৭ মার্চের ভাষণ : বিশ্বের গণতন্ত্রকামী মানুষের আপন কথা
22, November, 2017, 3:46:50:PM
বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ পৃথিবীর সেরা ভাষণগুলোর একটি হিসেবে অনেক আগেই স্বীকৃতি পেয়েছিল। বিশ্ব প্রামাণ্য দলিল হিসেবে ইউনেস্কোর কাছে এমন স্বীকৃতি পাওয়া একটা উচ্চমাত্রার অর্জন। কারণ এই স্বীকৃতির মধ্য দিয়ে বাঙালির মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক ঘটনাটি চিরদিনের জন্য স্থায়ী সংরক্ষণের ব্যবস্থা হলো।
এই ভাষণ এখন আর কেবলমাত্র বাঙালি বা বাংলাদেশের সম্পদ নয়, এটা সারাবিশ্বের ঐতিহ্যের অংশ। এই ভাষণ আমাদের মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে, মুক্তিযুদ্ধের প্রারম্ভিক সময়ে জাতিকে উদ্বুদ্ধ করা, প্রেরণা দেওয়ার জন্য অপরিসীম ভূমিকা পালন করেছে এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানেও এই ভাষণটি প্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে। ৭ মার্চের ভাষণের মধ্যে এমন অনেক কিছুই রয়েছে যেগুলো সারাবিশ্বের নিপীড়িত, নির্যাতিত, অসহায় মানুষ যেখানে, যাদের ওপরে জুলুম-নির্যাতন অত্যাচার চলছে তাদের মুক্তির বিষয়টা এই ভাষণে ফুটে উঠেছে। এটা শাশ্বত মুক্তির সংগ্রাম অর্থ্যাৎ সকল দেশ, কাল, পাত্র ভেদে যেখানেই মানুষ মুক্তির জন্য সংগ্রাম করবে এই ভাষণ তাদের প্রেরণার উৎস হিসেবে কাজ করবে।
বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের আঠারো মিনিটের এই অলিখিত ভাষণটির মধ্যে এগারোশ পাঁচটি (১১০৫) শব্দ রয়েছে। তন্মধ্যে ‘স্বাধীনতা’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন একবার, আর ‘মুক্তি’ শব্দটি এসেছে চার বার। এখানে মুক্তি বলতে কেবলমাত্র ঔপনিবেশিক শাসন থেকে মুক্ত হওয়া নয়, মুক্তি বলতে শোষণ, বঞ্চনা, ধর্মান্ধতা, মৌলবাদ এসব কিছু থেকে মানুষের মুক্তির বিষয়টা তার বক্তব্যে তিনি উল্লেখ করেছেন। তার বক্তব্যে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো গণতন্ত্র।
গণতন্ত্র বলতে বোঝায় অধিকাংশ মানুষ যা বলবে সেটাই সত্য এবং সেটাই মূল বক্তব্য। গণতন্ত্রের স্বাধীন ব্যবস্থা কার্যকর করা হলো গণতন্ত্রের মূল কথা। বঙ্গবন্ধুর ভাষণে আমরা গণতন্ত্র বলতে যে জিনিসটি পাই সেটা হলো একজন লোকও যদি ন্যায্য কথা বলে, সংখ্যায় যতই হই না কেন তা মেনে নেওয়া। এটাই গণতন্ত্র। গণতন্ত্র বলতে আমরা বেশিরভাগ লোক যে কথা বলি তা গণতন্ত্র, অন্যরা যা বলে তা বাদ! এটা আসলে গণতন্ত্র নয়। যে গণতন্ত্রের কথা বঙ্গবন্ধু বলেছেন তা সারা পৃথিবীর গণতন্ত্রকামী, যারা গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন করে তাদের জন্য অনেক বড় একটা প্রেরণা।
পরিচিতি : উপাচার্য, জগন্নাথ বিশ্বদ্যিালয় মতামত গ্রহণ : সাগর গনি সম্পাদনা : আশিক রহমান