রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের পথ দীর্ঘ করতেই সমঝোতার ফাঁদ পেতেছে মিয়ানমার : রুহিন হোসেন প্রিন্স
28, November, 2017, 3:28:45:PM
রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের পথ দীর্ঘ করতেই সমঝোতার ফাঁদ পেতেছে মিয়ানমার। মিয়ানমার দ্বি-পাক্ষীয়ভাবে সমঝোতা করে রোহিঙ্গা সমস্যা দুই দেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার কৌশল নিয়েছে। আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীকে রোহিঙ্গা ইস্যু থেকে দূরে রাখতেই মিয়ানমার সেনা শ্বাসিত সরকার সমাধানের কথা বলে খুব চালাকির সঙ্গে বাংলাদেশর সঙ্গে সমঝোতা স্মারকে সই করেছে। বাংলাদেশের সঙ্গে মিয়ানমারের যে চুক্তি হয়েছে, সেই চুক্তিতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মিয়ানমারের স্বার্থ রক্ষা হয়েছে। একই সঙ্গে এই চুক্তি বাস্তবায়ন করতে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হবে বাংলাদেশকেÑ আমাদের অর্থনীতির সঙ্গে আলাপকালে এমন মন্তব্য করেন সিপিবির সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স।
তিনি বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপট বিবেচনায় দ্বি-পাক্ষীয় চুক্তির ফাঁদে পা দিলে ভুল করবে বাংলাদেশ। কেননা মিয়ানমারের দিকে লক্ষ্য করলে বোঝা যায় তারা রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে চায় না। মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের স্বীকার করে না, বাঙালি হিসাবে অভিহিত করে। তারা পরিষ্কারভাবে বলে দিয়েছে, ২০১৬ সালের আগে আসা রোহিঙ্গাদের তারা ফিরিয়ে নেবে না। তাছাড়া যাদেরকে তারা ফিরিয়ে নেবে তাদের সবাইকে মিয়ানমারের নাগরিকত্বের পরিচয়পত্র দেখাতে হবে। তার সঙ্গে নানা ধরনের যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে তারা রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে চায়।
যে সব রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে তাদের সকলের নাগরিকত্ব অনেক আগেই মিয়ানমার সরকার কেড়ে নিয়েছে। মিয়ানমারে তাদের কোনো নাগরিকত্ব নেই। তাহলে যে সব নাগরিকের নাগরিকত্বই নেই, তাদের কীভাবে নাগরিক পরিচয়পত্র দেখাবে। এটা অসম্ভব এবং অবাস্তব। মিয়ানমারের এ ধরনের অবাস্তব প্রস্তাবই প্রমাণ করে তারা রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে চায় না। আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি ঘোরাতেই কৌশল করে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করেছে। যে চুক্তি বাস্তবায়ন হতে গেলেও কত বছর সময় লাগবে তার কোনো কূল-কিনারা দেখা যাচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশকে পরিস্থিতি বিবেচনা করে, মিয়ানমারের পাতা ফাঁদে পা না দিয়ে আরও বেশি কৌশলী হতে হবে। রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের জন্য আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীকে সম্পৃক্ত করতে হবে। বিশেষ করে জাতিসংঘকে সম্পৃক্ত করে কফি আনান কমিশনের সুপারিসসমূহ বাস্তবায়নে জোর দিতে হবে। একই সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধু রাষ্ট্র ভারত, চীন, রাশিয়ার মতো শক্তিধর দেশের সহযোগিতা নিতে হবে।