টঙ্গীর তুরাগ তীরে মুসলিম জাহানের দ্বিতীয় সর্ববৃহৎ ধর্মীয় সমাবেশ বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব আগামী ১২ জানুয়ারি শুরু হবে। আর প্রথম ধাপের ৩ দিনব্যাপী বিশ্ব ইজতেমা ১৫ জানুয়ারি দুপুরে আখেরি মোনাজাতের মধ্যদিয়ে শেষ হবে। ৪ দিন বিরতির পর একই স্থানে দ্বিতীয় ধাপের ৩ দিনব্যাপী বিশ্ব ইজতেমা শুরু হবে আগামী ১৯ জানুয়ারি শুক্রবার। আর তা ২১ জানুয়ারি দুপুরে আখেরি মোনাজাতের মধ্যদিয়ে শেষ হবে। ওই দিন মুসলিম জাহানের সুখ, শান্তি, অগ্রগতি, কল্যাণ ও ভ্রাতৃত্ববোধ কামনা করে আখেরি মোনাজাতের মধ্যদিয়ে দু’পর্বের বিশ্ব ইজতেমা সমাপ্ত হবে। এদিকে, টঙ্গীর তুরাগ তীরে অনুষ্ঠিতব্য ৫২তম বিশ্ব ইজতেমা ভালভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে সরকার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রশাসন, গাজীপুর জেলা প্রশাসক ও গাসিক মেয়র একাধিকবার ইজতেমা আয়োজক কমিটির শীর্ষ কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করেছেন। টঙ্গীর তুরাগ তীরে বিশ^ ইজতেমার মাঠ প্রস্তুতির কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। শেষ মুহূর্তে মাঠ প্রস্তুতির সার্বিক কাজ বেশ জোরেশোরে চলছে। আজ বুধবার সকালে টঙ্গী বিশ্ব ইজতেমা মাঠ ঘুরে এসে আমাদের প্রতিনিধি জানান, ইজতেমা মাঠের সার্বিক উন্নয়ন কাজ বেশ জোরেশোরে শুরু হয়েছে। টঙ্গী, গাজীপুর, উত্তরা, সাভার, রাজধানী ও তার আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে বিশ্ব ইজতেমার সাথী, তরুণ শিক্ষার্থী, শিক্ষক, য্বুকসহ সর্বস্তরের শত শত মানুষ স্বেচছাশ্রমের ভিত্তিতে প্রতিদিন ইজতেমার মাঠে এসে কাজ করছেন। কাজ শেষে তারা অবার সন্ধ্যার দিকে বাড়ি ফিরছেন। মাঠের ভেতরে বাঁশের খুঁটি নির্মাণ, বিশাল চটের সামিয়ানা তৈরী, টয়লেট নিমাঁণ, ওজু, গোসলখানা তৈরী, বিদ্যুৎ লাইন স্থাপন, গ্যাস ও পানির লাইন সংস্কার ও মেরামত, বিদেশী অতিথিদের আবাসন তৈরী ও সেখানে যাবতীয় উন্নয়নমূলক কাজসহ সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে বিশ্ব ইজতেমা আয়োজক কমিটি পুরোদমে কাজ করে যাচ্ছেন। মাঠ প্রস্তুতির কাজ এখন অনেকটা এগিয়ে চলছে। বাকি কাজগুলো আগামী সপ্তাহের মধ্যে শেষ হতে পারে বলে জানিয়েছে ইজতেমা আয়োজন কমিটি। বিশ্ব ইজতেমার মুরুব্বি গিয়াস উদ্দিন জানান, এই বছর ২ ধাপে বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নেবে দেশের ৩২টি জেলার মুসল্লিরা। টঙ্গী বিশ্ব ইজতেমার অয়োজক কমিটি সূত্রে জানা যায়, ২০১১ সাল থেকে বিশ্ব ইজতেমা দুই ধাপে অনুষ্ঠিত হয়। ২০১৬ সাল থেকে মুসল্লিদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং জায়গা কম থাকায় ৬৪ জেলার মুসল্লিদের ৪ ভাগে ভাগ করা হয়েছে। প্রতি বছর ৩২ জেলার মুসল্লি ২ ধাপে বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নেন। অন্য ৩২ জেলার মুসল্লি আগামী বছর অংশ নেবেন। ২০১১ সালের আগে প্রতি বছর এক ধাপেই অনুষ্ঠিত হতো বিশ্ব ইজতেমা। জানা গেছে, ২০১৮ সালের বিশ্ব ইজতেমায় ঢাকা, শেরপুর, নারায়ণগঞ্জ, নীলফামারী, সিরাজগঞ্জ, নাটোর, গাইবান্ধা, লক্ষ্মীপুর, সিলেট, চট্টগ্রাম, নড়াইল, মাদারীপুর, ভোলা, মাগুরা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, পঞ্চগড়, ঝিনাইদহ, জামালপুর, ফরিদপুর, নেত্রকোনা, নরসিংদী, কুমিল্লা, কুড়িগ্রাম, রাজশাহী, ফেনী, ঠাকুরগাঁও, সুনামগঞ্জ, বগুড়া, খুলনা, চুয়াডাঙ্গা এবং পিরোজপুর জেলার মুসল্লিরা অংশগ্রহণ করবেন। ২ পর্বের ৬ দিনব্যাপী বিশ্ব ইজতেমায় দেশ-বিদেশের প্রায় ৩০ থেকে ৪০ লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসল্লি অংশগ্রহণ করবেন বলে জানা যায়।
|