রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রাথমিক পর্যায়ের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকদের আমরণ অনশন কর্মসূচি আজ রোববার দ্বিতীয় দিনে গড়িয়েছে। এরই মধ্যে এই কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া অন্তত ১৫ জন শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন। তাদের মধ্যে সিদ্দিকুর রহমান, আবু তালেব, সালেহা আক্তার মুক্তা, রফিকুল ইসলাম, আব্দুর রহিম, এখলাসুর রহমান, ফিরোজ আলম, মো. আলাউদ্দিনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বেতন বৈষম্য নিরসনের দাবিতে প্রাথমিক সরকারি শিক্ষক মহাজোটের ব্যানারে এই অনশন কর্মসূচি গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় শুরু হয়েছে। এর পর থেকে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণেই আছেন তারা। শিক্ষক মহাজোটের নেতারা বলছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের এই অনশন চলবে। জাতীয় প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতি ও বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমাজ নামে ৩টি সংগঠনসহ সম্মিলিতভাবে বাংলাদেশ প্রাথমিক সরকারি শিক্ষক মহাজোট ব্যানারে এই কর্মসূচির আয়োজন করে শিক্ষকরা। জাতীয় প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক ফাউন্ডেশনের সভাপতি শাহীনুর আকতার বলেন, প্রাথমিক শিক্ষকদের মধ্যে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষক এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বেতন বৈষম্য আছে। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকদের বেতন গ্রেড প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের পরের ধাপে নির্ধারণের দাবিতে আমাদের এই আন্দোলন। গত সাড়ে তিন বছর আন্দোলন করেও সমাধান না পাওয়ায় আমরা অনশনে বসেছি। বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সমাজের সভাপতি মো. আনিসুর রহমান বলেন, শিক্ষাগত যোগ্যতা এক হওয়ার পরও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকদের বেতনে বৈষম্য রয়েছে। ১৯৭৩ সালে থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত এটা ছিল না। এরপর থেকে ১৯৮৫ সালে এক ধাপ, ২০০৬ সালে দুই ধাপ এবং ২০১৪ সালে থেকে তিন ধাপের পার্থক্য তৈরি করা হয়েছে। এখন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বেতন পাচ্ছেন একাদশ গ্রেডে। আর আমাদের দেওয়া হচ্ছে চতুর্দশ গ্রেড। বর্তমান নিয়মে একজন প্রধান শিক্ষক বেতন স্কেলের দ্বাদশ গ্রেডে চাকরি শুরু করেন। আর সহকারী শিক্ষকরা সেই স্কেলে চাকরি শেষ করবেন। অর্থ্যাৎ ১৬ বছর চাকরি করার পর সহকারী শিক্ষকরা পাবে দ্বাদশ গ্রেডে ১১ হাজার ৩০০ টাকা, এটা অমানিবক। ফলে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের পরের ধাপ, অর্থাৎ দ্বাদশ গ্রেডে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকদের বেতন কাঠামো নির্ধারণের দাবিতে এই আমরণ অনশন কমর্সূচি তারা চালিয়ে যাবেন বলেও জানান আনিসুর।