বিয়ে হয়েছে বেশ কয়েক বছর হলো। কিন্তু এখনো ঘর আলো করে আসেনি কোনো নবজাতক। এটা নিয়ে বেশ দুঃখ আছে নিপা আক্তারের। আড়ালে-আবডালে তার দুর্ভাগ্য নিয়ে কথা হয় নিশ্চয়। কিন্তু সেই নিপাকেই আজ সবাই বলছে ভাগ্যবতী। কারণ ওয়ালটন ফ্রিজ কিনে লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার পেয়েছেন তিনি।
নিপা আক্তারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তার বাড়ি বগুড়ার আদমদিঘি উপজেলার তারাপুর গ্রামে। পেশায় গৃহিণী। স্বামী মো. সবুজ হোসেন রডমিস্ত্রির কাজ করেন। শ্বশুর-শাশুড়ি, দেবর-জা, তাদের ছেলে-মেয়ে, ননদদের নিয়ে বেশ বড় যৌথ পরিবার। তবে সবকিছুর মধ্যেও তার মাঝে হাহাকার। এখনো মাতৃত্বের স্বাদই যে পাননি নিপা।
তবে এই দুঃখ নিয়ে জীবন তো থেমে থাকে না। নিপাকে সামলাতে হয় এত বড় সংসার। বাড়িতে শ্বশুরের কেনা একটি ফ্রিজ আছে। তবে সেটা আয়তনে বেশ ছোট। বড় পরিবারের চাহিদা মেটানোর মতো যথেষ্ঠ নয় বলে আরেকটি ফ্রিজ কিনবেন বলে ঠিক করেন নিপা এবং তার স্বামী। আগেই সিদ্ধান্ত নিয়ে রাখেন ফ্রিজ কিনলে দেশীয় ব্র্যান্ড ওয়ালটনেরটাই কিনবেন। পরে টাকা জমিয়ে গত বৃহস্পতিবার স্বামী ও দেবরকে নিয়ে সান্তাহার ওয়ালটন প্লাজায় যান নিপা।
তিনি বলেন, ‘যেদিন ঠিক করি ফ্রিজ কিনবো, সেদিন এটাও ঠিক করে রাখি যে ওয়ালটনেরই ফ্রিজ কিনবো।’ এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘ওয়ালটনের ফ্রিজের দাম কম। কিন্তু জিনিস ভালো। আমাদের গ্রামে অনেকেই ওয়ালটনের টিভি-ফ্রিজ ব্যবহার করে। তারা সবাই ভালো বলে। ওয়ালটন ফ্রিজ নাকি কোনো সমস্যা দেয় না।’
নিপা জানান, ওয়ালটন প্লাজায় গিয়ে ১১ সিএফটির একটি ফ্রিজ পছন্দ করেন তারা। ২২ হাজার টাকা দিয়ে ফ্রিজটি কেনেন। প্লাজায় গিয়ে জানতে পারেন ওয়ালটনের ডিজিটাল ক্যাম্পেইন চলছে। পণ্য কিনে লাখ টাকা পর্যন্ত পাওয়ার সুযোগ আছে। তবে সেটাকে অতটা গুরুত্ব দেননি নিপা।
নিপা আক্তারের স্বামী মো. সবুজ হোসেন এবং ভাগ্নে নয়নকে নিয়ে ব্যান্ড পার্টি সহযোগে পিকআপে করে আনন্দ মিছিল
তিনি বলেন, ‘আমার ফ্রিজ দরকার ছিল। আগেই ঠিক করে রেখেছিলাম ওয়ালটন ফ্রিজ কিনবো। তাই ফ্রিজ কিনলে কি পাওয়া যাবে বা যাবে না, তা নিয়ে ভাবি নাই। ফ্রিজ কেনার পর আমার নাম এবং মোবাইল নাম্বার নিয়ে ওনারা কাগজপত্র রেডি করেন। ফ্রিজ ভ্যানে উঠিয়ে যখন কাগজের জন্য বসে আছি, তখন তারা বলেন আমি নাকি ফ্রিজ কিনে ১ লাখ টাকা পেয়েছি। আমার মোবাইলে নাকি মেসেজ এসেছে।’
নিপা জানান, অপ্রত্যাশিত এই খবরে অভিভূত হয়ে পড়েন তিনি। অনুভূতি জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘তখন আনন্দও লাগছে। আবার দুঃখও লাগছে।’ দুঃখ লেগেছে কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কখনো তো কোনো উপহার বা পুরস্কার পাই নাই। আর হঠাৎ ১ লাখ টাকা! আনন্দ লাগবে না। আর দুঃখ! আগে কত জনে কত কথা বলেছে। আর এখন সবাই বলছে আমি ভাগ্যবতী। তাই আনন্দও লাগছে। আবার দুঃখও লাগছে।’
নিপা জানান, ১ লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার দিয়ে তিনি আরো একটি ১৫ সিএফটির ১টি ফ্রিজ, ২টি ৩২ ইঞ্চির এলইডি টিভি, ১টি স্মার্টফোন, রাইস কুকার, গ্যাস স্টোভ ইত্যাদি পণ্য নিয়েছেন। একটি টিভি দিয়েছেন ননদের ছেলেকে। বড় ফ্রিজ, অন্য টিভি এবং বাকি পণ্যগুলো নিজেদের ব্যবহারের জন্য রেখেছেন। আর যে ফ্রিজটি কিনে লাখ টাকা পেয়েছিলেন, সেটা এক দেবরকে দিয়েছেন।
সান্তাহার ওয়ালটন প্লাজা ম্যানেজার আনোয়ারুল ইসলাম জানান, গত শনিবার ওয়ালটনের নওগাঁ জোনের এরিয়া মো. আবদুল্লাহ আল মামুন এবং স্থানীয় ব্যবসায়ী রাশেদুল ইসলাম রাজাসহ অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে নিপা আক্তার এবং তার স্বামীর হাতে লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার ও অন্যান্য পণ্য তুলে দেওয়া হয়। পরে নিপা আক্তারের স্বামী এবং ভাগ্নেকে নিয়ে ব্যান্ড পার্টি সহযোগে পিকআপে করে আনন্দ মিছিল করা হয়। এ সময় আদমদিঘি, রানীনগর ও নওগাঁ সদরের বিভিন্ন এলাকা ঘোরা হয়। যা এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলে।
উল্লেখ্য, ক্রেতাদের দোরগোড়ায় অনলাইনে দ্রুত ও সর্বোত্তম বিক্রয়োত্তর সেবা দিতে ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম চালু করেছে ওয়ালটন। এই কার্যক্রমে ক্রেতাদের অংশগ্রহণকে উদ্বুদ্ধ করতে প্রতিদিন দেওয়া হচ্ছে নিশ্চিত ক্যাশ ভাউচার। ওয়ালটন প্লাজা এবং পরিবেশক শোরুম থেকে ১০ হাজার টাকা বা তার বেশি মূল্যের পণ্য কিনে ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন করে সর্বনিম্ন ২০০ থেকে সর্বোচ্চ এক লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার পাচ্ছেন ক্রেতারা। ক্যাশ ভাউচার পাওয়ার এই সুযোগ থাকবে আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।