এক ব্যক্তি আর এক দল এই নীতেতে বেপরোয়া হয়ে উঠছে আওয়ামী লীগ। ফলে রাষ্ট্রের মেশিনারিজ ভুয়া ভোটের সরকারের অনুকুলে এখন বিভৎস চেহারায় জনগণের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে। ‘এক ব্যক্তি, এক দল’ নীতির বেপরোয়া আস্ফালন জনগণকে আতঙ্কিত করে রেখেছে। জনগণকে পরাধীন করে এখন আওয়ামী লীগ উপনিবেশ কায়েম করেছে। দেশে এখন এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে যে, মানুষ নিজের ছায়া দেখলেই চমকে উঠে।
তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের (টিআই) প্রতিবেদন বিএনপির আমলে ঠিক ছিল। কিন্তু এখনকারটি মনগড়া। তথ্যমন্ত্রী তার তথ্যযন্ত্রের মাধ্যমে এমন তথ্য দেন, যাতে শুধু দেশবাসীই নয়, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও সবিস্ময়ে হতবাক হয়ে পড়ে। টিআইয়ের প্রতিবেদনে স্বীকার করে নিলে তো তথ্যমন্ত্রীর মন্ত্রিত্ব থাকে না। এ জন্য টিআইয়ের প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে তাকে অপতথ্য দিতে হচ্ছে।
প্রকৃতপক্ষে দুর্নীতির মাত্রা ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রিত বলে সব তথ্য প্রকাশিত হচ্ছে না। কেবল টিআই নয়, ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেগ্রিটি (জিএফআই) গত সোমবার অর্থ পাচারের প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেখানে দেখা গেছে, বাংলাদেশ থেকে এক বছরে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছিলেন যে, ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের মতোই উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিতে সাহায্য করে তিনি বড় ধরনের অপরাধ করার পরও তার ওই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে সাম্প্রতিক কালের সেরা রসিকতা করলেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও কতিপয় কমিশনার নিজেদের জীবন গড়ে তুলেছেন ভোটারবিহীনভাবে আওয়ামী লীগকে বিজয়ী করার জন্য। তারা মূলত আওয়ামী লীগের ইচ্ছায় নির্বাচনব্যবস্থা ধ্বংস করার প্রকল্প বাস্তবায়ন করছেন। মন্ত্রিসভা ও সংসদ বহাল রেখে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড আছে বলে তারা দাবি করেছেন। অথচ এটি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড দূরে থাক, বরং এটি খানাখন্দে ভরা মাঠ, সেই বিষয়টি দেখেও নির্বাচন কমিশন তা উপেক্ষা করেছে। তারা ন্যূনতম সুষ্ঠু একটি নির্বাচন ব্যবস্থা গড়ে উঠতে দিলেন না আওয়ামী সরকারের মোসাহেবী করতে গিয়ে। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বক্তব্যে এটি সুস্পষ্ট হলো- এই কমিশনের তদারকিতে উপজেলা নির্বাচনগুলোও ভুয়া ভোটের নির্বাচনেরই মহৌৎসবে পরিণত হবে।
দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রক্ত ঝরেছে ধানের শীষের প্রার্থী ও সমর্থকদের। সুতরাং নির্বাচন কমিশন নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক করতে চেয়েছে কিন্তু সুষ্ঠু করতে নয়। ভোট ডাকাতির সাক্ষ্যপ্রমাণ তারা নিজেরাই রেখে দিয়েছে। এসব মন্তব্য বিভিন্নজন বিভিন্ন তথ্যপ্রমাণ সহ প্রকাশ করলেও সরকারের এতে কিছু যায় আসে না। কিন্তু একটি স্বাধীন গণতান্ত্রিক দেশে এই একনায়ক তান্ত্রিক আস্ফালন দেশকে চুড়ান্ত ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাবে।
লেখক: মোঃ আওলাদ হোসেন রাকিব; উন্নয়নকর্মী এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। ই-মেইল: aowladyouth@gmail.com