মধ্য শরতেও প্রকৃতি এ কেমন আচরণ করছে? কয়েক দিন ধরে ঝাঁজালো রোদ কাঁটার মতো খোঁচা দিচ্ছে। আবার সূর্যের আলো সরিয়ে হালকা মেঘে ঢেকে যায় আকাশ। কখনো ঝরে ছিটেফোঁটা বৃষ্টি। বৃষ্টি না থাকলে তো বাতাসহীন গুমোট ভাব। বৃষ্টি কমে যাওয়ায় ১৯ থেকে ২৪ সেপ্টেম্বর দেশের বিভিন্ন স্থানে তাপমাত্রা ৪ থেকে ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে যায়।
রোদ-বৃষ্টি যা-ই থাকুক না কেন, সব সময় ঘামে চটচটে হয়ে যায় পুরো শরীর। এ অবস্থার মাঝে আসছে দুর্গাপূজা আর মহররমের ছুটি। এর সঙ্গে এক দিনের সাপ্তাহিক ছুটিও যোগ হবে। এসব ছুটিকে উপলক্ষ করে অনেকে যাবেন বেড়াতে। অনেকে উৎসবে মেতে উঠবেন।
উৎসবমুখর মানুষের এই প্রস্তুতিতে কি বাধা হয়ে দাঁড়াবে প্রকৃতি? এমন প্রশ্নের উত্তরে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ রুহুল কুদ্দুস বলেন, ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে বৃষ্টির মাত্রা বৃদ্ধি পাবে। বৃষ্টির এই ধারা ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।
অস্বস্তিকর আবহাওয়ার কারণ জানতে চাইলে রুহুল কুদ্দুস বলেন, বাংলাদেশে এ সময়টা বৃষ্টি হয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে। এ মাসের মাঝামাঝি সময় দেশের ওপর এটি সক্রিয় ছিল। এখন কিছুটা কম। তাই কয়েক দিন ধরে বৃষ্টি কম হয়েছে। তা ছাড়া বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেশি আছে। এ জন্য শরীরে ঘাম হয়। বাতাসও এই ঘাম শুষে নিতে পারে না। তাই মানুষের মধ্যে একটা অস্বস্তি ভাব থাকে। মঙ্গলবারের পর থেকে মৌসুমি বায়ুর সক্রিয়তা বাড়তে পারে। এর প্রভাবে কয়েক দিন বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
আবহাওয়া বিশেষজ্ঞদের মতে, বছরের এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ৬০ শতাংশের কম থাকলে তাকে শুষ্ক আবহাওয়া বলা হয়। কয়েক দিন ধরে এর মাত্রা ৮৫ শতাংশের মধ্যে রয়েছে। আর্দ্রতা বেশি থাকলে বাতাসে এমনিতেই জলীয় বাষ্প বেশি থাকে। তাই মানুষের ঘামও টেনে নিতে বা শুকাতে পারছে না। আর শরীরে থাকলে তো অস্বস্তি থাকবেই।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আজ সোমবার সকালের পূর্বাভাস থেকে জানা গেছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে।
ভারতের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের কয়েকটি রাজ্যেও ভারী বৃষ্টি হতে পারে। ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে দুদিন আসাম, মেঘালয়, নাগাল্যান্ড, মণিপুর, মিজোরাম, ত্রিপুরা ও ওডিশায় ভারী বৃষ্টি হবে।
তবে বাংলাদেশে সেপ্টেম্বর মাসে এ পর্যন্ত স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে জানা গেছে, ২৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত গড়ে ২৬০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়ে থাকে। কিন্তু এ সময় ২৭৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এটি স্বাভাবিক বৃষ্টির চেয়ে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ বেশি।