পানির হিস্যা আদায়ে ভারতের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে যেতে হবে
27, August, 2024, 4:16:16:PM
ডিটিভি অনলাইন ডেস্ক:
ভারতের বিরুদ্ধে অভিন্ন নদী ব্যবস্থপনা ও পানির ন্যায্য হিস্যা নিশ্চিতে আন্তর্জাতিক আদালতে যেতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন ১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা।
তারা বলছেন, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ৫৪টি অভিন্ন নদী রয়েছে। প্রায় প্রতিটি নদীতে আন্তর্জাতিক নদী আইন লঙ্ঘন করে একপাক্ষিকভাবে ভারত উজানে বাঁধ দিয়েছে। আন্তর্জাতিক আদালতের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক আইনে একাধিক দেশের ওপর দিয়ে প্রবাহিত পানি ব্যবস্থাপনার বাস্তবায়ন চায় বাংলাদেশের মানুষ।
মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ভারতীয় আগ্রাসন বন্ধ ও ৫৪টি অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন। ১২ দলীয় জোট এ বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে। সমাবেশ শেষে প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন ১২ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা।
ছাত্রজনতার আন্দোলনে নিহত ও আহতদের প্রতি শ্রদ্ধা এবং কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সমাবেশে বক্তারা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস গত রোববার জাতির উদ্দেশে যে ভাষণ দিয়েছেন, তাকে স্বাগত জানাই। পাশাপাশি অবিলম্বে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে তার প্রতি আহ্বান জানান বক্তারা।
প্রধান অতিথির বক্তব্য জোটের মুখপাত্র ও বাংলাদেশ এলডিপি মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, ডামি নির্বাচনের পর থেকে ভারতীয় পণ্য বর্জনের আহ্বান জানিয়ে সারাদেশে লিফলেট বিতরণ করেছি। ভারতের সবচেয়ে বড় পণ্য শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়েছে। তাকে দ্রুত দেশে ফিরিয়ে এনে দ্রুত শাস্তি হিসেবে ফাঁসি দেওয়া হোক। কারণ আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মারা বসে নেই। তারা নানাভাবে বিভিন্ন কৌশলে ষড়যন্ত্র করছে।
১২ দলীয় জোট, পানির হিস্যা আদায়ে ভারতের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে যেতে হবে
তিনি বলেন, আনসার বাহিনীর নামে স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা উসকানি দিয়েছে। আমরা সব ষড়যন্ত্র প্রতিহত করবো। প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে আমরা সন্তুষ্ট। কিন্তু অবিলম্বে আওয়ামী লীগের লুটপাট, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার করুন। দ্রুত সম্ভব নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। এরপর জনগণ তাদের পছন্দের সরকার গঠন করবে।
সভাপতির বক্তব্য ১২ দলীয় জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা বলেন, স্বৈরাচার সরকারের পতন হয়েছে। আমরা মুক্ত বাতাসে নিঃশ্বাস নিতে পারছি। কিন্তু শেখ হাসিনার পরাজয়ের বদলা নিতে তার প্রভু ভারত আগ্রাসন শুরু করেছে। তারা ডুম্বুর বাঁধ খুলে দেওয়ার পর এবার ফারাক্কা বাঁধ খুলে দিয়েছে। ভারত কখনোই আমাদের বন্ধু হতে পারে না। আসুন সবাই মিলে ভারতীয় পণ্য বর্জন করি এবং বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াই।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মারা। তবে তারা না থামলে দেশে তাদের অস্তিত্ব থাকবে না। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আহ্বান জানাই আপনারা আরও কঠোর হোন। নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে আরও উদ্যমী হোন। দ্রুত সম্ভব একটি রোডম্যাপ (নির্বাচনের) ঘোষণা করুন।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মহিউদ্দিন ইকরাম বলেন, শেখ হাসিনার কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। অহংকারীদের বলবো- আপনারাও তার থেকে শিক্ষা নিন। অবিলম্বে পিলখানা হত্যাকাণ্ড, মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতের মহাসমাবেশে হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার করুন। জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহত-নিহতদের সঠিক তালিকা করার দাবিও জানান তিনি।
জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপার সহ-সভাপতি রাশেদ প্রধান বলেন, ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সজাগ থাকতে হবে। ৫ আগস্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনার বিদায় হলেও তাদের প্রেতাত্মারা এখনো চক্রান্ত করছে। তবে দেশের মানুষকে স্বৈরাচার আর কখনো মেনে নেবে না। তার প্রমাণ শেখ হাসিনা। গণহত্যাকারী শেখ হাসিনাকে বিশ্বের কোনো গণতান্ত্রিক দেশ ঠাঁই দেয়নি।
বাংলাদেশ এলডিপির অতিরিক্ত মহাসচিব তমিজ উদ্দিন টিটুর পরিচালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন ১২ দলীয় জোটের শরিক বিকল্পধারা বাংলাদেশের মহাসচিব অ্যাডভোকেট শাহ আহমেদ বাদল, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন মো. ফারুক রহমান, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান শামসুদ্দিন পারভেজ, ইসলামী ঐক্য জোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুর রাকিব, ইসলামিক পার্টির মহাসচিব আবুল কাশেম, পিএনপির চেয়ারম্যান ফিরোজ মো. লিটন ও নয়া গণতান্ত্রিক পার্টির সভাপতি মাস্টার এম এ মান্নান প্রমুখ।