আমাদের প্রতিদিনের খাদ্যতালিকার মধ্যে বেশ কয়েকটি খাবারের কারণে মরণব্যাধি ক্যানসার আমাদের শরীরে বাসা বাঁধছে। যা আমাদের জানা নেই। সম্প্রতি ‘প্রিভেনশন পালস’ নামের একটি স্বাস্থ্য সংক্রান্ত ওয়েবসাইট এ বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছে। বিশদ আকারে তালিকা প্রকাশ করে তারা জানিয়েছে, আমাদের দৈনন্দিনের খাবারের মধ্যে বেশ কয়েকটি ক্যানসার-প্রবণ। এরমধ্যে এমন পাঁচটি খাবার রয়েছে, যা আমরা প্রতিদিন গ্রহণ করছি।
১. সোডা-যুক্ত সফট ড্রিঙ্কস : প্রত্যেক পুষ্টিবিদই নিষেধ করেন। সবাই জানেন ফাঁকা ক্যালরি উৎপাদনকারী এই সব পানীয় যে ওজন বৃদ্ধি, পেটে জ্বালা ও রক্তে শর্করা বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু সেই সঙ্গে এটি যে গোপনে ক্যানসারের মতো রোগকেও প্রশ্রয় দিয়ে চলে, তা জানিয়েছে ‘আমেরিকান জার্নাল অফ নিউট্রিশন’-এ প্রকাশিত একটি গবেষণা নিবন্ধ। এই পানীয়তে যে কৃত্রিম রং ও অতিরিক্ত রাসায়নিক পদার্থগুলো ব্যবহৃত হয়, তা দেহের ক্যানসার প্রবণতাকে বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়।
২. চিপস : পোট্যাটো চিপস এটিও উচ্চ ক্যালরি ডায়েটযুক্ত। এর মাধ্যমে ওজন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এটি উচ্চ রক্তচাপকেও ডেকে আনে। কিন্তু তার চাইতেও ভয়ের কথা, পোট্যাটো চিপস তৈরির সময়ে যে সব প্রিজারভেটিভ ও রং ব্যবহৃত হয়, তা এই খাবারটি প্রস্তুতের কালে বিপুল তাপমাত্রার সংস্পর্শে আসে। এর ফলে তৈরি হয় ‘অ্যাক্রিলামাইড’ নামের একটি পদার্থ। এই অ্যাক্রিলামাইড সিগারেটেও পাওয়া যায়। এবং এটিকে বিশেষজ্ঞরা ক্যানসারের অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেন।
৩. কৃত্রিম প্রজনন মাছ : খাদ্য তালিকায় মাছ অপরিহার্য। বিশেষজ্ঞরা কৃত্রিম প্রজনন ও বিশেষ পদ্ধতিতে চাষ হওয়া কিছু মাছ সম্পর্কে সতর্ক হতে বলেছেন। বিশেষ করে, তেলাপিয়া মাছ থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। কারণ তেলাপিয়া চাষে ব্যবহৃত হয় বিপুল পরিমাণ অ্যান্টিবায়োটিক এবং কীটনাশক।
৪. চিনির বিকল্প অন্যান্য পদার্থ : ডায়াবেটিসের ভয়ে আমরা অনেকেই চিনি ছাড়া চা পান করছি। কিন্তু মিষ্টি ত্যাগ করলেও চা বা কফিতে আবার অনেকে চিনির ব্যবহার করি। চিনির বদলে বিকল্প কিছু ব্যবহার করি। চিনির বিকল্প হিসেবে যে পদার্থগুলি আমরা খেয়ে থাকি, তা একান্তভাবেই রাসায়নিক। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন এর কারণে ব্লাড সুগার লেভেল আদৌ কমে না বরং বাড়ে। তার উপরে এই কৃত্রিম শর্করা দেহে ডিকেপি নামের এক বিষাক্ত পদর্থের জন্ম দেয়, যা ব্রেন টিউমারের কারণ হয়ে উঠতে পারে।
৫. আাচার : বাঙালি বেশির ভাগ মানুষের প্রিয় আচার। কিন্তু মাউন্ট সিনাই স্কুল অফ মেডিসিন-এর একটি গবেষণা জানাচ্ছে, আচার গ্যাস্ট্রিক ক্যানসারের একটি বড় কারণ। নিয়মিত আচার খান এমন মানুষের উপরে গবেষণা চালিয়ে দেখা গিয়েছে, তাদের মধ্যে ৫০ শতাংশ ব্যক্তির গ্যাস্ট্রিক ক্যানসার-প্রবণতা বেড়ে গিয়েছে। তাই প্রতিদিন ভাতের সঙ্গে বা যখন তখন আচার খাওয়া ডেকে আনতে পারে বড় রকমের বিপদ। তবে পরিমাণে কম বা মাঝে মধ্যে আচার খেলে ক্ষতি নেই।