ক্যাম্প ন্যুতে প্রথমবারের মতো খেলতে আসার অভিজ্ঞতা ভয়ঙ্কর হল জিরোনার। একসঙ্গে জ্বলে উঠলেন লিওনেল মেসি ও লুইস সুয়ারেজ। দারুণ এক হ্যাটট্রিক করলেন উরুগুয়ের স্ট্রাইকার। আর জোড়া গোল করার পাশাপাশি সতীর্থের দুই গোলে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ অবদান রাখলেন দলের সেরা তারকা মেসি।
পাল্টা জবাব দিতে মোটেও দেরি করেনি স্বাগতিকরা। মাঝমাঠ থেকে মেসির রক্ষণচেরা পাস পেয়ে বাঁ-দিক দিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে কোনাকুনি শটে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন সুয়ারেজ। দ্বাদশ মিনিটে একা ডি-বক্সে ঢুকে পড়েছিলেন উসমান দেম্বেলে; কিন্তু শট নিতে দেরি করে সুযোগ হাতছাড়া করেন। পরের মিনিটে মেসির উঁচু করে বাড়ানো বল ডি-বক্সে নিয়ন্ত্রণে নিতে ব্যর্থ হন জর্দি আলবা।
উনবিংশ মিনিটে গোল পেতে পারতেন লিগে গত তিন ম্যাচে জালের দেখা না পাওয়া মেসি। গোলরক্ষকের মাথার উপর দিয়ে তার বাড়ানো বল জালে ঢোকার আগমুহূর্তে হেডে ক্রসবারের উপর দিয়ে বাইরে পাঠান কলম্বিয়ান ডিফেন্ডার বের্নার্দো। ২৬তম মিনিটে দুরূহ কোণ থেকে সুয়ারেসের শট ঠেকান গোলরক্ষক।
৩০তম মিনিটে দারুণ নৈপুণ্যে দলকে এগিয়ে দেন মেসি। সুয়ারেসের বাড়ানো বল ডি-বক্সে ডান দিকে পান; কিন্তু শট করার মতো জায়গা ছিল না। ঠাণ্ডা মাথায় দুজনের বাধা এড়িয়ে মাঝ বরাবর থেকে বল জালে পাঠান আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড।
ছয় মিনিট পর চমৎকার গোলে ব্যবধান বাড়ান মেসি। দেয়াল তৈরি করা জিরোনার খেলোয়াড়রা লাফিয়ে উঠেন। তাদের পায়ের নিচ দিয়ে নেওয়া বুদ্ধিদীপ্ত ফ্রি-কিকে লিগে নিজের ২২তম গোলটি পেয়ে যান পাঁচবারের বর্ষসেরা ফুটবলার।
৪৪তম মিনিটে ছয় গজ বক্সের ঠিক বাইরে থেকে ব্যবধান আরও বাড়ান সুয়ারেজ। মাঝমাঠ থেকে বল পান মেসি। অনেকটা এগিয়ে তিনি বাঁয়ে বল বাড়ান কৌতিনিয়োকে। ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার ছোট করে পাস দেন উরুগুয়ের স্ট্রাইকারকে। বাকিটা সহজেই সারেন তিনি।
দ্বিতীয়ার্ধের নবম মিনিটে হ্যাটট্রিক পেতে পারতেন সুয়ারেস। কিন্তু তার কোনাকুনি শট ভাগ্যের ফেরে পোস্টে লাগে। দুই মিনিট পর গোলরক্ষক বরাবর শট নিয়ে হ্যাটট্রিকের সুযোগ হারান মেসিও।
৬৬তম মিনিটে দুর্দান্ত এক গোলে উৎসবে যোগ দেন কৌতিনিয়ো। এক জনকে কাটিয়ে প্রায় ২২ গজ দূর থেকে বিদ্যূৎ গতির শটে দূরের পোস্ট ঘেঁষে লক্ষ্যভেদ করেন জানুয়ারিতে রেকর্ড ট্রান্সফার ফিতে যোগ দেওয়া ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার। চার মিনিট পর মেসির আরেকটি চমৎকার ফ্রি-কিক ঝাঁপিয়ে কোনোমতে কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান মরোক্কান গোলরক্ষক বোনো।
৭৬তম মিনিটে কাঙ্ক্ষিত হ্যাটট্রিক পূরণ করেন সুয়ারেজ। ডান দিক থেকে দেম্বেলের ক্রস ছয় গজ বক্সের মুখে পেয়ে ডান পায়ের ছোঁয়ায় জালে ঠেলে দেন ছন্দে থাকা এই স্ট্রাইকার। এবারের লিগে এই নিয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২০ গোল করলেন সুয়ারেজ। এরই সঙ্গে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে বার্সেলোনার জার্সিতে ১৪৪ গোল নিয়ে ক্লাবটির ইতিহাসের গোলদাতাদের তালিকায় ষষ্ঠ স্থানে উঠে এলেন তিনি।
২৫ ম্যাচে ২০ জয় ও পাঁচ ড্রয়ে শীর্ষে থাকা বার্সেলোনার পয়েন্ট ৬৫। ১০ পয়েন্ট কম নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে এক ম্যাচ কম খেলা আতলেতিকো মাদ্রিদ।