দেশের খাদ্যশস্য ভান্ডার হিসাবে খ্যাত চলনবিল অধ্যূষিত তাড়াশ উপজেলায় ইরি-বোরো চাষাবাদের ভরা মৌসুমে ভূ-গর্ভস্থ্য পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। গভীর নলকুপ (শ্যালো ) গুলোতে সেচের আশানুরুপ পানি না পেয়ে ১০-১৫ ফুট গর্তে নলকূপ বসিয়ে পানি তোলার চেষ্টা করছেন কৃষকরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, তাড়াশ উপজেলার আটটি ইউনিয়নে ইউনিয়নে গভীর নলকূপের পানি সেচ এ সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে । ১০ ফুট থেকে ১৫ ফুট পর্যন্ত মাটি গর্ত করে সেচযন্ত্র বসিয়ে পানি তোলার প্রাণান্তর চেষ্টা করছেন কৃষক। আটটি ইউনিয়নের মধ্যে নওগাঁ, মাগুড়া বিনোদ ও সগুনা ইউনিয়নে এ সমস্যা সবচেয়ে বেশি আকার ধারণ করেছে। বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠেই নয়, এ তিনটি ইউনিয়নের বেশিরভাগ সেচ যন্ত্র ( শ্যালো ) দিয়ে সামান্য পানি উঠছে । অনেকেই বাড়ির আঙিনা থেকে ১৫-২০ ফুট নিচে গভীর নলকূপ বসিয়ে পানি তোলার চেষ্টা করছেন।
কৃষক মাগুড়া ও নওগাঁ ইউনিয়নের কৃষক আজগর আলী, রহিচ উদ্দিন, জমশের প্রামানিক, আতাহার হোসেন, চান মিঞাসহ অনেকে জানান, ১০০-১২০ ফুট গভীরে পাইপ বসিয়ে ঠিকঠাক মত পানি পাচ্ছেন না তারা। প্রতি বছরই আশঙ্কা জনকহারে ভূ-গর্ভস্থ্য পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে। ১৫-২০ বছর আগেও ৭০-৮০ ফুট মাটির নিচ থেকে এসব এলাকায় বেশ পানি পাওয়া যেত।
তারা আরো জানান, সেচযন্ত্রে পানি কম ওঠায় ইরি-বোরো চাষাবাদে তাদের জ্বালানি খরচ বেড়ে যাচ্ছে । প্রতি মৌসুমে ১ বিঘা জমিতে পূর্বে ১৫-১৬ লিটার জ্বালানি তেল খরচ হলেও বর্তমান সময়ে তা ২৪-২৮ লিটারে গড়িয়েছে। আগের তুলনায় সময়ও লাগছে বেশি। আর বসতবাড়িতে পানি সমস্যায় প্রতিবছরই তাদের নলকূপ আলাদা-আলাদা স্থানে স্থাপন করে পানি সংগ্রহ করতে হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. সাইফুল ইসলাম জানান, চলনবিলের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত ১৬টি নদী মৃত প্রায়। অসময়ে শুকিয়ে যাচ্ছে ডোবা-নালা ও খাল-বিল । ভূ-গর্ভস্থ্য পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় কৃষকের সেচ কাজে সমস্যাটি সাম্প্রতিক সময়ে বেশি পরিলক্ষিত হচ্ছে।