বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) পৃথিবীর সেরা মানুষ। মানবজাতির জন্য তিনি অনুপম আদর্শ। তাঁর ৬৩ বছরের জীবনে আমাদের জন্য রয়েছে চলার পাথেয়। বিশ্বের ইতিহাসে মহানবী (সা.) এর স্থান সবার ওপরে। তাঁর তাকওয়া, অনুপম ব্যক্তিত্ব ও চরিত্র মাধুর্য আমাদের সকলের জন্য অনুসরণযোগ্য। শিশু-কিশোররাও মহানবী (সা.) এর প্রোজ্বল আলোয় উদ্ভাসিত হয়েছিল।
মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘যারা ছোটদেরকে আদর করে না এবং বড়দের সম্মান করে না, তারা আমার আদর্শের অনুসারী নয়।’ তিনি শিশুদের খুব আদর করতেন। তাদের মুখে খাবার তুলে দিতেন। মাথায় হাত বুলাতেন। কোলে তুলে নিয়ে চুমু খেতেন। একদিন মহানবী (সা.) তার নাতি হাসান (রা.)কে আদর করে চুমু খাচ্ছিলেন। তা দেখে হযরত আকবা ইবনে হারিস নবীজীকে বললেন, ‘ওগো নবী (সা.) আপনি কী এমনিভাবে শিশুদের সাথে আনন্দ করেন? আমি তো আমার ছোট শিশু-সন্তানদের এতো আদর করি না। নবীজী তার জবাবে বললেন, ‘তোমার অন্তর থেকে আল্লাহ যদি মমতা তুলে নিয়ে থাকেন, তার জন্য তো আমি দায়ী নই।’ নবীজী আরো বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি শিশু-কিশোরদের প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শন করে না, সে আমার উম্মত নয়।’
রাসূল (সা.) কখনো শিশুদের ওপর রাগ করতেন না। চোখ রাঙাতেন না। কর্কশ ভাষায় তাদের সাথে কথা বলতেন না। তিনি ছোটদের আদর করে কাছে বসাতেন। তাদের সাথে মজার মজার কথা বলতেন। ছোটদের দেখলে আনন্দে নবীজীর বুক ভরে যেত। তিনি তাদেরকে বুকে জড়িয়ে ধরতেন। একদিন মহানবী (সা.) একদল শিশুর সঙ্গে আনন্দ করছিলেন । শিশুরাও নবীজীকে ঘিরে খুশিতে মেতে ওঠেছিল । এমন সময় সেখানে এক বেদুঈন এসে উপস্থিত হলো। সে মহানবী (সা.) কে উদ্দেশ্য করে বললো, ‘শিশুদের নিয়ে এমন আমোদ আহ্লাদ করা আমার পছন্দ নয়।’ এ কথা শুনে রাসূল (সা.) এর হাসি-খুশি মুখখানি মলিন হয়ে গেল! তিনি বললেন, ‘যে ব্যক্তির হৃদয়ে মায়া নেই, আল্লাহ যেন তাকে দয়া করেন।’ (মুসলিম) এ ধরণের বহু ঘটনা হাদীস শরীফে বর্ণিত রয়েছে। আল্লাহ্ পাক রব্বুল আলামিন আমাদের রাসূলে আরাবী সা. এর উত্তম আদর্শকে অনুসরণ করে জীবন পরিচালনা করার তৌফিক দান করুন। আমীন ।