একজন অমুসলিম নেতাকে একটি দল অভিনন্দন জানিয়েছিলো। অমুসলিমকে ঐ দলটির অভিনন্দন করার প্রতি সমর্থন করে একজন ভাই কিছু কথা বলেছিলো সেখানে এক স্থানে তিনি অমুসলিমকে ঘৃণা করার প্রতি ইঙ্গিত করে একটি প্রবচন উল্লেখ করেছিলেন। প্রবচনটি হলো ‘পাপকে ঘৃণা কর পাপীকে নয়’।
উক্তিটি কার তা নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না। তবে, সম্ভবত এটা বিকৃত বাইবেলে আছে। ইসলামে এরকম কথা নেই। আমার মতে কথাটা কিছু ক্ষেত্রে যৌক্তিক আর কিছু ক্ষেত্রে অযৌক্তিক। কারণ সব পাপীর মন একরকম নয়,কথাটার নৈতিক দিক বিশ্লেষণ করলে এর গভীরতম ভাবটা প্রকাশ পায়। পাপকে ঘৃণা করতে হবে, যাতে কেউ পাপ করতে উদ্যত বা উদ্বুদ্ধ না হয়। মানুষ যাতে পাপ বা অপরাধসমূহ কী সে সম্পর্কে শিা গ্রহণ করতে পারে, সে দায়িত্ব রাষ্ট্র ও পরিবারের। পাপকার্য সর্বদাই পরিত্যাজ্য বা বর্জনীয়- এ আদর্শ প্রচারই হলো এ নীতিকথাটির উদ্দেশ্য। কিন্তু বাস্তবতার নিরীখে ‘পাপীকে ঘৃণা না করা’ কোনো অর্থ বহন করে না। আইনগতভাবে পাপীকেই শাস্তি পেতে হয়, পাপ-এর কোনো সাজা নেই, বা এ কথার কোনো অর্থও নেই। কিন্তু ইসলাম বলে অন্য কথা। যারা বড় বড় পাপ করে তাদের ব্যাপারে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি ঐ প্রবচনটির সম্পূর্ণ বিপরীত।
ইবরাহীম ও তাঁর সাথীদের মধ্যে একটি উত্তম আদর্শ বর্তমান? তিনি তাঁর কওমকে স্পষ্ট ভাষায় বলে দিয়েছিলেন : আমরা তোমাদের প্রতি এবং আল্লাহকে ছেড়ে যেসব উপাস্যের উপাসনা তোমরা করে থাক তাদের প্রতি সম্পূর্ণরূপে অসন্তুষ্ট। আমরা তোমাদের অস্বীকার করেছি। আমাদের ও তোমাদের মধ্যে চিরদিনের জন্য শত্রুতা ও বিদ্বেষের সৃষ্টি হয়ে গিয়েছে- যতদিন তোমরা এক আল্লাহর প্রতি ঈমান না আনবে। তবে ইবরাহীমের তার বাপকে একথা বলা (এর অন্তরভুক্ত নয়) “আমি আপনার জন্য অবশ্যই মা প্রার্থনা করবো।
তবে আল্লাহর নিকট থেকে আপনার জন্য নিশ্চিত কোন কিছু অর্জন করে নেয়া আমার আয়ত্বাধীন নয়? তাফসীরের কিতাবে এর ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে এর অর্থ হলো, হযরত ইবরাহীম (আ.) তাঁর কাফের ও মুশরিক কওমের প্রতি যে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছিলেন এবং পরিষ্কার ভাষায় তাদের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করার যে ঘোষণা করেছিলেন তা তোমাদের জন্য অনুসরণীয় । কিন্তু তিনি তাঁর মুশরিক পিতার জন্য আল্লাহর কাছে মা প্রার্থনা করার যে ওয়াদা করেছিলেন এবং কার্যত তা করেছিলেন তার মধ্যে তোমাদের জন্য অনুসরণীয় কিছু নেই। কারণ কাফেরদের সাথে ভালবাসা ও সহানুভূতির সামান্যতম রাখাও ঈমানদারদের জন্য ঠিক নয়।