যৌতুকের টাকা না দেয়ায় গৃহবধুর মাথা ন্যাড়া, স্বামীসহ আটক ২
29, March, 2018, 11:43:20:AM
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় যৌতুকের টাকা না দেয়ায় গৃহবধুর মাথা ন্যাড়া করে দেবার অভিযোগ উঠেছে এক পাষণ্ড স্বামী, ভাসুর ও তার দুই বোনের বিরুদ্ধে।
বুধবার (২৮ মার্চ) সকাল ১০ টার দিকে উপজলার সিন্দুর্না ইউনিয়নের উত্তর হলদীবাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নির্যাতিত শাহানারা বেগম তার স্বামীসহ ৪ জনের নামে থানায় অভিযোগ দিলে পুলিশ দুইজনকে গ্রেফতার করেছে।
আটককৃতরা হলেন, ওই এলাকার মৃত মহির উদ্দিনের ছেলে (স্বামী) বাবলু মিয়া ও তার বড় বোন মহুরন নেছা।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, ওই উপজেলার টংভাঙ্গা ইউনিয়নের মৃত ঝুল্লুর রহমানে ছোট মেয়ে শাহানারা বেগমের সহিত ১০ বছর পূর্বে বিয়ে হয় সিন্দুর্না ইউনিয়নের উত্তর হলদীবাড়ি এলাকার মৃত মহির উদ্দিনের ছেলে বাবলু মিয়ার। শাহানারা বেগম ও বাবুলের দাম্পত্য জীবনে ৪ জন সন্তান রয়েছে। বিয়ের সময়ে দুই লক্ষ টাকা যৌতুক দাবি করেন বাবুলের পরিবার। অসহায় ওই জননী স্বামী ব্যবসা বাণিজ্য করবে বলে বাবার বাড়ি থেকে ১লাখ টাকা এনে স্বামীর হাতে তুলে দেন। এরপর আরো টাকার জন্য শাহানারা বেগমকে চাপ দিতে থাকেন বাবুল। টাকা এনে দিতে না পারায় বুধবার সকাল ১০টায় বাবুল তাকে মারধর করেন। শাহানারা বেগম এর প্রতিবাদ করলে তার স্বামী বাবুলসহ ভাসুর ও তার দুই বোন তাকে মারধর করেন। এক পর্যায়ে স্বামী বাবুল ব্লেড দিয়ে তার মাথা ন্যাড়া করে দিয়ে তাকে ঘরের ভিতরে আটকে রাখে।
বিকাল বেলা বাবলু মিয়া বাজারে গেলে ওই সুযোগে সন্ধ্যা ৭টার দিকে শাহানারা বেগম ঘরের বেড়ার বাঁধন কেটে ভুট্টা ক্ষেতের ভিতর দিয়ে পালিয়ে এসে হাতীবান্ধা হাসপাতালে ভর্তি হন।
এরপর রাত ১০টার দিকে এ বিষয়ে শাহানারা বেগম বাদী হয়ে তার স্বামীসহ ওই ৪ জনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে পুলিশ রাতেই বাবলু মিয়ার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে ও তার বড় বোন মহুরন নেছাকে গ্রেফতার করেন।
খবর পেয়ে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, শাহানারা বেগম তার ৪ সন্তানকে নিয়ে হাসপাতালের বেডে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। তার মাথার চুল সমস্ত ন্যাড়া করা আছে এবং শরীরের বিভিন্ন জায়গায় জখম রয়েছে।
শাহানারা বেগম বলেন, বিয়ের পর থেকে তার স্বামী, ভাশুর ও তাদের দুবোন যৌতুকের জন্য প্রায়ই তাকে শারীরিক ও মানুষিকভাবে নির্যাতন করতেন। বিশেষ করে এর মাত্রা বেড়ে যায় তার বাবার মৃত্যুর পরে। তার কোলের ৪ সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে তিনি শত অত্যাচার, নির্যাতন নিরবে সহ্য করে গেছেন। ওই নরপশু বাবলু মিয়ার শাস্তি দাবি করছি।
এবিষয়ে সিন্দুর্না ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আমিন বলেন, আমি ঘটনাটি শুনেছি। আইনের উর্ধ্বে কেউ নয়, অপরাধ করলে তাকে শাস্তি পেতেই হবে।
হাতীবান্ধা থানার ওসি উমর ফারুক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এ বিষয়ে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বাবলু মিয়া ও তার বড় বোন মহুরন নেছাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।