আকবর হোসেন পাঠান (ফারুক) : ১৯৭১ সালে যে ঘটনাটি ঘটেছে বলছেন, ৭১ সালের পর ৭২ সালে এ ঘটনার ইতিহাস তুলে ধরা হয়। শিল্পী, ভিসিসহ আরো অনেক রকম লোক আছে। মোট ৫৫ জন মানুষ যারা নাকি সই করেছেন একটি কাগজে, যেখানে লেখা আছে যে আমরা কেউ পাকিস্তানের বিপক্ষে যাবো না। আমরা কেউ স্বাধীনতার পক্ষে থাকবো না। এটা নিয়ে এরশাদ সাহেবের আমলে এই কাগজ আবার বের হয়েছিল। এটা কিভাবে বের করলেন এটা জানার অধিকার প্রতিটা মানুষের আছে। নেতৃদ্বয় আরামসে বলে দিয়েছেন, ‘আবার তোরা মানুষ হ’ একটি নেগেটিভ ছবি। নাম্বার ওয়ান। নাম্বার টু ‘তুই রাজাকার’ এই যে শব্দটা তিনি ব্যবহার করেছেন, এটা করার অধিকার তিনি রাখেন না। ৪৭ বছর পরে এই কথাটি যিনি বলছেন, তার বয়স কত? ১৯৭৩ সালে ‘আবার তোরা মানুষ হ’ ছবিটি রিলিজ পায়। ওই সময় বাংলাদেশের যে সরকার ছিল স্বাধীনতার পক্ষের সরকার। ৭১ সালে আমরা যুদ্ধে জয়ী হই, আমাদের দেশ স্বাধীন হয়। তখন আমাদের দেশের সরকার আওয়ামী লীগের। আমাদের সরকার প্রধান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু। তার আমলের কথা। তখন ১১টি সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার ছিলেন। আরো অনেক উচ্চ পদে মুক্তিযোদ্ধারা ছিলেন। তারা সবাই কথাটি শুনেছিলেন যে, চলচ্চিত্রটি নেগেটিভ। কথাটি উঠার পরে আওয়ামী লীগের মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার নেতৃত্বে একটি টিম দেওয়া হলো ছবিটি দেখে সেন্সরে পাঠাতে। সেন্সরে পাঠানো হলো। সেন্সর বোর্ড এটা দেখে এর বিচার করবে। সেন্সর বোর্ড ছবিটি দেখে পুরো স্যাটিসফাইড। খান আতার পেছনে লাগার কারণ কী? উনি বেশি গুণী ছিলেন বলেই কি আমরা হিংসা করতাম কিনা কে জানে? যে কারণে আমি বলেছি স্বাধীনতার বিপক্ষে কথা বলছেন। কারণ, তখন স্বাধীনতার পক্ষের সরকার ছিল। স্বাধীনতার পক্ষের সেন্সর ছিল। সেন্সর বোর্ড ছবিটাকে রিলিজ দিয়েছে। আপনি সেন্সর বোর্ড মানছেন না। সেন্সর বোর্ডকে প্রশ্ন করতে পারতো; নেগেটিভ ছবিকে কেন সেন্সর দিয়েছেন? বঙ্গবন্ধুর আমলের সেন্সর বোর্ড। সেজন্যই আমি বলেছি যে, আপনি স্বাধীনতার বিপক্ষে কথা বলছেন। কারণ, স্বাধীনতার পক্ষে যারা ছিলেন তারা রায় দিয়েছেন যে, ছবিটি নেগেটিভ নয়। হুট করে এত ক্ষমতাবান হয়ে গেলেন একজন গুণী লোককে রাজাকার বলে ফেললেন। রাজাকারের ডেফিনেশনটা কি? এটা তো আমাদের সবার জানার দরকার। রাজাকার, আল-বদর, আল-শামস এদের বাহিনী থাকে। আর্মিতে যেমন আছে লে. জেনারেল, মেজর জেনারেল, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল, কর্নেল, লে. কর্নেল, মেজর, ক্যাপ্টেন প্রভৃতি । তেমনি রাজাকারদেরও পোস্ট থাকে। রাজাকারদের কাজ ছিল দেশকে ধ্বংস করে দেওয়া। দেশের গুণী মানুষদের মেরে ফেলা; মা-বোনদের সম্ভ্রম কেড়ে নেওয়া। পাকিস্তানিদেরকে বাড়ি চিনিয়ে দেওয়া। রাজাকাররা নিযুক্ত থাকতেন এই সব করার জন্য। নিরীহ মানুষদের হত্যা করা, তাদের ঘর বাড়ি লুটপাট করা তাদের প্রধান কাজ ছিল। মুক্তিযোদ্ধাদের ধরিয়ে দেয়া, তাদের হত্যা করা রাজাকারের কাজ। পাকিস্তানিদের দেশের ইনফরমেশন দেয়া। আমার কথা হলো, খান আতা যদি রাজাকার হয়ে থাকেন কোন অঞ্চলে কোন রাজাকার নেতার আন্ডারে তিনি কাজ করেছেন? কি কি ক্ষতি করেছেন? সেটা বলেন। ক্ষতি যদি না করে থাকেন তাকে রাজাকার বলবেন কোন অধিকারে? প্রমাণ যদি করতে না পারেন তাহলে কি শাস্তি হওয়া উচিত? বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে যায় খান আতাউর রহমানের বিরুদ্ধে বলা নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চুর এই কথাটি। আমি নায়ক ফারুক প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আর্কষণ করছি। এর সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করছি।