বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলায় মাইকিং করে বিক্রি হচ্ছে আলু। ২০০ থেকে ২৮০ টাকায় ৮৪ কেজির এক বস্তা আলুর সঙ্গে বস্তাটাও পাওয়া যাচ্ছে বলে বেশির ভাগ মানুষ গোখাদ্য ও মাছের খাদ্য হিসেবেই কিনছেন এই আলু।
মাইকিং করে বিক্রি করা আলু ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হিমাগারে রাখা আলু এখন আর কেউ কিনতে চাইছে না। তাই তাঁরা মাইকিং করে ক্রেতাদের সস্তায় আলু কেনার জন্য ডাকছেন। এতে অনেকেই নিজের খাওয়ার জন্য না হলেও বাড়ির গরু এবং মাছের খাদ্য হিসেবে কম দামে আলু কিনছেন।
গতকাল শুক্রবার উপজেলার অভিরামপুর গ্রামে দেখা গিয়ে দেখা যায়, আলু বিক্রির জন্য মাইকে প্রচারণা চালাচ্ছেন আজিজার রহমান (৩৮)। তিনি বলেন, ‘আমি ২২০ টাকা দরে গ্র্যানুলা জাতের আলু কিনে তা এভাবে ফেরি করে বিক্রির কৌশল নিয়েছি। এতে করে আমার সব খরচ মিটিয়ে দিন শেষে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা লাভ থাকছে। এই আলুর বেশির ভাগ ক্রেতা গরু বা মাছকে খাওয়ানোর জন্যই কিনছেন।’
উপজেলার লক্ষ্মীকোলা গ্রামের আলু ব্যবসায়ী লুৎফর রহমান (৪৫) বলেন, এমনিতেই এবার আলু সংরক্ষণ করে লোকসান গুনতে হচ্ছে। তার ওপর এখন বাজারে নতুন আলুর সরবরাহ থাকায় পুরোনো আলু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন বিক্রেতারা। আলুর বর্তমান বাজারমূল্য একেবারে কম হওয়ায় তা হিমাগার থেকে উত্তোলন করছেন না অনেক আলু ব্যবসায়ী। কিছু কিছু ব্যবসায়ী লোকসান দিয়ে ৮৪ কেজি আলুর বস্তা ২০০ থেকে ২৮০ টাকায় বিক্রি করছেন। এসব আলু কিনে কিছু লোক এভাবে মাইকিং করে বিক্রি করছেন।
আলু কিনতে আসা কাশিপুর গ্রামের মোতালেব হোসেন (৩৮) বলেন, ‘মাইকিং শুনে আসলাম। দাম কম হওয়ায় একটু বেশি পরিমাণে কিনব বলে ভাবছি। বাড়িতে তিনটি গরু আছে। আলুগুলো সেদ্ধ করে গরুকে খাওয়াব।’
কুড়াহার গ্রামের মাছচাষি আনোয়ারুল ইসলাম (৫০) বলেন, ‘২৪০ টাকা বস্তা দরে আমি চার বস্তা আলু কিনেছি। এ আলু সিদ্ধ করে মাছের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করছি।’
আটমূল গ্রামের চাষি আবু জাফর (৪৫) জানান, বাজারে গোখাদ্যের অগ্নিমূল্য। এ অবস্থায় গরুকে আলু খাওয়াচ্ছেন। এতে গরুপ্রতি প্রতিদিন যে খরচ হতো, তার অর্ধেক সাশ্রয় হচ্ছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মোহম্মদ হাদিউজ্জামান বলেন, ‘গরুকে আলু খাওয়ানোতে কোনো সমস্যা নেই। তবে আলু নির্দিষ্ট পরিমাণে খাওয়াতে হবে।’