দিন দিন কমে যাচ্ছে প্রকৃতির বৈচিত্র্য। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে প্রকৃতিতে বিরূপ প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। তবুও ঋতু বৈচিত্রের এই দেশে ফুল-পাখিতে প্রকৃতির সৌন্দর্য ফুটিতে তোলে। ষড়ঋতুর দেশে ঋতু বৈচিত্র্য তেমন একটা দেখা যায় না। তবে নদ-নদীর পাশে অথবা সমতলের বিরানভূমিতে কাশফুল ফুটলেই বোঝা যায় শরৎ এসেছে।
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার ফায়ার স্টেশনের পাশে বিস্তৃর্ণ মাঠ জুড়ে রয়েছে কাশফুল। বছরের এই সময়টা কাশফুলের শুভ্রতায় ছেয়ে গেছে এই এলাকা। কাশফুলের উপরের সাদা মেঘ যেন অপরূপ সৌন্দর্য ছাড়িয়েছে ঐতিহ্যের পদ্মাপাড়ের গোয়ালন্দকে। গতকাল বিকেলে সরেজমিনে কাশফুলের বনে গিয়ে দেখা যায়, ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের গোয়ালন্দ ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের পাশে বিস্তৃর্ণ এলাকা জুড়ে কাশফুল ফুটেছে। বাতাসে ঢেউ তুলছে কাশফুল। কখনো দেখা যায় ঝকঝকে নীলাকাশে সাদা মেঘে ভেসে বেড়ানো। গোয়ালন্দের এই কাশফুলের শুভ্রতা ছড়িয়েছে জেলাজুড়ে। এদিকে কাশফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে সাধারণ মানুষ এখানে আসছেন। কাশফুলের সাথে ছবি তুলতে ব্যস্ত সময় কাটাতে দেখা দেছে অনেকেরই।
গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা শাহিন শেখ বলেন, এ বছর শরতে আমাদের এখানে অনেক কাশফুল ফুটেছে। আগে কোনদিন এত কাশফুল দেখিনি। কাশফুল আর আকাশের মেঘ মিলিয়ে চমৎকার দৃশ্য। প্রকৃতির সৌন্দর্যের কোন তুলনা হয় না। এই কাশফুল প্রকৃতির বুকে ভিন্ন সৌন্দর্য এনে দিয়েছে।
রাজবাড়ী জেলা শহর থেকে তনুশ্রী দত্ত এসেছিলেন কাশফুল দেখতে। তিনি বলেন, গ্রামবাংলার প্রকৃতি পাল্টে যাচ্ছে। উজার হয়ে যচ্ছে গাছপালা। বর্তমানে ফুল, পাখির সংখ্যা কমে গেছে। এখন আর তেমন কাশফুলের বাগান চোখে পড়ে না। ঢাকা থেকে আসার সময় বাস থেকে কাশফুলের বাগান দেখেছিলাম। আজ পরিবারসহ এখানে আসছি। সত্যি অসাধারণ দৃশ্য। শরতের পূর্ণতা দিয়েছে গোয়ালন্দের এই কাশফুল।
কবি নেহাল আহম্মেদ কাশফুল সম্পর্কে বলেন, আপনার প্রশ্ন শুনে মনে পড়ে গেল সত্যজিৎ রায়ের পথের পাঁচালী ছবির কথা। কাশবনের ভেতর দিয়ে দৌড়ে বেড়াচ্ছে অপু আর দুর্গা। কাশবনের এই দৃশ্যটা নেওয়ার জন্য বছরখানেক সময় লেগেছিল সত্যজিৎ রায়ের। তুমুল বৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে গিয়েছিল কাশবনের সৌন্দর্য। তার পরের বছর আবার সেই একই জায়গায় কাশফুল ফোটার অপেক্ষায় থেকেছিলেন তিনি।