বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মানহানির পাঁচ মামলা থেকে খালাস দিয়েছেন আদালত। এসব মামলার মধ্যে জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এ বি সিদ্দিকীর দায়ের করা চার মামলা এবং ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক গাজী জহিরুল ইসলামের দায়ের করা এক মামলা রয়েছে।
মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিট ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেনের আদালত চার মামলায় ও অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিট ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুল হকের আদালত আরেকটি মামলায় খালাস দেন।
খালেদা জিয়ার আইনজীবী মাসুদ আহম্মেদ তালুকদার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, দীর্ঘদিন এসব মামলায় বাদী আদালতে হাজির হচ্ছেন না। এসব মামলার (সিআর) বিধান হলো বাদী দীর্ঘদিন আদালতে হাজির না হলে আসামিপক্ষ মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করতে পারেন। দীর্ঘদিন বাদী অনুপস্থিত থাকায় মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করি। আদালত প্রত্যাহারের আবেদন মঞ্জুর করে খালেদা জিয়াকে খালাস দেন।
মুক্তিযুদ্ধকে ‘কলঙ্কিত’ করার অভিযোগে করা মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০০১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াতের সঙ্গে জোট করে নির্বাচিত হয়ে সরকারের দায়িত্ব নেন খালেদা জিয়া। তিনি রাজাকার ও আলবদর নেতাদের মন্ত্রী-এমপি বানিয়ে তাদের বাড়ি-গাড়িতে স্বাধীন বাংলাদেশের মানচিত্র ও জাতীয় পতাকা তুলে দেন।
এ ঘটনায় ২০১৬ সালের ৩ নভেম্বর ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মানহানির এ মামলা করেন জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এ বি সিদ্দিকী। আদালত ঘটনার তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেন।
পরের বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর তেজগাঁও থানার পুলিশ পরিদর্শক মশিউর রহমান (তদন্ত) অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে মর্মে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। মামলার অন্য আসামি জিয়াউর রহমান মৃত মর্মে তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এছাড়া মানহানির অভিযোগে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আরও তিনটি মামলা করেন এবি সিদ্দিকী।
অন্যদিকে ‘ভুয়া’ জন্মদিন উদযাপনের অভিযোগে করা মামলায় বলা হয়, খালেদা জিয়ার একাধিক জন্মদিন নিয়ে ১৯৯৭ সালে দুটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী এসএসসি পরীক্ষার নম্বরপত্রে সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীর জন্মতারিখ ১৯৪৬ সালের ৫ সেপ্টেম্বর।
১৯৯১ সালে প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে একটি দৈনিকে তার জীবনী নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জন্মদিন ১৯৪৫ সালের ১৯ আগস্ট লেখা হয়। আর বিয়ের কাবিননামায় জন্মদিন উল্লেখ করা হয় ১৯৪৪ সালের ৪ আগস্ট। সবশেষ ২০০১ সালে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট অনুযায়ী খালেদা জিয়ার জন্মদিন ১৯৪৬ সালের ৫ আগস্ট।
‘ভুয়া’ জন্মদিন উদযাপনের অভিযোগে ২০১৬ সালের ৩০ আগস্ট ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক গাজী জহিরুল ইসলাম বাদী হয়ে এ মামলা করেন। ২০১৮ সালের ৩১ জুলাই এ দুই মামলায় ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ খালেদা জিয়ার জামিন মঞ্জুর করেন।
মানহানির পাঁচ মামলায় খালেদা জিয়া জামিনে ছিলেন। মামলাগুলো অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য ধার্য ছিল। খালেদা জিয়ার পক্ষে তার আইনজীবী হাজিরা দিয়ে আসছিলেন। তবে বাদী দীর্ঘদিন শুনানিতে অনুপস্থিত থাকায় এ প্রত্যাহারের আবেদন করেন।