রংপুরে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-কে নিয়ে ফেসবুকে কটূক্তি ও অবমাননাকর ছবি পোস্ট করার অভিযোগে হিন্দুদের বাড়িঘরে আগুন ও ভাঙচুর এবং পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষের ঘটনায় ৩৬ জনকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। শুক্রবার বিকালে ওই ঘটনার পর থেকে গঙ্গাচড়া, কোতোয়ালি ও তারাগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে জড়িত সন্দেহে ৩৬ জনকে আটক করে পুলিশ। রাতভর অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয় বলে জানা গেছে।
এদিকে আজ শনিবার সকালে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনায় গঙ্গাচড়া থানায় ২৫-৩০ জনের নামোল্লেখ করে ও অজ্ঞাত ২ হাজার জনের নামে পৃথক দুটি মামলা করেছে পুলিশ। গঙ্গাচড়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিন্নাত আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অন্যদিকে ঘটনাস্থল সদর উপজেলার খলেয়া ইউনিয়নের ঠাকুরপাড়া গ্রামে হিন্দুদের বাড়িঘরে আগুন ও ভাঙচুরের ঘটনায় সেখানে বসবাসরত শতাধিক হিন্দু পরিবারের মাঝে এখনও আতঙ্ক বিরাজ করছে। ফের আগুন দেওয়া হতে পারে এমন আশঙ্কায় আছেন সেখানকার হিন্দু পরিবারের সদস্যরা। তবে অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয় এজন্য ওই এলাকায় শতাধিক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এদিকে, সদর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হিন্দু পরিবারগুলোরকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা জানানো হয়েছে। শনিবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান জানিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে তিন হাজার টাকা, শুকনা খাবার ও দুই বান্ডেল করে ঢেউ টিন দেওয়া হবে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত হিন্দু পরিবারগুলোর বাড়ি-ঘর নির্মাণে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।
এর আগে, শুক্রবার বিকালে হিন্দুদের বাড়ি-ঘরে আগুন ও পরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে রাবার বুলেট বিদ্ধ হয়ে একজন নিহত হন। সাত পুলিশসহ আহত হন ৩০ জন। বিক্ষোভকারীরা নয়টি হিন্দু বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে।
আগুনে ১৮টি ঘর পুড়ে ছাই হয়ে যায়। শটগান ও রাবার বুলেটবিদ্ধ ১১ বিক্ষোভকারী রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।