Online Desk(DTV BAGLA NEWS): পবিত্র শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতকে শবেবরাত বলা হয়। সে হিসেবে মঙ্গলবার (৭ মার্চ) পবিত্র শবেবরাত। আল্লাহর নৈকট্যলাভ ও পাপ থেকে মুক্তির আশায় সারারাত ইবাদত বন্দেগিতে ব্যস্ত থাকবেন মুসল্লিরা। তবে শুধু এই একটা রাত ইবাদত করে সব ভাগ্য পেয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন ইসলামি চিন্তাবিদরা। ইসলামি বিশ্লেষকরা বলছেন, শাবান মাসের মধ্য রাতে আল্লাহ তায়ালা রাতের প্রথম থেকেই বান্দাদের প্রতি তার রহমতের দৃষ্টি দেন। মহিমান্বিত এই রাতে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা পরম করুণাময় মহান আল্লাহর অনুগ্রহ লাভের আশায় নফল নামাজ পড়েন, কোরআন তিলাওয়াত করেন এবং জিকিরে মগ্ন থাকেন। অতীতের পাপ–অন্যায়ের জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা এবং ভবিষ্যৎ জীবনের কল্যাণ কামনা করেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। তবে শিরক আর হিংসুক মানুষকে আল্লাহ ক্ষমা করেন না বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের পেশ ইমাম মাওলানা মহিউদ্দিন কাসেম সময় সংবাদকে বলেন, ‘এই রাতে আল্লাহ তায়ালা তার বান্দাদের দিকে মনোযোগী হন। আর মনোযোগী হয়ে বান্দাদের বিভিন্ন ভাষায় ডাকেন। কোনো ক্ষমাপ্রত্যাশী ব্যক্তি আছে কি, তাকে আমি ক্ষমা করে দেব। কোনো অনুগ্রহ কামনাকারী ব্যক্তি আছে কি, তাকে আমি অনুগ্রহ করব। কোনো রিযিকের প্রত্যাশী ব্যক্তি আছে কি, তাকে আমি রিযিক দেব, কোনো অসুস্থ ও বিপদগ্রস্ত ব্যক্তি আছে কি, তাকে সুস্থতা দেব, মুক্ত করে দেব ইত্যাদি ইত্যাদি। তাই আমাদের উচিত এই রাতে নিজের জন্য, পরিবারের জন্য প্রার্থনা করা।’ ঢাকার সোবহানবাগ মসজিদের খতিব মাওলানা শাহ ওয়ালী উল্লাহ বলেন, ‘মধ্য শাবানের রজনীটা বরকতময় রজনী। তবে আমাদের দেশে এই রজনীকে নাম দেয়া হয় ভাগ্যরজনী। কিন্তু এটা উচিত নয়। কোরআন এবং সুন্নাহে লাইলাতুন নিসফি মিন শাবানকে ভাগ্যরজনী বলাটা প্রমাণ হয় না। বরং ভাগ্যরজনী হলো রমজানের শেষ দশকের বিজোড় যেকোনো একটা রাত। মধ্য শাবানের রজনীটা হলো একটা বোনাস। কারণ বোনাস সেই ব্যক্তি পায়, যার চাকরি চলমান। মধ্য শাবানের রজনীর মর্যাদা, ফযিলত ওই ব্যক্তির জন্য, যিনি ধারাবাহিকভাবে সারা বছর ইবাদত করে ওই রাতেও ইবাদত করেন। তবে হ্যাঁ, সৌভাগ্য তাদের জন্যও, যারা পেছনের দিনগুলোতে ঠিকমতো ইবাদত করেননি, কিন্তু ওই রাত থেকে তওবা করেন যে আর জীবনে অপরাধ করবেন না, নামাজ-রোজ ছেড়ে দেবেন না। এভাবে নতুন অধ্যায় শুরু করলে, তার জন্য সৌভাগ্য। ‘তবে যদি কেউ মনে করেন যে এই রাতটা কেবল ভাগ্যরজনীর, আর একটা রাত ইবাদত করে ভাগ্য সব পেয়ে যাব, তাহলে সেটা বোকার স্বর্গে বসবাস ছাড়া কিছুই নয়’- যোগ করেন মাওলানা শাহ ওয়ালী উল্লাহ। তিনি আরও জানান, দুই প্রকার মানুষ ছাড়া আল্লাহ সবাইকে ক্ষমা করে দেন। একটা হলো মুশরিক, যার জীবনে শিরক রয়েছে। অন্যটা হলো মুশাহিন, মানে হিংসুক। এদিকে মূলত শাবান মাস রমজানের প্রস্তুতির জানান দেয়। এ রাতকে কেন্দ্র কোরে আতশবাজি, আলোকসজ্জা আর উৎসব পালন করা শরিয়তসম্মত নয় বলে জনান ইসলামি চিন্তাবিদরা। এ প্রসঙ্গে মাওলানা মহিউদ্দিন কাসেম বলেন, ‘একশ্রেণির মানুষ শবেবরাতকে উৎসব মনে করে থাকেন। এটা কিন্তু একেবারে পরিত্যাজ্য। যতটুকু প্রমাণিত, এর চেয়ে বেশি ঘটা করে এই রাত উদ্যাপন করার কোনো সুযোগ নেই। মাওলানা শাহ ওয়ালী উল্লাহ বলেন, ‘শবেবরাতের নামে আতশবাজি, আলোক প্রজ্বলন আর উৎসব পালন শরিয়তের বিধান নেই। শাবান মাসসহ আররি প্রতি মাসের ১৩ ১৪ ও ১৫ তারিখ রোজা রাখা সুন্নত বলে জানান ইসলামি বিশ্লেষকরা।