নারায়ণগঞ্জ সংবাদদাতা: নারায়ণগঞ্জ ৪ আসনের সাংসদ শামীম ওসমান সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে করে বলেন, ঈদের পর আপনাদের নিয়ে সুন্দর নারায়ণগঞ্জ গড়তে নামব। সবাই সত্যি লিখবেন। কাউকে ছাড় দেবেন প্লিজ। সেটা আমি হলেও ছাড় দেবেন না। ঘরে, বাইরে ও নেত্রীর সামনে যেখানে ন্যায্য কথা বলা প্রয়োজন বলব। কারণ নেত্রী ন্যায্য সত্য কথন পছন্দ করেন। রাজনীতি মানুষের সেবায় করছি। তাই মানুষের জন্য যদি ন্যায্য কথা বলতে না পারি ও সত্যি কথা বলতে না পারি তাহলে কি লাভ। দেশে শিক্ষিত মানুষরা চুরি করছে। এটাই বাস্তব পরিস্থিতি। রোববার (২৬ জুলাই) দুপুরে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় মরহুম সামসুজ্জোহা স্টেডিয়ামের কনফারেন্স রুমে করোনাকালে নানা সমস্যায় পতিত ক্রীড়া সংশ্লিষ্টদের প্রধানমন্ত্রীর অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক জসিমউদ্দিনের সভাপতিত্ব সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক তানভীর আহমেদ টিটু, নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শামীম বেপারী, ক্রীড়া সংগঠক ইব্রাহীম চেঙ্গিস, জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার গোলাম রসূল গাউস, ক্রীড়া সংগঠক ফিরোজ মাহমুদ শ্যামা ও ইসদাইর রাবেয়া হোসেন উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি ছিদ্দিকুর রহমানসহ প্রমুখ। এ সময় শামীম ওসমান আরো বলেন, আমি একজন সংসদ সদস্য। আমার কাজ কথা বলা। জনগণের হয়ে তাই আমি কথা বলব। দেশের জন্য। মানুষের জন্য। যেমন বঙ্গবন্ধু দেশের মানুষের জন্য স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন। মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। কারণ সবাই জানত বঙ্গবন্ধু সামনে আছে। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে দেশের অগ্রগতিকে রুখে দেয়া হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্ন এখন তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছেন। দেশের উন্নয়ন আর অগ্রগতি ও সোনার বাংলা গড়তে শেখ হাসিনাকেই লাগবে। এটাই সত্যি।
তিনি আরো বলেন, বাসা থেকে আসার সময় দুটি সংবাদ পেয়ে মনটি খারাপ হয়ে গেল। একটি হলো দুটি মধ্যবিত্ত পরিবার। বাসায় অসুস্থ মানুষ। এর মধ্যে কারো চাকরী নেই। তারা করোনাকালে সমস্যায় পড়ে ঢাকা ছেড়ে গ্রামের বাড়িতে চলে যেতে বাধ্য হচ্ছে। আমি বলেছি সাহস হারাবেন না। আরেকটি হলো আমাদের সহকর্মী দুই এমপি একজন লাইফ সাপোর্টে আরেকজন ও অসুস্থ।
তিনি কারোনাকালে নানা সমস্যায় পতিত উপস্থিত ক্রীড়া সংশ্লিষ্টদেন উদ্দেশ্যে করে বলেন, আপনার ভেঙ্গে পড়বেন না। আল্লাহ বলছে তোমরা হতাশ হইয়ো না। একটি কথা মনে রাখবেন। আকালে কালো মেঘ জমবে। আাবার মেঘ সরে গিয়ে আলো আসবেই। তাই আশা নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। এখানে একটি ছেলে আছে ফুটবলার আরিফ। সে করোনাকালে টিম না পেয়ে বেকার হয়ে গিয়ে যোগালির কাজ করছে। এটা লজ্জার কিছু নেই। আমি কানাডা থাকতে দোকানে কাজ করেছি, ফার্মে কাজ করেছি। কৃষি কাজ করেছি। কাজের কোন লজ্জা নেই। আর স্পোর্টম ম্যান নামই তো খেলা। তারা সারাজীবন একটি খেলা। শুধু খেলা ছাড়া যাবে না।
শামীম ওসমান নিজের পরিবারের অভাবের কথা উল্লেখ করে বলেন, আমার বাবাকে যখন জেলে যেতে হয়েছিল। আমাদের পরিবার ৬ মাস পর্যন্ত খেয়ে, না খেয়ে ছিলাম। টাকার জন্য এসএসসি ফরম ফিলাপ করতে পারিনি। অভাব অনটন মানুষকে মানুষ হতে শেখায়। কিন্তু কষ্ট লাগে এই কারোনাকালে কিছু মানুষ শিক্ষা হচ্ছে না। বিশেষ করে শিক্ষিত মানুষগুলেনা চুরি করে যাচ্ছে। তবে কিছু ভালো মানুষের জন্য আল্লাহর দয়ায় আমরা টিকে আছি। বক্তব্য শেষে করোকালে ক্ষতিগ্রস্থ খেলোয়াড়, প্রশিক্ষক ও সংগঠকদের ৭০ জনের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়। প্রধামন্ত্রীর পক্ষ থেকে ৪৫ জন ও জেলা ক্রীড়া সংস্থা নিজ উদ্যোগে আরো ২৫ জনকে সংযুক্ত করে ৭০ জনকে আর্থিক অনুদান পৌঁছে দেন।