রংপুরের অ্যাডভোকেট রথীশ চন্দ্র ভৌমিককে হত্যার নেপথ্যে রয়েছেন স্ত্রী দীপা ভৌমিক ও দীপার প্রেমিক কামরুল ইসলাম জাফরি। গত ছয়দিন নিখোঁজ থাকার পর কামরুল ইসলামের ভাইয়ের একটি নির্মাণাধীন ভবন থেকেই উদ্ধার করা হয়েছে রথীশ চন্দ্র ভৌমিক বাবু সোনার লাশ।
র্যাব জানিয়েছে, দীপা ভৌমিক ও সহকর্মী প্রেমিক কামরুল ইসলামের নেতৃত্বেই এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। লাশ সনাক্তের সময় ওই ভবনে নেয়া হয় দীপা ভৌমিককেও।
গতকাল মঙ্গলবার রাত একটায় রংপুর শহরের তাজহাট মোল্লাপাড়ার একটি নির্মাণাধীন ভবনে স্তুপ করে রাখা বালির নিচ থেকে রথীশ চন্দ্রের লাশ উদ্ধার করা হয়।
অ্যাডভোকেট রথীশ চন্দ্র ভৌমিকের স্ত্রীর দেয়া তথ্যমতে, একটি মৃতদেহের অবস্থান শনাক্ত করে র্যাব। স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য র্যাব কার্যালয়ে নেয়া হয়েছে।
রংপুরের বিশেষ আদালতের পিপি, আওয়ামী লীগ নেতা ও বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা রথীশ চন্দ্র ভৌমিক বাবু সোনা ছয়দিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন। তার নিখোঁজের ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিভাগীয় শহর রংপুরের সর্বত্র নানা আলোচনা চলছে। তার নিখোঁজ নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন- কেউ বলছে বাবু সোনা আত্মগোপন করেছেন। কারো কারো মতে তার প্রতিপক্ষ ডেকে নিয়ে গেছে। কারো ধারণা তাকে জেএমবি তুলে নিয়ে হত্যা করেছে। নানা মুখে নানা কথা।
এ দিকে পুলিশ র্যাবসহ আইন শৃংখলা বাহিনীর সকল ইউনিট সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তাকে উদ্ধারের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছিল। তাকে ফিরে পাওয়ার দাবিতে সোমবার ৫ম দিনের মতো নগরীর বিভিন্ন স্থানে একাধিক সংগঠন কর্মবিরতি, মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। পুলিশ ৫ জামায়াত শিবিরের নেতাকর্মীসহ নয়জনকে গ্রেফতার করেছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকাল চারটায় বাবু সোনার শহরের আলম নগর বাবু পাড়ার বাসার পেছনে রংপুর ডিবি পুলিশ ডোবার কাদা মাটি অপসারণ ও বাড়ির সেপটিক ট্যাংক খোঁড়াখুঁড়ি করে নিখোঁজ আইনজীবী সন্ধান চালিয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে নগরীর প্রেসক্লাবের সামনে বাবু সোনার নিখোঁজের প্রতিবাদে অনশন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটসহ অন্যান্য সংগঠন। সমাবেশ থেকে বক্তারা বাবু সোনার সন্ধানের বিষয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার সকাল থেকে আইনজীবী বাবু সোনা নিখোঁজ ছিলেন। তিনি জাপানি নাগরিক কুনিও হোশি ও মাজারের খাদেম হত্যা মামলার বিশেষ পিপি ছিলেন। বাবুসোনা জেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক ছাড়াও হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের রংপুর বিভাগের ট্রাস্টি, পূজা উদযাপন পরিষদ ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গেও তিনি জড়িত ছিলেন।