ঢাকা শহরের যানজট নিরসনে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের কাছে ১২ দফা সুপারিশ করেছে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)। রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনের রাস্তায় আয়োজিত এক মানববন্ধন থেকে এ তথ্য পাঠানো হয়।
মানববন্ধন থেকে বলা হয়, যানজট ঢাকা শহরের একটি বড় সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। যত দিন যাচ্ছে সমস্যাটি ততই প্রকট আকার ধারণ করছে। বিশ্বব্যাংকের গবেষণা অনুযায়ী, যানজটের কারণে ঢাকায় প্রতিদিন ৩২ লাখ কর্মঘণ্টা নষ্ট হয়। যার আর্থিক মূল্য প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা।
ঢাকা শহরের যানজট নিরসনে সুজনের পক্ষ থেকে তুলে ধরা সুপারিশগুলো হলো ১. সিটির বাইরের গাড়িগুলো নির্দিষ্ট টার্মিনালে অবস্থান করবে। কোনো অবস্থায় সিটির ভেতরে ঢুকতে পারবে না।
২. পণ্য পরিবহনের জন্য ট্রাক এবং কাভার্ডভ্যান কোনো অবস্থায় রাত ১০টার আগে সিটিতে ঢুকতে পারবে না।
৩. ফুটপাত বা রাস্তা দখল করে প্রাইভেটকার পার্কিং নিষিদ্ধ করতে হবে। সর্বত্র জায়গা ও সময়ের মূল্যানুসারে পার্কিং ফি নির্ধারণ করা এবং রাজউকের বিধি অনুসারে প্রতিটি মার্কেটের নিজস্ব পার্কিং ব্যবস্থা থাকতে হবে।
৪. যানজট সহনীয় মাত্রায় নামিয়ে আনার জন্য বিশেষ কিছু নম্বর ছাড়া সব প্রাইভেটকার চলাচলের ক্ষেত্রে জোড়-বিজোড় পদ্ধতি চালু করতে হবে।
৫. গণপরিবহন ব্যবস্থা জোরদার বা বৃদ্ধি করতে হবে। সমাজের উঁচুস্তরের মানুষকে গণপরিবহন ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করতে এ ব্যবস্থাটিকে উন্নত করতে হবে।
৬. প্রাইভেটকার নিয়ন্ত্রণে লাইসেন্স সীমিতকরণ, আমদানির ক্ষেত্রে কর বৃদ্ধি ও কঠোরতা অবলম্বন করতে হবে।
৭. আলোচনা সাপেক্ষে সায়েদাবাদ, মহাখালী বাস টার্মিনাল স্থানান্তর করতে হবে।
৮. কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে সচিবালয়সহ অন্যান্য অফিস-আদালত বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে। আর নতুন করে যেন ঢাকায় কালকারখানা না হয়, সে ব্যবস্থা নিতে হবে।
৯. উল্টো পথে গাড়ি চলাচল কঠোর হাতে দমন করতে হবে।
১০. ঢাকা মহানগরীতে বর্তমান যে রেল যাতায়াত ব্যবস্থা রয়েছে, তার উন্নয়ন করতে হবে। বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জ, জয়দেবপুর, গাজীপুর, নরসিংদীসহ নিকটবর্তী ঘনবসতি শহরগুলোর সঙ্গে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি করতে হবে।
১১. দখল করা সব খাল দখলমুক্ত করতে হবে। ঢাকার চারপাশের নদী ও অভ্যন্তরীণ খালগুলো সংস্কার করে সমন্বিতভাবে নৌ-পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন করতে হবে।
১২. স্কুল-কলেজগুলোতে ভালোমানের বাস সার্ভিস চালু করতে হবে। যাতে স্কুলগামী শিক্ষার্থীরা একজনের জন্য একটি প্রাইভেটকার নীতি থেকে সরে আসতে পারে। সেক্ষেত্রে সিএনজির মূল্য ক্যাটাগরিভিত্তিক বৃদ্ধি করতে হবে।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন সুজনের ঢাকা মহানগর কমিটির সভাপতি এম এন ইসলাম তাপন চৌধুরী, জেলা কমিটির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মুসবাহ আলীম, মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক যোবায়েরুল হক নাহিদ, জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসনাত প্রমুখ।