ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বোমার আঘাতে ডান পা হারিয়েছেন এক তরুণ। আরেকজন হারিয়েছেন বাম পা। জীবনে চলার পথে তারা পরস্পরকে খুঁজে পেয়েছেন। তারা বলছেন, একজন আরেকজনকে পেয়ে তাদের শরীর আবার পূর্ণ হয়েছে। দুজনেই এখন তাদের দুই পা ব্যবহার করে মোটরসাইকেল চালান। এক জোড়া জুতা কিনলে একজন নেন ডান পায়ের জুতা, আর অন্যজন বাম পায়ের। এবং এভাবেই তাদের মধ্যে গড়ে উঠেছে বিশেষ এক বন্ধুত্ব।
তাদের একজনের নাম মানসুর গুরুন। বয়স ২৪। আরেকজন তার চেয়ে এক বছরের বড়, ২৫ বছর বয়সী তরুণ আদলি হাসান আবিদ। ২০১১ সালের আগস্টে গাজায় ইসরায়েলি বোমা হামলায় পা হারান মানসুর। এর আট মাস পর একই ধরনের হামলায় পা হারান আদলি, ২০১২ সালের মার্চ মাসে।
মানসুর যেখানে পা হারান সেই জায়গাটি দেখিয়ে বলেন, ‘ঠিক এই জায়গাতেই বোমা হামলা চালানো হয়েছিল। এখানেই পড়েছিল রকেটটি। আমি তখন অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলাম। ১০ দিন পর আমার জ্ঞান ফিরে আসে। আমি গুরুতরভাবে আহত হই। এখনো আপনি ওই ধ্বংসলীলা দেখতে পাবেন। বোমা পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমি দূরে ছিটকে পড়ি।’
আদলি কীভাবে পা হারান সে সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেন, ‘আমি তো কিছুই জানি না। হঠাৎ করে হাসপাতালে জ্ঞান ফিরে এলে জানতে পারি আমার পা নেই। তখন একজনকে জিজ্ঞেস করলাম, আমার পা কোথায়? তিনি বললেন, আমার পা আমার আগেই বেহেশতে চলে গেছে।’
মানসুর ও আদলি এখন একসঙ্গে চলাফেরা করেন। তাদের মনে হয়, একে অপরকে পেয়ে তাদের শরীর পূর্ণ হয়েছে। মানসুর বলেন, ‘আমরা একসঙ্গে বাজার করতে যাই। জুতা কিনতে গেলে কখনো সে পছন্দ করে, কখনো আমি পছন্দ করি। পছন্দ নিয়ে আমাদের মধ্যে অনেক বাদানুবাদও হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমরা একজোড়া জুতার ব্যাপারে ঠিকই সিদ্ধান্ত নিতে পারি। খরচটা ভাগাভাগি করে নিই। তেমনি ভাগ করে নেই জুতা জোড়াও। ও বাম পায়ের জুতাটা নেয় আর আমি নেই ডান পায়ের জুতা।’ মানসুর ও আদলি জানান, পা না থাকার কারণে তারা চুপ করে ঘরে বসে থাকবেন না।