চাহিদা বাড়লেও দেশে দ্রুত কমছে শক্তিবর্ধক ছোলার আবাদ। ফল ছেদক পোকা ও বোট্রাইটিস গ্রে মোল্ড রোগের প্রকোপ এবং অন্যান্য ফসলের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পারায় ব্যাপকভাবে কমছে ছোলার আবাদ। উৎপাদন ৮০ হাজার মেট্রিক টন থেকে ৭ হাজার মেট্রিক টনে দাঁড়িয়েছে। দেশে অবস্থান হারিয়ে ষষ্ঠ স্থানে নেমে এসেছে। অথচ বারি’র গত জুন মাসের হিসেবে ডাল ফসলের এলাকা ও উৎপাদনের দিক থেকে ছোলা ছিল পঞ্চম। তখন দেশের প্রায় ৮ হাজার হেক্টর জমিতে প্রায় ৯ হাজার মেট্রিক টন ছোলা উৎপাদন হতো প্রায় ৯ হাজার মেট্রিক টন। বর্তমানে ৫ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে ছোলা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৬৮০০ মেট্রিক টন।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট বারি’র ডাল গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক ড. মোহাম্মদ হোসেন বলেন, জীবনকাল ৪ মাসের বেশি হওয়ায় নাজুক দশায় পড়েছে ছোলা। রবি মৌসুমে ছোলার জমির দখল নিচ্ছে অনান্য ফসল। পরিস্থিতি মোকাবেলায় চলতি বছর মার্চ মাসে তাপ খরা ও রোগ প্রতিরোধী বারি ছোলা ১০ অবমুক্ত হয়েছে। আগামী বছর মাঠ পর্যায়ে এই জাতের ছোলার আবাদ হলে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হবে। অপেক্ষাকৃত কম জীবন কালের এই জাতের ছোলা হেক্টরে ১৮০০ থেকে ২০০০ কেজি ফলন দেবে। এ যাবত বারি উদ্ভাবিত ছোলার ১০টি উন্নত জাতের মধ্যে বারি ছোলা-৫ ও বারি ছোলা-৯ উচ্চফলন ও রোগসহনশীল। এছাড়া বারি ছোলা-৮ একমাত্র কাবুলী জাত। ২০১১ সালে বারি ছোলা-৯ এবং ১৯৯৬ সালে বারি ছোলা ৫ অবমুক্ত হয়। ছোলার এ জাতগুলো একক ফসলের পাশাপাশি আন্তঃফসল হিসেবে চাষ করে লাভবান হওয়া যায়।
আবাদ ও উৎপাদনের বেহাল দশার কারণে এবছর অনেক বেশি পারিমাণে ছোলা আমদানি করতে হবে বলে কৃষিবিদদের ধারণা। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ (কোয়ারেন্টাইন) উইং সূত্রে জানা গেছে, বিগত বছরগুলোতে দেশে গড়ে প্রায় ২ লাখ মেট্রিক টন ছোলা ও ছোলার ডাল আমদানি করা হয়।