কৃষিমন্ত্রীর স্মৃতিময় কাউফল সম্প্রসারণের কোন সম্ভাবনা নেই বাংলাদেশে! কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বিভিন্ন সময়ের বক্তব্যে কাউফলের অস্তিত রক্ষা ও সম্প্রসারণের কথা বলেন। বাজারে এইফলের বেশ চাহিদাও রয়েছে। পাকা কাউফল কেজি প্রতি ৭০-৮০ টাকা দরে বিক্রি হয়। কিন্তু দেশের ফলবিদরা এই ফলের মধ্যে কোনো সম্ভাবনা দেখেন না। দেশের হর্টিকালচার উইং এই ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নেয়নি। কৃষিবিদরাও মাথা ঘামান না। কাউফল সম্পর্কে কৃষিমন্ত্রীর ইচ্ছার কথা জানতে চাইলে তাদের অনেকে বলেন, কাউ ফলের মধ্যে কিছু নেই।
বাংলাদেশের ঐতিহ্যের অংশ কাউ বা কাউফল। অপ্রচলিত টক স্বাদের ফল। এর অন্যান্য নাম হলো- কাউয়া, কাগলিচু, তাহগালা, ক্যাফল, কাউ-গোলা ইত্যাদি। মাঝারি আকৃতির চিরসবুজ এ গাছ কিছুটা কালো বর্ণের। নিচের দিকে ডালপালা কম থাকলেও উপরটা ঝুপড়িতে ঘেরা। ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসে গাছে ফুল এসে ফল পাকে জুন-জুলাই মাসে। ফল গোলাকার, অনেকটা টেবিল টেনিস আকৃতির কিন্তু খাঁজযুক্ত। লিচুর সমান বা সামান্য বড় হয়। কাঁচা অবস্থায় সবুজ এ ফল পাকলে হলুদ বা কমলা বর্ণ ধারণ করে।
ফলের ভিতরে চার-পাঁচটি দানা থাকে। ফল পাকার পর এই দানা চুষে খেতে হয়। বীজযুক্ত এসব দানা রসালো ও মুখরোচক। ফল হিসেবে সরাসরি খাওয়া ছাড়াও জ্যাম-জেলি করেও সংরক্ষণ করা যায়। পুষ্টিগুণে ভরা এ ফল সর্দিজ্বর ও ঠান্ডা প্রশমনে বিশেষ কার্যকর। এ ছাড়া এটি অরুচি দূর করে। এই গাছের কষ রং ও বার্নিশ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। কাউ খেলে দাঁতে হলদেটে কষ লেগে যায়।
বাংলাদেশ, ভারত, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ চীন, লাওস, কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম ইত্যাদি দেশে কাউ গাছ দেখা যায়। সারাদেশে অল্পবিস্তর কাউফলের দেখা মেলে। তবে সিলেট, মৌলভী বাজার, খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে কাউফলের দেখা মেলে বেশি। পিরোজপুর ও বাগেরহাট অঞ্চলেও এ ফল জন্মে। অনেক গৃহস্থ বাড়ির লোকজন শখ করেও দুই একটি গাছ লাগায়। উপকূলীয় অঞ্চলে নার্সারীতে কাউফলের চারা উৎপাদনও হয়। তবে এর বাণিজ্যিক আবাদ নেই।