শ্রম আইন লঙ্ঘন মামলায় নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।এর আগে এ মামলায় ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে হাজির হন ড. ইউনূস। মঙ্গলবার (৬ জুন) আদালত সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।এর আগে, ৩১ মে বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকার ও বিচারপতি রাশেদ জাহাঙ্গীরের হাইকোর্ট বেঞ্চ কর ফাঁকির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় প্রায় ১২ কোটি টাকা পরিশোধ করতে গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) নোটিশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের করা তিনটি আয়কর রেফারেন্স মামলা খারিজ করে দেন আদালত।ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ২০১১-১২ থেকে ২০১৩-১৪ - এ তিন অর্থবছরে নিজের নামে গঠিত দুটি ট্রাস্ট্র ও একটি প্রতিষ্ঠানে ৭৭ কোটি ৩৯ লাখ টাকা স্থানান্তর করেন। আয়কর নথিতে বলা হয়েছে, এ টাকা মৃত্যুভীতি থেকে ওই প্রতিষ্ঠানে দান করেন তিনি।ওইদিন উচ্চ আদালত বলেন, ব্যক্তি ও পারিবারিক স্বার্থে ট্রাস্ট গঠন করেছেন ড.ইউনূস, মৃত্যুভীতি থেকে সেই ট্রাস্টে টাকা দান অকল্পনীয়। ফলে দানকর অব্যাহতি পাবেন না তিনি। পরিশোধ করতে হবে রাষ্ট্রের পাওনা প্রায় ১২ কোটি টাকা। রায়ে বলা হয়, তিনটি মামলাতেই ড. ইউনূসের কর ফাঁকির অভিযোগ প্রমাণিত। ড. ইউনূসকে ১২ কোটি টাকা পরিশোধের নির্দেশ হাইকোর্টেরআদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন; অন্যদিকে ড. ইউনূসের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান খান। মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১১-২০১২ করবর্ষে মোট ৬১ কোটি ৫৭ লাখ ৬৯ হাজার টাকা দানের বিপরীতে প্রায় ১২ কোটি ২৮ লাখ ৭৪ হাজার টাকা কর দাবি করে ইউনূসকে নোটিশ পাঠায় এনবিআর। একইভাবে ২০১২-২০১৩ করবর্ষে ৮ কোটি ১৫ লাখ টাকা দানের বিপরীতে প্রায় ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা এবং ২০১৩-২০১৪ করবর্ষে ৭ কোটি ৬৫ হাজার টাকা দানের বিপরীতে ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা কর চেয়ে আরও দুটি নোটিশ দেয়া হয় তাকে।এনবিআরের সেসব নোটিশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে কর আপিল ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন ইউনূস। ২০১৪ সালে কর আপিল ট্রাইব্যুনাল তার মামলা খারিজ করে এনবিআরের পক্ষে রায় দেন। এরপর হাইকোর্টে তিনটি আয়কর রেফারেন্স মামলা করেন ইউনূস, যার রায়ও তার বিপক্ষে যায়। আপিল ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে এ আবেদন করার সময় ৩ কোটি টাকা জমা দিতে হয়েছিল ইউনূসকে। হাইকোর্টে মামলা হারায় বাকি ১২ কোটি টাকা তাকে পরিশোধ করতে হবে। ইউনূসের বিরুদ্ধে আরও তিনটি প্রতিষ্ঠানের প্রায় ১১শ কোটি টাকার কর ফাঁকির অভিযোগ রয়েছে। এ সংক্রান্ত কয়েকটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে উচ্চ আদালতে। এছাড়া গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কল্যাণ ট্রাস্টের ২৫ কোটি ২২ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ইউনূসকে প্রধান আসামি করে ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক।