জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনের সময়সীমা ২৫ বছরের জন্য বাড়ানোর সিদ্ধান্ত দেশের নারী সমাজের কাছে দেওয়া প্রতিশ্রুতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। সিদ্ধান্তটি ‘রাজনৈতিক প্রতারণামূলক’ উল্লেখ করে তা পরিবর্তনের দাবি জানিয়েছে সামাজিক প্রতিরোধ কমিটি। সেই সঙ্গে জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসন সংখ্যা এক-তৃতীয়াংশে উন্নীত করা ও সেসব আসনে সরাসরি নির্বাচনেরও দাবি জানানো হয়। গতকাল ৭০টি নারী, মানবাধিকার ও উন্নয়ন সংগঠনের জোট সামাজিক প্রতিরোধ কমিটি আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন থেকে এ দাবি জানানো হয়। রাজধানীর সেগুনবাগিচার সুফিয়া কামাল ভবনে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি আয়শা খানম। লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পরিচালক রওশন জাহান পারভীন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপিএসের নাসরিন বেগম, অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের নুরুন নাহার বেগম, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর নাজরানা ইয়াসমিন হীরা, ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক আয়েশা ইসলাম, ব্লাস্টের উপ-পরিচালক মাহবুবা আক্তার ও অ্যাডভোকেসি অফিসার সোফিয়া হাসিন, এসিড সারভাইভর্স ফাউন্ডেশনের অনিমেষ সরকার, আইইডির সহযোগী সমন্বয়ক তারিক হোসেন এবং জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির ফেরদৌস নিগার প্রমুখ।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, নারী ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো গত ৩ দশক ধরে জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনে সরাসরি নির্বাচন ও আসন সংখ্যা এক-তৃতীয়াংশ বৃদ্ধির দাবি জানিয়ে আসছে। একই সঙ্গে সংরক্ষিত নারী আসনগুলোর নির্বাচনী এলাকা সুনির্দিষ্ট করারও দাবি রয়েছে। এ দাবির মধ্যেও গত ২৯ জানুয়ারি জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনের সময়সীমা ২৫ বছরের জন্য বাড়ানো হয়। যা দেশের নারী সমাজের কাছে দেওয়া প্রতিশ্রুতির সঙ্গে রাজনৈতিক প্রতারণামূলক। এটা সরকার কর্তৃক দেওয়া বিভিন্ন সময়ে নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে উচ্চারিত বক্তব্যসহ জাতিসংঘ ঘোষিত সিডও সনদ ও এসডিজির সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়, ২০০৯ সালের ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দিয়েছিলেন, ‘সংসদে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংখ্যা ৪৫ থেকে বাড়িয়ে ১০০ করা হবে, তারা সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হবেন।’
সংবাদ সম্মেলনে আয়শা খানম বলেন, ‘গত ২৯ জানুয়ারি সংরক্ষিত নারী আসনে নির্বাচনের বিধি আরও ২৫ বছর বহাল রাখার প্রস্তাবে চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাবে মন্ত্রিসভার চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়ায় এখন এটি বিল আকারে সংসদে উত্থাপন করবে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়। গণতন্ত্র, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রতি যে সম্মান, তা এই বিলে দেখানো হয়নি।