টেস্ট, ওয়ানডেতে মাঝে মাঝে হতাশার প্লাবন আসলেও দুই ফরম্যাটে বলার মতো সুখস্মৃতিও আছে বাংলাদেশের। কিন্তু ক্রিকেটের ক্ষুদে ফরম্যাট তথা টি-টোয়েন্টিতে টাইগারদের পারফরম্যান্স আশানুরূপ নয়। ৬৯ ম্যাচে জয় ২১টি।
শুধু পরিসংখ্যানের পাতা নয় টি-টোয়েন্টির নাজুক হাল নিয়ে খোদ বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মাঝেও আছে উচাটান। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ গতকাল অকপটেই স্বীকার করেছেন তা। আজ শুরু হতে চলা শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের সুযোগটা কাজে লাগাতে চান ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক। তিনি বলেছেন, এ ফরম্যাটে দল হিসেবে একটা বার্তাও দিতে চায় বাংলাদেশ। সেজন্য দুই ম্যাচের সিরিজটাকেই পাখির চোখ করছেন মাহমুদউল্লাহ।
গতকাল মিরপুর স্টেডিয়ামে টি-টোয়েন্টির জীর্ণরূপ নিয়ে কথা তুলতেই যেন বাংলাদেশ অধিনায়কের কণ্ঠে ঝরল চোখে পড়ার মতো একটা কিছু করার তাগিদ। মাহমুদউল্লাহ বলেছেন, ‘আমার যেটা মনে হয় আমাদের টি-টোয়েন্টি সামর্থ্যের উপর একটা প্রশ্নবোধক চিহ্ন আছে। এই সিরিজে একটা বার্তা দেওয়ার আছে বাকি বিশ্বকে। এই সিরিজটা খুব গুরুত্বপূর্ণ আমাদের জন্য, আমাদের ক্রিকেটের জন্য। আমরা একটা বার্তা দিতে চাই, ইনশাল্লাহ।’
ওয়ানডে- টেস্টে প্রত্যাশা পূরণের পারফরম্যান্স করতে পারেনি বাংলাদেশ। মাহমুদউল্লাহ বলেন, ‘প্রথমে একটা কথা বলতে চাই, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট আলাদা একটা ফরম্যাট। ভিন্ন খেলা। যদি গতির কথা বলেন, ওয়ানডের গতি, টেস্টের গতি। যেভাবে পারফর্ম করছিলাম ঘরের মাটিতে ওই প্রত্যাশা আমরাই তৈরি করেছি সবার মনে। এবার সেই ফলটা দেখাতে পারিনি।’
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সাত বারের সাক্ষাতে টি- টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ জিতেছে মাত্র দুবার। চলমান সিরিজে বাকি দুই ফরম্যাটে হারলেও আজ ঘুরে দাঁড়ানোর আশা করছেন মাহমুদউল্লাহ। তিনি বলেন, ‘আমি সব সময় বলি ঘরের মাটিতে আমরা যার বিরুদ্ধেই খেলি আমি আমাদের দলকে এগিয়ে রাখব। যদিও আমরা টেস্ট ও ওয়ানডেতে আশানুরূপ পারফরম্যান্স করতে পারিনি। আমরা খুব আশাবাদী। আমরা ঘুরে দাঁড়াতে পারব। এবং ভালো ক্রিকেট খেলেই ঘুরে দাঁড়াতে পারব।’
সাকিবের ইনজুরির কারণে দুই টেস্টে নেতৃত্ব দিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। টি- টোয়েন্টিতেও দায়িত্ব এসেছে তার কাঁধে। যদিও ম্যাচের মাত্র একদিন আগে সেই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তাকে। তিনি চাইছেন, দায়িত্বটা ভালোভাবে পালন করতে।
ঘরোয়া ক্রিকেটের অন্য ফরম্যাটগুলোতে ভালো করলেও মাহমুদউল্লাহর নেতৃত্ব প্রস্ফুটিত হয়েছে বিপিএলে। ক্রিকেটাঙ্গন থেকে ক্রিকেটপ্রেমীদের প্রশংসাও কুড়িয়েছে তার নেতৃত্ব। অধিনায়ক হিসেবে বিপিএল ফাইনাল খেলেছেন কয়েকবার। সর্বশেষ দুবার সেরা চারে তুলেছেন দলকে।
ফরম্যাটের মিল থাকায় অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহর কারিশমা, জুয়া, কৌশলগত পরিবর্তন, জারিজুরি দেখা যেতে পারে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে। মাঠে সতীর্থদের কাছ থেকে সেরাটা বের করে নিতে চেষ্টা করবেন তিনি।
গতকাল সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘যেহেতু আমি দায়িত্ব পেয়েছি আমি আমার তরফ থেকে চেষ্টা করব। যেভাবে চেষ্টা করি প্লেয়ারদের কাছ থেকে সেরাটা বের করে নেওয়ার। একই জিনিসটাই চেষ্টা করব। আপনি বিপিএলের কথা বললেন, আমি সব সময় বিশ্বাস করি টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে আপনি যদি প্লেয়ারদের উজ্জীবিত ও স্বাধীনতা না দিতে পারেন। পারফর্ম করার সুযোগ সেক্ষেত্রে অনেক কম।’ সিনিয়র থেকে দলের নতুন মুখ সবাইকে পারফর্ম করার সুযোগ দিতে চান মাহমুদউল্লাহ। সবাই মিলে সেরা ক্রিকেট খেলে জয়ের হাসিতে ভাস্বর হতে চান তিনি।