চবিতে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষ ও গোলাগুলি, আহত ৬
20, February, 2018, 1:14:32:AM
জুনিয়রদের মাঝে কথাকাটাকাটিকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসময় ছয়জন ছাত্রলীগ কর্মী আহত হন। সোমবার বিকাল তিনটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহজালাল ও শাহ আমানত হলের সামনে এ ঘটনা ঘটে। আহতদের মধ্যে তিনজনকে চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অন্য তিনজনকে চবি মেডিক্যাল সেন্টারে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
আহতরা হলেন, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সদস্য মোয়াজেম জেমস ও পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক উপ-আপ্যায়ন বিষয়ক সম্পাদক সায়ন দাশগুপ্ত। তারা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী। অন্যদিকে আহত তানজিল হৃদয় বিশ্বাবদ্যালয় ছাত্রলীগের বগি ভিত্তিক সংগঠন সিক্সিটি নাইন গ্রুপের কর্মী ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। এছাড়া নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী তানবির রহমান, হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী সাইফুল ইসলাম, ইতিহাস বিভাগের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী জয়। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন গ্রুপের অনুসারী তা জানা যায়নি।
জানা যায়, সোমবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বগি ভিত্তিক সংগঠন সিএফসি গ্রুপের কয়েকজন জুনিয়র কর্মীদের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। এই কথাকাকাটির জের ধরে বিকাল তিনটার দিকে বগিভিত্তিক সংগঠন একাকার ও সিক্সিটি নাইন এক হয়ে বগিভিত্তিক সংগঠন সিএফসির সাথে সংঘর্ষে জড়ায়। সংঘর্ষের সময় শাহজালাল হল থেকে দুই রাউন্ড গুলি ছোড়া হয় এবং শাহ আমানত হল থেকে এক রাউন্ড গুলি ছোড়া হয়। পরবর্তীতে পুলিশ আসলে সিএফসি গ্রুপের কর্মীরা শাহ আমানত হলে ও সিক্সিটি নাইন গ্রুপের কর্মীরা শাহজালাল হলে অবস্থান নেয়। এসময় দুই হলের ছাদে থেকে ইট পাটকেল ছুড়তে থাকে। এক পর্যায়ে সিক্সিটি নাইনের কর্মীরা দেশিয় অস্ত্র নিয়ে শাহ আমানত হলের সামনে আসলে সিএফসি নেতাকর্মীরা তাদেরকে ধাওয়া দেয়। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে লাঠিচার্জ ও ছয় রাউন্ড টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে। এসময় ছয়জন আহত হয়। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসলেও এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত দু’গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলছিল। এসময় পুলিশ দুই হলের মাঝে অবস্থান করছিল। এছাড়াও ক্যাম্পাসে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে এক ধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছিল।
সিক্সিটি নাইন গ্রুপের নেতা ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আলমগীর টিপু বলেন, সিএফসি গ্রুপের নেতা কর্মীরা আমাদের উপর আগে হামলা চালিয়েছে। তার প্রেক্ষিতে এমন ধরণের একটি ঘটনা ঘটে। তবে পরিস্থিতি এখন পুলিশ প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তারা যে ব্যবস্থা নিবে আমরা তাই মেনে নিব।
অন্যদিকে এ বিষয়ে সিএফসি গ্রুপের নেতা ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি রেজাউল হক রুবেল বলেন, পুরো নাছির গ্রুপের নেতাকর্মীরা আমাদের উপর পরিকল্পিত ভাবে হামলা চালিয়েছে। এসময় আমাদের কয়েকজন কর্মী পুলিশের লাঠিচার্জেও আহত হয়েছে। আমরা এর বিচার চাই প্রশাসনের কাছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর লিটন মিত্র বলেন, পুলিশ ও প্রক্টরিয়াল বডির সহয়তায় বর্তমানে পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সংঘর্ষের সাথে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ভাবে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।