নরসিংদীর শিবপুরে মোবাইল ফোন চুরির ঘটনায় সন্দেহ করে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ুয়া কিশোরী ছাত্রীকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন মৃত কিশোরীর বাবা। আজ শনিবার শনিবার ভোর ৫টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে আজিজা খাতুন নামে ১৪ বছর বয়সী ওই কিশোরীর মৃত্যু হয়।
ঢাকা মেডিকেলের দায়িত্বরত চিকিৎসক জানান, মুমূর্ষু অবস্থায় নরসিংদী থেকে তাকে ঢাকা মেডিকেলে আনা হয়, তখন মেয়েটির শরীরের ৯৪ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। তবে কীভাবে পুড়েছে তা জানতে হলে পরীক্ষা করতে হবে।
নিহত কিশোরীর নাম আজিজা (১৪)। তার বাবার নাম আবদুস সাত্তার। গ্রামের বাড়ি নরসিংদীর শিরপুর থানার খৈনকুর। পরিবারের সদস্যরা জানান, আজিজা পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে। পাঁচ বোন, দুই ভাইয়ের মধ্যে সে ছিল চতুর্থ।
এদিকে মোবাইল চুরি ঘটনা সম্পর্কে কিশোরী মেয়েটির পরিবার জানায়, আট–দশ দিন আগে তাদের প্রতিবেশী এক চাচির মোবাইল ফোন চুরি যায়। এ নিয়ে আজিজাকে ওই চাচি ও তার স্বজনেরা সন্দেহ করতে থাকেন। এক সপ্তাহের মধ্যে মোবাইল ফিরিয়ে না দিলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেবেন—এমন হুমকিও দেন চাচির স্বজনেরা।
পরে গতকাল শুক্রবার রাতে ছোট ভাই ও আজিজা ছাড়া বাসায় কেউ ছিল না। আনুমানিক রাত ৮ টায় আজিজাকে মুখ–চোখ বেঁধে কে বা কারা ধরে নিয়ে যায়। পরে আধা কিলোমিটার দূরে একটি টিলার ঢালে নিয়ে তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। আগুন দেখে স্থানীয় লোকজন সেখানে গিয়ে আজিজাকে দেখতে পায়। দ্রুত তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে রাতেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
মেয়েটির বাবা বলেন, কাল রাতে তিনি আর তার স্ত্রী বাড়িতে ছিলেন না। তখন বিউটির লোকজন আজিজাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে গায়ে আগুন দেয়। আবদুস সাত্তার ঢাকা মেডিকেলে সাংবাদিকদের বলেন, মৃত্যুর আগে আজিজা তাকে বলেছে, তার চাচির ভাইয়েরাই এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির এসআই বাচ্চু মিয়া আগুনে পুড়ে আজিজার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আজিজার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।