বিচারকদের শৃঙ্খলাবিধি : গেজেট নিয়ে আদেশ ২ জানুয়ারি
13, December, 2017, 12:52:53:PM
নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরি ও শৃঙ্খলা বিধিমালার প্রকাশিত গেজেট বিষয়ে আগামী ২ জানুয়ারি আদেশ দেবে আপিল বিভাগ। বুধবার ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞার নেতৃত্বে চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদেশের জন্য মামলাটি আপিল বিভাগের দুই নম্বর কার্যতালিকায় ছিল। শুনানির শুরুতে আপিল বিভাগ অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমকে বলেন, আজকে বেঞ্চের একজন বিচারপতি নেই। এটা তো ফুলবেঞ্চে হতে হবে। তাই আজকে নয়, ২ জানুয়ারি এটার আদেশ হবে।
গত সোমবার অধস্তন আদালতের বিচারকদের চাকরি শৃঙ্খলাবিধিমালার গেজেট প্রকাশ করে সরকার। এরআগের দিন রোববার আপিল বিভাগ গেজেট প্রকাশের জন্য ১৩ ডিসেম্বর দিন নির্ধারণ করে দেন। এরআগে গত ১৬ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারপতির সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে বৈঠক করেন আইনমন্ত্রী। ওইদিন বৈঠক শেষে আইনমন্ত্রী গণমাধ্যমকে গেজেট নিয়ে সমঝোতা হওয়ার বিষয়টি জানান। তিনি বলেছিলেন, রাষ্ট্রপতির হুকুম পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা এ গেজেট প্রকাশ করবো।
আদালত সূত্র জানায়, ১৯৯৯ সালের ২ ডিসেম্বর মাসদার হোসেন মামলায় ১২ দফা নির্দেশনা দিয়ে রায় দেয়া হয়। ওই রায়ের আলোকে নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলাসংক্রান্ত বিধিমালা প্রণয়নের নির্দেশনা ছিল। আপিল বিভাগের নির্দেশনার পর গত বছরের ৭ মে আইন মন্ত্রণালয় একটি খসড়া শৃঙ্খলাসংক্রান্ত বিধি প্রস্তুত করে সুপ্রিম কোর্টে পাঠায়।
গত বছরের ২৮ আগস্ট এই মামলার শুনানিতে আপিল বিভাগ জানান, শৃঙ্খলা বিধিমালাসংক্রান্ত সরকারের খসড়াটি ছিল ১৯৮৫ সালের সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালার হুবহু অনুরূপ, যা মাসদার হোসেন মামলার রায়ের পরিপন্থি। এরপরই সুপ্রিম কোর্ট একটি খসড়া বিধিমালা করে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। একইসঙ্গে ওই বছরের ৬ নভেম্বরের মধ্যে তা প্রণয়ন করে প্রতিবেদন আকারে আদালতকে অবহিত করতে আইন মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেয়।
বিচার বিভাগের স্বাধীনতার নয় বছর পূর্তি উপলক্ষে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা গত বছরের ৩১ অক্টোবর এক বাণীতে বিচার বিভাগে দ্বৈত শাসন চলছে বলে উল্লেখ করেন। বাণীতে তিনি বলেন, সংবিধানের ১০৯ অনুচ্ছেদে অধস্তন সব আদালত ও ট্রাইব্যুনালের ওপর হাইকোর্টের তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণ থাকবে বলা হয়েছে। কিন্তু ১১৬ অনুচ্ছেদে যে বিধান দেয়া হয়েছে তা বিচার বিভাগের ধীরগতির অন্যতম কারণ।
এই অনুচ্ছেদ অনুসারে অধস্তন আদালতের বিচারকদের পদোন্নতি, বদলি এবং শৃঙ্খলামূলক কার্যক্রম সুপ্রিম কোর্টের পক্ষে এককভাবে গ্রহণ করা সম্ভব হচ্ছে না। দ্বৈত শাসনের ফলে বহু জেলায় শূন্য পদে সময়মত বিচারক নিয়োগ দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। এতে বিচার কাজে বিঘ্ন ঘটে এবং বিচারপ্রার্থী জনগণের ভোগান্তি বেড়ে যায়। ১১৬ অনুচ্ছেদ পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য তিনি বাণীতে উল্লেখ করেন।