বাংলাদেশের শক্তিমান আধুনিক কবি শহীদ কাদরী। বাংলা কবিতায় তিনি নিজম্ব এক ঘরানা সৃষ্টি করেছেন। আজ এই কবির প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী। আমেরিকা প্রবাসী এই কবি ২০১৬ সালের ২৮ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। ‘তোমাকে অভিবাদন প্রিয়তমা’ খ্যাত এই কবির প্রতি রইলো শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।
শহীদ কাদরী ১৯৪২ সালের ১৪ অগস্ট কলকাতার পার্কসার্কাসে জন্মগ্রহণ করেন। ১০ বছর বয়সে পরিবারের সঙ্গে ঢাকায় চলে আসেন তিনি। মাত্র ১১ বছর বয়স থেকে তিনি কবিতা লেখা শুরু করেন। তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘উত্তরাধিকার’প্রকাশিত হয় ১৯৬৭ সালে। তখন তার বয়স ছিল ২৫ বছর। স্বাধীনতার পর ১৯৭৮ সাল থেকে তিনি প্রবাসী জীবন বেছে নেন। প্রথমে জার্মানির বার্লিন, পরে লন্ডন হয়ে নিউইয়র্কে বসবাস শুরু করেন।
শহীদ কাদরী ১৯৪৭ সাল পরবর্তীকালে বাংলা সংস্কৃতির বিখ্যাত কবিদের একজনে পরিণত হন। তার কবিতার ভাষা, ভঙ্গি ও বক্তব্যের তীক্ষ্ণ রূপ তার কবিতাকে এনে দিয়েছে নতুন মাত্রা। নাগরিক জীবনের প্রাত্যহিক যন্ত্রণা ও ক্লান্তি ছিল তার কবিতার প্রধান বিষয়। তিনি নাগরিকজীবন সম্পর্কিত শব্দচয়ন করে নাগরিকতা ও আধুনিকতাবোধের সূচনা করেন। আধুনিক নাগরিক জীবনের প্রাত্যহিক যন্ত্রণা ও ক্লান্তির অভিজ্ঞতাকে কবিতার রূপ দেন তিনি। তার উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থগুলো হল- উত্তরাধিকার (১৯৬৭), তোমাকে অভিবাদন প্রিয়তমা (১৯৭৪), কোথাও কোনও ক্রন্দন নেই এবং আমার চুম্বনগুলো পৌঁছে দাও (২০০৯)।
শহীদ কাদরী কবিতার অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৭৩) ও একুশে পদক (২০১১) পেয়েছেন। শারীরিক অসুস্থতার কারণে একুশের পদক তিনি নিজে গ্রহণ করতে পারেননি। বন্ধু মফিদুল হক তার হয়ে পুরস্কার গ্রহণ করেছিলেন। তবে ওই বছরের ৬ মার্চ নিউইয়র্কে কবির হাতে সরকারের পক্ষ থেকে একুশে পদক তুলে দেয়া হয়। সেইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকেও কবিকে শুভেচ্ছা জানানো হয়েছিল।