রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া যৌনপল্লী থেকে গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় ১৬ বছরের এক কিশোরীকে উদ্ধার করেছে গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশ। এ সময় ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে রিতু বেগম (২৮) নামের এক বাড়িওয়ালিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রিতু ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও উপজেলার ধামাইল গ্রামের মৃত সাইদুর রহমানের মেয়ে।
উদ্ধার হওয়া ওই কিশোরী জানায়, সে জামালপুর জেলার ইসলামপুর উপজেলার দরিদ্র পরিবারের মেয়ে। অভাবের সংসারে পরিবারকে সহযোগিতার উদ্দেশ্যে পরিচিত একজনের মাধ্যমে কয়েক বছর আগে ঢাকা তেজগাঁও শিল্প এলাকার হক বিস্কুট ফ্যাক্টরিতে কাজ নেয়।
গত শুক্রবার রাত ৮টার দিকে সে গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে ঢাকা ইয়ারপোর্ট রেলস্টেশনে অপেক্ষা করছিল। এ সময় সেখানে তার সঙ্গে শুভ (২৭) নামে এক তরুনের আলাপচারিতার মাধ্যমে সখ্যতা গড়ে তোলে। সে সামান্য বেতনে চাকরি করে জেনে শুভ তাকে রাজবাড়ীতে তার এক আত্মীয়ের কাছে ভালো বেতনে চাকরি দেওয়ার কথা বলে।
লোভনীয় বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে শুভ তাকে ফুঁসলিয়ে সেখান থেকে তার (শুভ) এক আত্মীয়ের বাড়িতে নিয়ে যায়। পরদিন শনিবার শুভ তাকে দৌলতদিয়া যৌনপল্লীর রিতুর ঘরে রেখে চলে যায়। রবিবার দুপুরে শুভ ফিরে আসে। সে সময় রিতুর সঙ্গে শুভর কথাবার্তা শুনে সে বুঝতে পারে তাদের উদ্দেশ্য। এ সময় শুভ সেখান থেকে কৌশলে পালিয়ে যায়। পরে সে সেখান থেকে চলে আসতে চাইলে রিতু জানায় শুভ তাকে মোটা অঙ্কের টাকায় বিক্রি করে দিয়ে গেছে। এখন তাকে পতিতাবৃত্তি করতে হবে। এ পরিস্থিতিতে রবিবার বিকেলে সে কৌশলে ওই এলাকায় দায়িত্বরত টহল পুলিশের কাছে এ ঘটনা জানায়।
খবর পেয়ে গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশ যৌনপল্লীতে অভিযান চালিয়ে রিতুর বাড়ি থেকে রিতুকে গ্রেপ্তার করে। কিশোরীকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি মির্জা আবুল কালাম আজাদ জানান, এ ঘটনায় উদ্ধার হওয়া কিশোরী নিজেই বাদি হয়ে রবিবার রাতে মানবপাচার আইনে একটি মামলা দায়ের করেছে। উদ্ধার হওয়া কিশোরী ও অভিযুক্তকে সোমবার রাজবাড়ীর আদালতে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া পলাতক অপর আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।