উপকূল অঞ্চলসহ চাঁদপুরের ভাটিতে এবার প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। চাঁদপুর মাছঘাটে দেখা মিলে ব্যাপক ইলিশের আমদানি। সড়ক ও নদী পথে ইলিশের বড় বড় চালান আসায় সরগরম রূপালী ইলিশের শহর খ্যাত চাঁদপুর মাছঘাট। ছোট-বড় সব আড়তই ভাটির আর লোকাল ইলিশে সয়লাব। পুরো ঘাট যেনো ইলিশের ভার সইতে পারছে না।
একদিকে ট্রাক, পিক আপ, অটোবাইক, সিএনজি স্কুটার অপরদিকে ফিলিং কোর্ট, ট্রলার ও নৌকা থেকে ঝুড়ি ঝুড়ি ইলিশ আড়তে উঠানো হচ্ছে। মাছের ক্রয়-বিক্রয়ে আকারভেদে আলাদা করা ককশীটের বা কাঠের পাত্রে সাজানো, বরফ দিয়ে প্রক্রিয়াজাতকরণ অতঃপর বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ, বেপারীর লেনদেন বুঝিয়ে দেয়া, লোকাল মানুষের ইলিশ কেনার চাপ সবকিছু মিলিয়ে চাঙ্গা চাঁদপুর মাছঘাট, চাঙ্গা চাঁদপুরের ইলিশ নির্ভর অর্থনীতি।
চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমবায় সমিতি লিঃ-এর সহ-সভাপতি আবদুল বারী জমদার মানিক জানান, শতাধিক ছোট-বড় আড়তদার, ৫-৭শ লেবার, দুই আড়াইশ’ মাছ চালানী ও ব্যবসায়ীসহ আরো আছে বরফ সংশ্লিষ্ট মহাজন, শ্রমিক, পাইকার মিলিয়ে এক থেকে দেড় হাজার মানুষের কর্মসংস্থান শুধু এই মাছঘাট ঘিরেই। প্রায় দুটি মাস চাঁদপুরের ইলিশনির্ভর অর্থনীতি খুবই ভালো যাচ্ছে। তিনি জানালেন প্রতিদিন গড়ে ৪ থেকে ৫ কোটি টাকা লেনদেন হচ্ছে। বেপারীদের যারা মাছ নিয়ে চাঁদপুর আসছেন তারা আড়তদারদের কাছ থেকে বিক্রয় মূল্য নগদ টাকা বা ব্যাংক টিটির মাধ্যমে বুঝে নিয়ে আবার এখানকার বাজার থেকেই জাল-সুতাসহ নিত্য প্রয়োজনীয় অনেক কিছুই কিনে নিচ্ছেন। ফলে ব্যবসা-বাণিজ্যেও নতুন গতি সঞ্চার হয়েছে।
আড়তের পরিচালক মমিন চোকদার জানান, গত কয়েকদিন চাঁদপুরের ইলিশের বাজার চাঙ্গা থাকায় আমাদের শহরের অন্যান্য ব্যবসাও ভালো যাচ্ছে। এ বছরই মাছ বেশি আসায় জেলে, আড়তদার, শ্রমিক-কর্মচারীর মুখে হাসি ফুটেছে। এদিকে একটি সূত্রে জানা যায়, চাঁদপুরের ব্যাংকগুলোতে অন্যান্য সময়ের চেয়ে লেনদেন বেড়েছে। অনেকে বিকাশেও টাকা লেনদেন করছে।
উল্লেখ্য, চাঁদপুর থেকে দেশের অনেক জেলাতে ইলিশ সরবরাহ করা হয়। পাশাপাশি শুটকি ইলিশ, লবণ ইলিশ ও ইলিশের ডিমের চালানও এখান থেকে যায়। হাজী আব্দুল মালেক খন্দকার, বাবুল হাজী, আবদুর রব চোকদার, শান্তি ফিসের আনোয়ার গাজী, শবেবরাত কোম্পানী, মেজবাহ মাল, হযরত আলী বেপারী, গফুর জমাদার, কালু ভঁইয়াসহ অন্যান্য সব আড়তদার এই মওসুমে ইলিশ ব্যবসায় বেশ সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছেন। আজ সোমবার বড় ইলিশ (১১০০-১৬০০ গ্রাম) পাইকারী প্রতি মণ বিক্রি হচ্ছে ৩২ থেকে ৩৪ হাজার টাকা । মাঝারি আকারের ইলিশ (৫৫০-৭৫০ গ্রাম) পাইকারী প্রতি মণ বিক্রি হয়েছে ২৩ থেকে ২৫ হাজার টাকা। আকারে একটু ছোট ইলিশের (৩৫০-৫০০ গ্রাম) মণ বিক্রি হয়েছে ১৪ থেকে ১৬ হাজার টাকা।