উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গী ....ড. এফ এইচ আনসারী
6, November, 2018, 4:25:58:PM
বিশিষ্ঠ্য পরিবেশ বিজ্ঞানী, এসিআই গ্রপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর জনাব ড. এফ এইচ আনসারী বলেছেন, সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা বাংলার ফলমুল, শাক শব্জি উৎপাদন, খাদ্য-মান এক কথায় অসাধারণ । বিশ্ব বাজারেও এটি আলোচিত। কিন্তু দীর্ঘদিন বাংলাদেশের খাদ্যপণ্যকে বিষযুক্ত অবিহিত করে একটি শ্রেণী যে বিভ্রান্তিকর গুজব ছড়াচ্ছে এটি আসলে ঠিক নয়। এদেশের খাদ্যপণ্য বিষমুক্ত। সরকারি বেসরকারিভাবে বিভিন্ন পরীক্ষা নিরিক্ষা করে বিষটির সত্যতা দেখা গেছে। যা বিভিন্নভাবে প্রচার করাও হয়েছে। আমি মনে করি ফলমুল শাক সবজি এসবের ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রচারণা বাণিজ্যক ক্ষতি, যা পুরো কৃষি অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলে।
তিনি বলেন, আমি এদেশকে অন্তর থেকে ভালবাসি, আর এজন্য দেশের প্রতি আমার দায়িত্ব কর্তব্য অপরিসীম বলে মনে করি। আমি যতদিন বাচবো দায়িত্বশীল আচারণ করে যাবো। দেশ, দেশের মানুষ এবং এর অর্থনীতির সেবায় সম্পৃক্ত থাকবো এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার। অন্য এক প্রসঙ্গে জনাব আনসারী বলেন, এদেশের উন্নয়ন আশাব্যঞ্জক পর্যায়ে উন্নীত করতে হলে ইতিবাচক চর্চায় উদ্বুদ্ধ হতে হবে। শুধু নেতিবাচক করে সবকিছু দেখলে হবে না। এদেশে অনেক সাফল্য গাঁথার গল্প আছে যা অনুকরণ করার মতো। পুরো বিশ্বের সব স্থানেই কিছু সংঘাতময় অধ্যায় রয়েছে যা অতিক্রম করার উপায় বের করাই বর্তমান বিশ্বের বড় চ্যালেঞ্জ। কাজেই হায় হুতাশ না করে সব সময় ইতিবাচক চিন্তা নিয়ে দেশকে কিভাবে সামনের দিকে এগিয়ে নেওয়া যাবে সেই ধারায় আসতে হবে সবাইকে। তিনি বলেন, এক্ষেত্রে সরকারের উন্নয়ন গবেষণায় বাজেট ব্যাপক পরিসরে বাড়ানো জরুরি। অন্য এক প্রসঙ্গে জনাব আনসারী বলেন, এদেশের চমৎকার আবহাওয়া, উর্বর কৃষিভুমি আর ব্যপক সংখ্যক জনবল সুষ্ঠ সমন্বয়ের মাধ্যমে উৎপাদনে যুক্ত হলে অর্থনীতির চিত্র পাল্টে যাবে অল্পদিনেই। সুধু প্রয়োজন সদিচ্ছা এবং সরকারের পলিসিগত কিছু নতুনত্ব। আমাদের দেশে ব্যপক জনগণ রয়েছে যা জন-সম্পদে রুপান্তর করা সম্ভব। প্রক্রিয়াটা শুরু করা প্রয়োজন ছিলো আরো আগে থেকেই। কৃষি আমাদের অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি। এজন্য শিক্ষিত শ্রেণিদের এই সেক্টরে যুক্ত করার উদ্যোগ নিতে হবে। এই দেশি শিক্ষিত অনেক বেকার উদ্যোম নিয়ে নিজকর্মসংস্থানের সৃষ্টি করে সফল হয়েছে এবং হচ্ছেন এমন উদাহরণ ভুরিভুরি। এজন্য সময় অপচয় নয়; প্রতিটা গৃহ থেকে নিজ এবং নিজের দেশ উন্নয়নের আন্দোলনে নামতে হবে। শিক্ষার পাশাপাশি আগে থেকেই কর্মমুখী কাজের উদ্যোগে সম্পৃক্ত হতে হবে। এদেশের বিশকোটি মানুষের চল্লিশ কোটি হাত যদি দায়িত্বশীল কাজের সাথে যুক্ত হয় বাংলাদেশ হবে উন্নয়নের মডেল। তিনি এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, শিল্প গড়ার আগে এর পরিবেশ গড়তে হবে আগে। বিনিয়োগকারির বিনিয়োগ সিকিউরড করার বিষয় গুরুত্বের সাথে দেখতে হবে। এটা শুরু হতে হবে এসএমই পর্যায় থেকেই। এর ফলে নতুন উদ্যোক্তা তৈরি হবে। যদি বিনিয়োগ পরিবেশ এবং এইখাতে অন্যান্য সুবিধাবলী আন্তর্জাতিক মানের করা না যায় তবে শিল্প গড়ে উঠবে না। ট্রেডিং এবং কমার্স বাড়তেই থাকবে। অর্থনীতি হয়ে যাবে ট্রেডিং বেজড। অন্যদিকে যদি আমদানি বিকল্প এবং রফতানিমুখী শিল্প ব্যপক হারে প্রতিষ্ঠা না হয়, আভ্যন্তরীণ ব্যবসা বাণিজ্যর ভারসম্য বিঘ্নিত হবে। তিনি বলেন, আমাদের দেশে পরিবর্তনশীল জলবায়ুর প্রভাবে কৃষি উৎপাদন, জীবনযাত্রায় প্রভাব আসা স্বাভাবিক। এজন্য হায় হুতাস না করে বিকল্প ব্যবস্থা সহ সব ধরনের প্রস্ততিমুলক কর্মকান্ড থাকতে হবে। উত্তরণের উপায়ই যে কোনো দুর্যোগ, আগত সমস্যার সমাধান দিতে পারে। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শুরু থেকেই দেশের প্রতি কমিটমেন্ট নিয়ে এসিআই গ্রুপ বিজনেস কর্মকান্ড অব্যাহত রাখছে। কৃষিখাতে আমাদের রয়েছে বড় ধরনের বিনিয়োগ কর্মকান্ড এবং বিজনেস গবেষণা। আমরা কৃষি উন্নয়নের সাথে দেশের উন্নয়নে সম্পৃক্ত হতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। আমাদের মতো আনেক কর্পোরেট গ্রুপ রয়েছে যারা দেশের প্রতি কমিটমেন্ট নিয়ে দায়িত্বের সাথে উন্নয়ন-অংশীদারিত্বে ভুমিকা পালন করছে। এই ধারায় আমিও যুক্ত রয়েছি। আমি মনে করি বাংলাদেশ আমার পরিচয়। এদেশের প্রতি আমি আজন্ম ঋণী। এজন্য শুধু দেশকে ভালবেসেই শেষ নয়, দেশের প্রতি আমার অবিরাম কর্তব্য রয়েছে যা নিবিষ্ঠ মনে প্রতিপালন করে যাচ্ছি । আমি মনে করি যিনি যে পেশায় রয়েছেন যদি সবাই যারযার দায়িত্ব কর্তব্যটা সঠিকভাবে পালন করেন তাহলে দেশের উন্নয়ন আর শান্তি নিয়ে কোনো ভাবনা থাকে না।