চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাটে রেশম আম আর লাক্ষার জন্য বিখ্যাত। এ তিন ফসলে উপজেলার অর্থনীতির চাকা ঘুরিয়ে দিয়ে ভাগ্য বদলে দিয়েছে এক সময়। কিন্তু সময়ের পরিবর্তনে লাক্ষা চাষ সম্পন্ন বিলুপ্তি হয়েছে।
দেশের বাইরে থেকে রেশম আমদানি হওয়া, প্রকৃতিক দুর্যোগে আক্রান্ত হয়ে রেশমের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় রেশম চাষীরা ক্ষতির মুখে পড়ে রেশম চাষ থেকে নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছেন অনেকই।
তারপরও উপজেলার বিভিন্ন এলাকার রেশম চাষীরা এখনও আঁকড়ে ধরে রেশম চাষের উপর নির্ভরশীল হয়ে আছেন। উপজেলায় মোট ১শত ৬৫জন বসনী।
রেশম বোর্ড ভোলাহাট জোন সূত্রে জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা রেশম সম্প্রসারণ কার্যালয় ভোলাহাটের নিয়ন্ত্রণে সম্প্রতি বন্যায় তুঁত জমি ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে তুঁতের জমি পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় চাষীরা চরম ভাবে ক্ষতির মুখে পড়েছেন। ফলে ১৪ হাজার রেশম ডিম সকল বসনীদের মাঝে বিতরণ করা সম্ভব হয়নি। ৭ হাজার রেশম ডিম ৭০জন বসনীর মাঝে বিতরণ করা হয়েছে অগ্রহায়ণী।
এ বন্দে কোন প্রকার প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থাকা এবং নিয়মিত ভাবে রেশম চাষীদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে স্থানীয় রেশম বোর্ডে জেলা রেশম সম্প্রসারণ সহকারী পরিচালক কাজী মাসুদ রানা, হিসাব রক্ষক সাইফুল ইসলাম, ফার্ম ম্যানেজার দেলোয়ার হোসেন, রেশম প্রতিপাদক অলিউল হকসহ অন্যরা পরামর্শ প্রদান করে আসায় চলতি বন্দে বাম্পার রেশমের ফলন সম্ভব হয়েছে।
এ ব্যাপারে রেশম চাষী সামিরুদ্দিন, তোফাজ্জুল হোসেন, নবী উল ইসলাম নবী জানান, অগ্রহায়নী/১৪৪২ বন্দে রেশমের বাম্পার ফল হয়েছে। গত বছরের এ বন্দে প্রকাতিক দূযোর্গে পড়ে সর্বস্ব হয়ে পড়ে ছিলেন উপজেলার রেশম চাষীরা। এ বন্দে বন্যার কারণে তুঁত জমি পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় অনেক বসনী রেশম চাষ করতে পারেনি। তবে যে সকল বসনী রেশম চাষ করেছেন তারা সবাই বাম্পার ফলন পেয়েছেন। স্থানীয় রেশম বোর্ডের কর্মকর্তা কর্মচারীগণ প্রত্যেক বসনীর বাড়ীতে বাড়ীতে গিয়ে পরামর্শ দিয়েছেন। তাদের পরামর্শতে রেশমের বাম্পার উৎপাদন হয়েছে।
এ ব্যাপারে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা রেশম সম্প্রসারণের সহকারী পরিচালক কাজী মাসুদ রানা জানান, এ ধারা অব্যহত থাকলে আর কোন প্রকার প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হলে রেশমের হারানো ঐতিহ্য আবার ফিরে পাওয়া সম্ভব। সেই সাথে রেশম চাষীরা দ্রুত নিজেদের স্বাবলম্বী করে গড়ে তুলতে সক্ষম হবেন বলে জানান।