দেশে ৪০ ভাগ মানুষ স্বাভাবিক স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছে। গুণগত সেবা থেকে বঞ্চিত ৫০ ভাগ মানুষ। বাকি ১০ ভাগ মানুষ চিকিৎসাবঞ্চিত। এ পরিপ্রেক্ষিতে চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতের জন্য সার্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা দরকার বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য অর্থনীতি বিশেষজ্ঞরা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশের মানুষ চিকিৎসাসেবা নিতে অতিরিক্ত অর্থ খরচ করতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে চিকিৎসার বাড়তি খরচ জোগাতে গিয়ে দেশের ৪ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে আসছে। এ সংকট কাটিয়ে উঠতে আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে সবার জন্য স্বাস্থ্য সুরক্ষা অর্জনের মাত্রা নির্ধারণ করেছে সককার।
আজ বিশ্ব সার্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা দিবস। এবারের প্রতিপাদ্য ‘সবার জন্য স্বাস্থ্য অধিকার’। দিবসটি উপলক্ষে রাজধানীর ঢাকায় বিভিন্ন সংগঠন আলোচনা সভা ও শোভাযাত্রার আয়োজন করেছে। এ বিষয়ে গতকাল সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হেলথ ইকোনমিকস ইনস্টিটউট মিলনায়তনে বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরাম ও ইউনিভার্সাল হেলথ কাভারেজের যৌথ আয়োজনে ‘সার্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা’ বিষয়ে আলোচনা সভা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হেলথ ইকোনমিকস ইনস্টিটউটের পরিচালক ড. সৈয়দ আবদুল হামিদ।
সভায় বক্তারা বলেন, স্বাস্থ্য খাতে চলতি বছর ২২ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। মাথাপিছু ৩৭ ডলার খরচ হয়েছে বলে সরকারিভাবে বলা হয়েছে। কিন্তু প্রত্যেকের প্রয়োজন ৬০ দশমিক ৫ ডলার। সর্বশেষ ২০১৫ সালের হিসাবমতে, মাথাপিছু ৮৫ থেকে ১১২ ডলার ব্যয় করেছেন। তাই বাধ্য হয়েই মানুষ ব্যক্তিগতভাবে সেবা নিচ্ছে। চিকিৎসার বাড়তি খরচ জোগাতে গিয়ে দেশের ৪ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে আসছে।
স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. সৈয়দ আবদুল হামিদ বলেন, প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা নিতে গিয়ে যেন মানুষ নিঃস্ব হওয়ার পথে। ঢাকার ৩৫-৪০ শতাংশ মানুষ সার্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা পাচ্ছে না। তাই পাঁচ বছর ধরে সার্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা শহর, নগর, বন্দর থেকে শুরু করে গ্রামগঞ্জে কাজ করে যাচ্ছে। শুরু থেকেই প্রত্যন্ত অঞ্চলে সবার মাঝে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে কাজ করছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সাবেক মহাপরিচালক (স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিট) মো. আসাদুল ইসলাম বলেন, ইউনিভার্সাল হেলথ কাভারেজ প্রাথমিক পর্যায়ে থাকলেও তারা এটি নিয়ে কাজ করছে। এর আওতায় পাঁচ বছরে ৪০ ভাগ মানুষকে সার্বজনীন সেবা দেওয়া সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন, সরকারের বাজেট বাড়লেও সেবার মানসহ সুযোগ বাড়েনি। এ ছাড়া ব্যক্তিগত চিকিৎসা ব্যয় কমানোর জন্য গবেষণা চালু, পলিসি তৈরি, সময় নির্ধারণ দরকার বলে দাবি করেন।
এ সময় সভায় আরো উপস্থিত থেকে বক্তব্য দিয়েছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের ইনচার্জ ও পরিচালক মো. নুরুজ্জমান, হেলথ ইকোনমিকস ইউনিটির সাবেক পরিচালক আসাদুল ইসলাম, ইউএসএইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. মুরসালীনা, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের পরিচালক মো. নুরুজ্জমান। ডা. শামসুদ্দীন আহমেদ, ডা. সবুর প্রমুখ।