্যোগ কি নিয়েছেন? নেয়নি বলেও অভিযোগ করেন এই বাউলশিল্পী।