কলকাতা-সহ গোটা পশ্চিমবঙ্গে এখন ডেঙ্গু আতঙ্ক থাবা বসিয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় থাবা বসিয়েছে মশাবাহিত এই রোগ। ইতিমধ্যেই এই রোগে প্রাণ হারিয়েছেন বেশ কয়েকজন। আক্রান্ত বহু। আর তাই রীতিমতো আতঙ্কিত রাজ্যবাসী। খোঁজ চলছে কীভাবে প্রতিকার পাওয়া যায় এই রোগের হাত থেকে? এর মধ্যেই সামনে এসেছে পেঁপে পাতার রসের তত্ত্ব। যা কিনা বাড়াতে সাহায্য করবে রক্তের প্লেটলেটের পরিমাণ। এই প্রতিবেদনে জেনে নিন কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
ডেঙ্গুর জীবাণু ও প্লেটলেটের গঠন প্রায় একরকম। তাই ডেঙ্গু সেরে যাওয়ার সময় রোগীর শরীরে প্লেটলেট হুহু করে কমতে থাকে। আমাদের শরীরে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডি ডেঙ্গু জীবাণুকে মারতে গিয়ে প্লেটলেটকে মারে। তাই তৈরি হয় সমস্যা। চিকিৎসাবিজ্ঞানীদের একাংশের এমনই দাবি। প্লেটলেট বাড়াতে ডাক্তারদের একাংশই তাই পেঁপে পাতার রস প্রেসক্রাইব করছেন। একাংশের দাবি, অ্যালক্স ১২ নামে জিন রক্তে প্লেটলেটের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে। পেঁপে পাতার রস এই জিনকেই প্লেটলেট উৎপাদনে প্রভাবিত করে। শুধু আয়ুর্বেদ চিকিৎসকরা নন, অ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসকরাও পেঁপে পাতার রস থেকে তৈরি ক্যাপসুল প্রেসক্রাইব করছেন। যদিও ডাক্তারদের একাংশের মত, পেঁপে পাতার রসের কার্যকারিতা এখনও ‘ক্লিনিক্যালি’ প্রমাণিত হয়নি। তবে, কাজ যে হয় না তা নয়। তবে সমস্যা রয়েছে। অনেকে পেঁপে পাতা ঠিকমতো পরিষ্কার না করেই রস তৈরি করে খাচ্ছেন। পরিমাণেরও ঠিক নেই। রক্তে শর্করার পরিমাণ হঠাৎ করেই নেমে গিয়ে ‘হাইপোগ্লাসিমিয়া’ হচ্ছে। কখনও আবার ডায়েরিয়া। পেঁপে পাতার রস থেকে তৈরি ক্যাপসুল নিয়মমাফিক খেলে সমস্যার সম্ভাবনা কমে। এমনই পর্যবেক্ষণ মেডিসিন চিকিৎসক ডা. অরিন্দম বিশ্বাসের। তাঁর মতে, জিনের তত্ত্বটা যে ভুল তা এখনও প্রমাণিত হয়নি। তাই রোগীর পরিবার চাইলে পেঁপে পাতার রস থেকে তৈরি ক্যাপসুল অনেকেই দিচ্ছেন।
আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞ প্রদ্যেৎবিকাশ করমহাপাত্র জানাচ্ছেন, গবেষণায় প্রমাণিত, পেঁপের বীজে ‘লার্ভিসাইডাল এফেক্ট’ রয়েছে। যা ডেঙ্গু ভাইরাসকে মারতে সাহায্য করে। ‘মলিক্যুলার ডকিং’ করে দেখা গিয়েছে, পেঁপে পাতার রস অ্যান্টি ভাইরাল। আসলে, ভাইরাস প্লেটলেটের মেমব্রেনকে নষ্ট করে দেয়। পেঁপে পাতার রস মেমব্রেনকে শক্তিশালী করে। ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করার জন্য প্লেটলেটকে বাড়তি শক্তি জোগায়। বাড়ায় সেকেন্ডারি ইমিউনিটি বাড়ায়।