শরীরে নানা কারণে রক্তস্বল্পতা সৃষ্টি হয়।রক্তস্বল্পনতা শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর। রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ স্বাভাবিকের তুলনায় কম থাকলে তাকে রক্তস্বল্পতা বলে। রক্তের অন্যতম উপাদান হলো লোহিত রক্তকণিকা। লোহিত রক্তকণিকার মধ্যে রয়েছে হিমোগ্লোবিন নামে এক প্রকার পদার্থ।
হিমোগ্লোবিনের অভাব হলে মুখ ও চোখ ফ্যাকাশে দেখায়, চোখের নিচের পাতার ভেতরের দিকটা সাদা হয়ে যায়। দুর্বলতা, মাথা ব্যথা, মাথা ঘোরা, চোখে অন্ধকার দেখা, অল্প পরিশ্রমে হাঁপিয়ে ওঠা, বুক ধড়ফড় করা, মাথা ঝিমঝিম করা, মেজাজ খিটখিটে হওয়া, কাজকর্মে অনীহা, অনিদ্রা, অল্পতে মনোযোগ নষ্ট হওয়া, জিহ্বা ও ঠোঁট মসৃণ ও সাদাটে হয়ে যাওয়া, মুখের কোনায় ও জিহ্বায় ঘা হওয়া, নখে ভঙ্গুরতা বা চামচের মতো গর্ত হওয়া, অরুচি, বমি বমি ভাব, হজমে ব্যাঘাত ঘটা এবং রোগ প্রতিরোধ মতা কমে যায়।
তখন বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিকর খাবার আপনার শরীরের রক্তস্বল্পতা দূর করতে খবুই কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে। আসুন জেনে নিই, রক্তস্বল্পতা দূর করা কিছু খাবারের গুণাগুণ।
ডিম প্রোটিনে ভরপুর। এই অসাধারণ খাদ্যটি দেহে পুষ্টি জোগায়। এতে করে পুষ্টিহীনতার কারণে সৃষ্টি রক্ত স্বল্পতা দূর হয়। অন্যান্য পুষ্টিকর খাবারের পাশাপাশি একটি ডিম প্রতিদিন খেলে রক্ত স্বল্পতা দূর হবে দ্রুত। দেহে পুষ্টি, ফলিক এসিড এবং আয়রনের কারণে রক্ত স্বল্পতা রোগের উৎপত্তি হয়। দেহে এই সব প্রয়োজনীয় মিনারেলের ঘাটতি পূরণ করতে খাবার তালিকায় রাখতে হবে প্রচুর পরিমাণে সবুজ শাক-সবজি।
কচুশাক, বাঁধাকপি, ফুলকপি, ব্রকলি ইত্যাদি খাবার অভ্যাস করুন। খাসি বা গরুর কলিজায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন। নিয়মিত গরু বা খাসির কলিজা খেলে দেহের আয়রনের ঘাটতি পূরণ হয়। তবে যাদের উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে তাদের অবশ্যই গরুর কলিজা থেকে দূরে থাকতে হবে।
সর্বগুণ সম্পন্ন ফল বেদানা রক্ত স্বল্পতা দূর করতে অত্যন্ত কার্যকর। বেদানায় রয়েছে পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, সোডিয়াম, জিংক ও আয়রনসহ অনেক মিনারেল যা দেহের সুস্থতায় কাজ করে। দিনে ৩ বার ১ গ্লাস বেদানার রস খাবার আগে খেলে রক্ত স্বল্পতা রোগ দূর হবে।
ফোলেইট রক্তের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করে। আমাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় ফোলেইট সমৃদ্ধ খাবার রাখা অত্যন্ত জরুরি। যেকোনো ধরনের ডাল উচ্চমাত্রার ফোলেইট সমৃদ্ধ। তাই প্রতিদিন মসুর, মুগ কিংবা মাস কলাইয়ের ডাল খেতে পারেন।
মাছ সব চেয়ে ভালো আয়রনের উৎস, বিশেষ করে সামুদ্রিক মাছ। শিং মাছ, ইলিশ মাছ, ভেটকি মাছ, টেংরা মাছ ইত্যাদি সব মাছেই রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় সর্বনিন্ম ৬০ গ্রাম মাছ রাখুন।
শরীরে রক্তস্বল্পতার প্রভাব অনুভূত হলে এসব খাবার নিয়মিত খেতে থাকুন। আশা করা যায়, খুব শিগগির আপনি শরীরের রক্তস্বল্পতা দূর করতে সক্ষম হবেন।
|