সবার মতামত নিয়েই গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষায় ব্যবস্থা :প্রধানমন্ত্রী
6, November, 2018, 4:01:25:PM
অনলাইন ডেস্ক:
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সবার মতামত নিয়েই গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হবে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে গণভবনে ইসলামী দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় সূচনা বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন। ধর্মীয় শিক্ষা ব্যবস্থাসহ সার্বিক উন্নয়নে সরকারের টানা দুই মেয়াদের কর্মকাণ্ডের মূল্যায়ন দিয়েই আলোচনা শুরু করে তিনি বলেন, টানা দুই মেয়াদে ধর্মীয় শিক্ষা ব্যবস্থাসহ দেশের সার্বিক উন্নয়নে কাজ করেছে সরকার। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকারের সঙ্গে চলমান আলোচনার অংশ হিসেবে বেলা পৌনে ৩টার দিকে গণভবনে শুরু হয় ইসলামী ১২টি দল ও জোটের ৫২ নেতার সঙ্গে সংলাপ। প্রায় দুই ঘণ্টার বৈঠকে প্রত্যেক দলের নেতারা নিজ নিজ কথা এবং কিছু দাবি উপস্থাপন করেছেন। সংলাপে ক্ষমতাসীনদের ২৩ সদস্যের প্রতিনিধি দলে নেতৃত্বে দেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সংলাপ অংশ নেওয়া দলগুলো হলো— ইসলামী ঐক্যজোট (আইওজে), বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, বাংলাদেশ জালালি পার্টি, আশিক্কীনে আউলিয়া ঐক্য পরিষদ বাংলাদেশ, জাকের পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয় ইসলামী জোট-বি.এন.আই.এ, বাংলাদেশ সম্মিলিত ইসলামী জোট, ইসলামিক ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (আইডিএ)। সংলাপে ইসলামী ঐক্যজোটের একাংশের নেতারা শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখতে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। সংলাপ শেষে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, গত ১০ বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন ইসলামী দলগুলোর নেতারা। আগামীতে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় ফিরে আসবেন, এ ব্যাপারে তাদের সার্বিক সহযোগিতা থাকবে, একথা তারা অকপটে বলে গেছেন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও স্বাধীনতার আদর্শ সমুন্নত রাখার ব্যাপারে উভয়পক্ষই সংলাপে একমত হয়েছে বলে জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। সংবিধানসম্মত উপায়ে নির্বাচনে যেতে ইসলামী দলগুলোর কোনো দ্বিমত নেই জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, ইসলামী দলগুলো সংবিধানসম্মতভাবে নির্বাচন সমর্থন করে এবং এ ব্যাপারে তারা অংশী হিসেবে থাকবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবারও ক্ষমতায় ফিরে আসবেন বলে তারা আশাবাদী। নির্বাচন সংক্রান্ত নানা বিষয়ে মতবিরোধের মধ্যে কামাল হোসেনের উদ্যোগে বিএনপিকে নিয়ে গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ডাকে সাড়া দিয়ে প্রথমে তাদের আলোচনায় ডাকেন শেখ হাসিনা। এরপর অন্য দলগুলোকেও সংলাপে আমন্ত্রণ জানান তিনি। গত বৃহস্পতিবার শুরু হয়ে বুধবার পর্যন্ত সংলাপ করবেন শেখ হাসিনা। এরপর বৃহস্পতিবার সংলাপের ফলাফল জানাবেন সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে। সংলাপ শেষে ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আবদুল লতিফ নেজামী সাংবাদিকদের বলেন, ‘সব দলের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে নির্বাচন ব্যবস্থা করার জন্য আমরা প্রস্তাব দিয়েছি। সুষ্ঠু নির্বাচন করতে সবার অংশগ্রহণ প্রয়োজন।’ ইসলামিক ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্সের কো-চেয়ারম্যান এম এ আউয়াল বলেন, আমরা বলেছি এ সরকারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকুক। একই সঙ্গে এই সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে আমাদের আপত্তি নেই-সেটিও জানিয়েছি। বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের চেয়ারম্যান মাওলানা আতাউল্লাহ বলেন, ‘আমরা এককভাবে নির্বাচনে অংশ নেব। কোনো জোটে যাব না। অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আমরা প্রস্তাব করেছি। প্রধানমন্ত্রী আমাদের কথা শুনেছেন।’ আর জাকের পার্টি দাবি করে, তারা মহাজোটে আছে। ইসলামী ১২টি দল ও জোটের ৫২ নেতারা হলেন ইসলামি ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ নেজামীসহ ১২ জন, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের চেয়ারম্যান বদরুদ্দোজা সুজাসহ তিন জন, বাংলাদেশ জালালি পার্টির চেয়ারম্যান আহমদ চৌধুরী জালালিসহ তিন জন, বাংলাদেশ সম্মিলিত ইসলামী জোটের সভাপতি মাওলানা জিয়াউল হাসানসহ চার জন, বাংলাদেশ জাতীয় ইসলামী জোটের চেয়ারম্যান গোলাম মোর্শেদ হাওলাদারসহ চার জন, জাকের পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফা আমীর ফয়সলসহ তিন জন, আশিক্কীনে আউলিয়া ঐক্যপরিষদ বাংলাদেশের সভাপতি সাইয়েদ আলম নূরীসহ তিন জন, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের চেয়ারম্যান মাওলানা আতাউল্লাহসহ চার জন, আঞ্জুমানে রাহমানিয়া মাইনিয়া মাইজভাণ্ডারীর প্রেসিডেন্ট সৈয়দ সাইফুদ্দিন আহমেদ, ইসলামিক ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্সের কো-চেয়ারম্যান এম এ আউয়াল প্রমুখ।