রাজধানীসহ দেশের অভিজাত বিপণিবিতান থেকে ফুটপাতের মার্কেট দখল করে নিয়েছে কেরানীগঞ্জের পূর্ব আগানগর ও কালীগঞ্জের তৈরি বাহারী রং ও ডিজাইনের আধুনিক সব শীতবস্ত্র। দামে কম ও কাপড়ের গুণগতমান ভালো থাকায় ক্রেতারা লুফে নিচ্ছেন এ অঞ্চলের তৈরি শীতবস্ত্র। ক্রেতাদের চাহিদা মেটাতে গিয়ে নির্ঘুমরাত কাটাচ্ছেন দর্জিরা। যদিও বছর জুড়েই চলে নানা ধরনের পোশাক তৈরির কাজ। তবে শীত অথবা ঈদ এলেই কারিগরদের হতে হয় গলদঘর্ম।
কালীগঞ্জ, আগানগর ও শুভাঢ্যার বিভিন্ন কারখানা ঘুরে দেখা গেছে, এখানকার তৈরি পোশাকের বাজারে এখনই ভিড়তে শুরু করেছে শীতবস্ত্রের পাইকাররা। তাই দিন-রাত চলছে বাহারীসব শীতবস্ত্র তৈরির কাজ। বছরজুড়েই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের পাইকাররা এখান থেকে তাদের চাহিদা মাফিক তৈরি পোশাক নিয়ে বিক্রি করে থাকে। তবে বিশেষ করে ঈদ- পূজা বা শীত মৌসুমে এখানকার ব্যাবসায়ীদের কদর বেড়ে যায় দেশের পাইকারদের কাছে। চলতি শীত মৌসুমকে সামনে রেখে এখনই জমে উঠেছে পূর্ব আগানগরের তৈরি পোশাকের শীতকালীন পাইকারী বাজার । দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের পাইকাররা ইতোমধ্যেই ভিড় করেছেন কেরাণীগঞ্জের তৈরি পোশাকের শীতকালীন বাজারে।
এ ব্যাপারে একতা সুপার মার্কেটের মালিক ও আসাদ এন্টার প্রইজের সত্বাধিকারী হাজি মোঃ আসাদ খান বলেন, মূলত শীত ও ঈদ মৌসুমই আমাদের সবচেয়ে বড় মৌসুম । তাই চলতি শীত মৌসুমকে সামনে রেখে দিন রাত কাজ করে যাচ্ছে এখানকার প্রায় ১০ সহাস্রাধিক তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। আগামী আরো বেশ কিছুদিন পর্যন্ত চলবে তাদের এ ব্যস্ত সময়।
তৈরি পোশাকের বৃহত্ পাইকারী মার্কেট নুরু সুপার মার্কেট। এখান থেকে দেশের বিভিন্ন এলাকায় তৈরি পোশাক সরবরাহ করা হয়। এ মার্কেটে মোহাম্মাদীয়া গার্মেন্টসের মালিক হাজী মো. ঈসরাফিল জানান, বিগত ৩ বছর শীত মৌসুমে শীত কম থাকায় ব্যবসা ভালো হয়নি। আশা করি এ বছর শীতবস্ত্র বিক্রি ভালো হবে। ইতোমধ্যে পাইকারা মার্কেটে আসা শুরু করেছেন।
পূর্ব আগানগর খাজা-সুপার মার্কেটের আলিয়া এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. নুরুল আমীন লিটন জানান, চলতি শীত মৌসুমকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে পাইকাররা আসতে শুরু করেছে। এবছর ব্যবসা ভালো হওয়ার সম্ভাবনার কথাও তিনি জানান। কেরাণীগঞ্জে এখন আর বিদ্যুত্ সমস্যা নেই। যে কারণে তাদের উত্পাদন আগের তুলনায় অনেকটাই বেশি। এবারের শীতে ছেলেদের শীতকালীন কোর্ট-স্যুট , ব্লেজার ও স্যুয়েটারের পাশাপাশি মেয়েদের জন্যও রয়েছে বাহারী ডিজাইনের সব ধরনের শীত কালীন পোশাক। যে কোন রুচিশীল তৈরি পোশাক এখানে অত্যন্ত সহজ মূল্যে পাওয়া যায়। পাইকারদের তেমন বেশি ঘোরাঘুরি করতে হয়না। তা ছাড়া রাজধানীর যে কোন পাইকারী বাজারের তুলনায় আমাদের এখানে কেনাকাটা করে পাইকাররা কোরকম যানজট ছাড়াই নিরাপদে তাদের গন্তব্যে পৌঁছতে পারে। যে কারণে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের পাইকারদের কাছে দিন দিন আমাদের কদর বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এ ব্যাপারে কেরানীগঞ্জ গার্মেন্টস ব্যবসায়ী ও দোকান মালিক সমবায় সমিতির আব্দুল আজিজ শেখ ও সাধারণ সম্পাদক মো.স্বাধীন শেখ বলেন , এখানে কোন শ্রমিক অসন্তোষ নেই । নেই কোন চাঁদাবাজ সন্ত্রাসী। নৌ-পথ ও সড়ক পথে দেশের যে কোন অঞ্চলে সহজে যোগাযোগ এবং যানজটমুক্ত এলাকা হওয়ায় দেশের যে কোন এলাকার পাইকাররাই মন খুলে্ পছন্দ মাফিক কেনাকাটার জন্য এখানে আসেন।