খোদ ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনে (আইএসএস) এসে হানা দিয়েছে ভিনগ্রহের ব্যাকটেরিয়া? এমনটাই দাবি করেছেন রাশিয়ার এক মহাকাশচারী। সম্প্রতি রাশিয়ার সংবাদ সংস্থা ‘তাস’ কে দেওয়া সাক্ষাত্কারে অ্যান্টন কাপলারভ বলেন, স্পেস স্টেশনের বাইরের দিকে পাওয়া গেছে ওই ব্যাকটেরিয়াগুলো। তার মতে, ‘এগুলো বাইরের দুনিয়া থেকে এসেছে এবং স্পেস স্টেশনের বাইরে বাসা বেঁধেছে।’ অ্যান্টনের এই মন্তব্যের পরই বেশ হইচই পড়ে যায়। চলতি মাসে এই মহাকাশচারীর নেতৃত্বে রুশ গবেষকদের একটি দল যাবে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে।
স্পেস স্টেশনের বাইরে প্রায়শই মহাকাশে ঢুঁ মারেন নভোচারীরা। মহাশূন্যে এই অভিযানকে বলা হয় ‘স্পেসওয়াক’। স্পেসওয়াকের সময়ে নানা রকম নমুনা সংগ্রহ করে স্পেস স্টেশনে জড়ো করা হয়। পরে সেগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য পাঠানো হয় পৃথিবীতে। অ্যান্টন জানিয়েছেন, এমনই এক স্পেসওয়াকের সময় নভোচারীরা যে নমুনা সংগ্রহ করেন, তার মধ্যে চলে আসে ব্যাকটেরিয়াগুলো। মহাশূন্যে ব্যাকটেরিয়ার দেখা মিললে তা চিন্তার জন্ম দেবে এটাই স্বাভাবিক। বিষয়টি নিয়ে কয়েকটি সম্ভাব্য ব্যাখ্যা দিয়েছে ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক ম্যাগাজিন। তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ভিনগ্রহীদের নিয়ে এখনো যেহেতু বিতর্ক আছে তাই পুরোপুরি তাদের পক্ষে রায় দেওয়ার সময় আসেনি। এমনও হতে পারে পৃথিবী থেকেই কোনোভাবে ব্যাকটেরিয়াগুলো পৌঁছে গেছে স্পেস স্টেশনে। গবেষণার জন্য মাঝে মাঝেই পৃথিবী থেকে ব্যাকটেরিয়া বা মাইক্রো-অরগ্যানিজমের ‘স্যাম্পল’ নভোচারীরা নিয়ে যান স্পেস স্টেশনে। পৃথিবীর চেনা পরিবেশের বাইরে মহাকাশে ওই প্রাণীগুলোর আচরণ কেমন সেটা বোঝার চেষ্টা করা হয়। পরীক্ষা করে দেখা গেছে, স্পেস স্টেশনে পাওয়া ব্যাকটেরিয়াগুলো মাইনাস ১৫০ ডিগ্রি থেকে ১৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাতেও বেঁচে থাকতে পারে। আবার অন্য একটি সম্ভাবনার কথাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। সেটি হলো, কোনোভাবে মহাকাশচারীদের কারো শরীর থেকেই সংক্রমণ ছড়িয়েছে স্পেস স্টেশনে। তবে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত গবেষণার প্রয়োজন আছে বলে বিজ্ঞানীরা অভিমত দিয়েছে। কারণ ব্যাকটেরিয়া স্পেস স্টেশনের ভেতর থেকে মহাশূন্যে যাবার বিষয়টি অনেকে মেনে নিতে পারছেন না। তাদের ঠিকই বিশ্বাস, ওগুলো ভিনগ্রহ থেকে আসা! -ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক